০৪:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪

দুই মাসে সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণ সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১১:৩১:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৩
  • / ১০৩৩৫ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই- আগস্ট) সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ১৪ হাজার ৯১০ কোটি টাকা। এই অর্থ থেকে আবার মূল ও মুনাফা পরিশোধে ব্যয় হয়েছে ৯ হাজার ৩৪৮ কোটি টাকা। আর শুধু মুনাফা পরিশোধ করা হয়েছে ৩ হাজার ২১৫ কোটি টাকা। ফলে আগস্ট শেষে এই খাতে সরকারের ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা।

সম্প্রতি জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে ব্যাংক, ডাকঘর ও সঞ্চয় অধিদপ্তর থেকে গ্রাহকরা বিভিন্ন স্কিমে ১৪ হাজার ৯১০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র কিনেছেন। একই সময়ে মূল সঞ্চয়পত্রের অর্থ ও মুনাফা পরিশোধে ব্যয় হয়েছে ৩ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা। ফলে আগস্ট শেষে সরকারের ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা।

সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি বলতে বোঝানো হয়, একটি নির্দিষ্ট সময়ে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি ও ভাঙানোর মধ্যকার ব্যবধান। গত অর্থবছরে যে পরিমাণ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হচ্ছিলো, ভাঙানোর পরিমাণ ছিলো তার চেয়ে বেশি। অর্থাৎ প্রবৃদ্ধি ছিলো নেতিবাচক। তবে এই অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ঠিক উল্টো চিত্র দেখা গিয়েছে। এসময় মূল ও মুনাফা পরিশোধ করেও এই খাতে সরকারের ঋণ রয়েছে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত কয়েক মাসের তুলনায় জুলাই-আগস্টে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি দেখা দিয়েছে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে। বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্রে নিট বিনিয়োগ ছিলো না। এ সময়ে সঞ্চয়পত্রে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৮০ হাজার ৮৫৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা। তবে ভাঙানো হয়েছে ৮৪ হাজার ১৫৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র। অর্থাৎ, ঐ অর্থবছরের শুরু জুলাই থেকে গত জুন পযর্ন্ত নতুন বিনিয়োগের চেয়ে ভাঙানোর প্রবণতাই বেশি ছিল।

এদিকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে প্রজ্ঞাপন জারি করে সঞ্চয়পত্রের সুদহার কমিয়েছিল সরকার। একই প্রজ্ঞাপনে কয়েকটি স্তর করে দিয়েছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি)। এর পর থেকেই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ কমতে থাকে।

আরও পড়ুন: সোনার দাম বাড়লো দুই হাজার ৩৩৩ টাকা

বিনিয়োগ কমার আরও কারণ রয়েছে। যেমন পাঁচ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রে প্রত্যেক গ্রাহককে বাধ্যতামূলকভাবে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হয়। সঞ্চয়পত্র ও ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক হিসাবে পাঁচ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আবার ব্যাংক হিসাবে জমা টাকা ১০ লাখ অতিক্রম করলেও দিতে হয় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র।

সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পান। কিন্তু এই বিক্রি সরকারের জন্য ঋণ। জনগণের কাছ থেকে এ ঋণ নেওয়ার বিপরীতে সরকারকে উচ্চ হারে সুদ গুনতে হয়।

এদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরের চেয়ে ১৭ হাজার কোটি টাকা বা ৪৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ কম। সদ্য সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছিলো ৩৫ হাজার কোটি টাকা।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x

দুই মাসে সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণ সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা

আপডেট: ১১:৩১:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৩

চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই- আগস্ট) সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ১৪ হাজার ৯১০ কোটি টাকা। এই অর্থ থেকে আবার মূল ও মুনাফা পরিশোধে ব্যয় হয়েছে ৯ হাজার ৩৪৮ কোটি টাকা। আর শুধু মুনাফা পরিশোধ করা হয়েছে ৩ হাজার ২১৫ কোটি টাকা। ফলে আগস্ট শেষে এই খাতে সরকারের ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা।

সম্প্রতি জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে ব্যাংক, ডাকঘর ও সঞ্চয় অধিদপ্তর থেকে গ্রাহকরা বিভিন্ন স্কিমে ১৪ হাজার ৯১০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র কিনেছেন। একই সময়ে মূল সঞ্চয়পত্রের অর্থ ও মুনাফা পরিশোধে ব্যয় হয়েছে ৩ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা। ফলে আগস্ট শেষে সরকারের ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা।

সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি বলতে বোঝানো হয়, একটি নির্দিষ্ট সময়ে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি ও ভাঙানোর মধ্যকার ব্যবধান। গত অর্থবছরে যে পরিমাণ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হচ্ছিলো, ভাঙানোর পরিমাণ ছিলো তার চেয়ে বেশি। অর্থাৎ প্রবৃদ্ধি ছিলো নেতিবাচক। তবে এই অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ঠিক উল্টো চিত্র দেখা গিয়েছে। এসময় মূল ও মুনাফা পরিশোধ করেও এই খাতে সরকারের ঋণ রয়েছে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত কয়েক মাসের তুলনায় জুলাই-আগস্টে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি দেখা দিয়েছে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে। বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্রে নিট বিনিয়োগ ছিলো না। এ সময়ে সঞ্চয়পত্রে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৮০ হাজার ৮৫৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা। তবে ভাঙানো হয়েছে ৮৪ হাজার ১৫৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র। অর্থাৎ, ঐ অর্থবছরের শুরু জুলাই থেকে গত জুন পযর্ন্ত নতুন বিনিয়োগের চেয়ে ভাঙানোর প্রবণতাই বেশি ছিল।

এদিকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে প্রজ্ঞাপন জারি করে সঞ্চয়পত্রের সুদহার কমিয়েছিল সরকার। একই প্রজ্ঞাপনে কয়েকটি স্তর করে দিয়েছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি)। এর পর থেকেই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ কমতে থাকে।

আরও পড়ুন: সোনার দাম বাড়লো দুই হাজার ৩৩৩ টাকা

বিনিয়োগ কমার আরও কারণ রয়েছে। যেমন পাঁচ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রে প্রত্যেক গ্রাহককে বাধ্যতামূলকভাবে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হয়। সঞ্চয়পত্র ও ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক হিসাবে পাঁচ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আবার ব্যাংক হিসাবে জমা টাকা ১০ লাখ অতিক্রম করলেও দিতে হয় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র।

সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পান। কিন্তু এই বিক্রি সরকারের জন্য ঋণ। জনগণের কাছ থেকে এ ঋণ নেওয়ার বিপরীতে সরকারকে উচ্চ হারে সুদ গুনতে হয়।

এদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরের চেয়ে ১৭ হাজার কোটি টাকা বা ৪৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ কম। সদ্য সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছিলো ৩৫ হাজার কোটি টাকা।

ঢাকা/এসএ