০৬:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নগদের মালিকানা খতিয়ে দেখছে বাংলাদেশ ব্যাংক

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১২:০৭:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪
  • / ১০৪৮৫ বার দেখা হয়েছে

চূড়ান্ত লাইসেন্স দেওয়ার দুই মাস পর নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের উদ্যোক্তা ও শেয়ারধারীদের তথ্য খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নগদের বিদেশি উদ্যোক্তাদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ–সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের কাছেও। গত রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক এ চিঠি পাঠায়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর গভর্নর হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যোগ দেওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ২০১৯ সাল থেকে লাইসেন্স ছাড়া কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে মোবাইলে আর্থিক সেবা নগদ। এরপর রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে বিদায়ী সরকারের সময় লাইসেন্স নেয় নগদ ডিজিটাল ব্যাংক। নথিপত্রে ঘাটতি থাকার পরও এই অনুমোদন দেন সাবেক গভর্নর। এখন তথ্যে গরমিল বা উদ্যোক্তাদের যোগ্যতায় ঘাটতি পাওয়া গেলে সেই লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে। কোনো ঘাটতি না মিললে কার্যক্রম শুরুর অনুমোদন দেওয়া হবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়েছে, নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসির উদ্যোক্তা শেয়ারধারীদের তথ্য যাচাই করা প্রয়োজন। এ জন্য পাঁচটি বিদেশি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের নাম যুক্ত করে তাদের বিষয়ে তথ্য চেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রতিষ্ঠান পাঁচটি হলো ব্লু হেভেন ভেঞ্চারস এলএলসি, অসিরিস ক্যাপিটাল পার্টনারস এলএলসি, জেন ফিনটেক এলএলসি, ফিনক্লুশন ভেঞ্চারস পিটিই লিমিটেড এবং ট্রপে টেকনোলজিস এলএলসি। চিঠিতে এই পাঁচটি বিদেশি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধনপত্র যুক্ত করা হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের তথ্যাদি যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে সংগ্রহ করে জমা দিতে বলা হয়।

চিঠিতে প্রতিষ্ঠানগুলোর নিবন্ধন ও ঠিকানা বা অবস্থান, গঠনকালীন মালিকানা কাঠামো ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, ব্যবসায়িক কার্যক্রম, বর্তমান মালিকানা ও মালিকদের নাগরিকত্ব, বিগত তিন বছরের কর পরবর্তী প্রকৃত মুনাফা ও প্রকৃত সম্পদের পরিমাণ এবং হোল্ডিং কোম্পানির ক্ষেত্রে সহযোগী কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রমের তথ্য জানাতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন: দীপু মনি, জাহিদ মালেকসহ আরো ১৩ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ

এর আগে গত জুনে দেশের প্রথম ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে চূড়ান্ত লাইসেন্স পায় নগদ। আইনে বিশেষ ছাড় দিয়ে ‘নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি’কে তফসিলি ব্যাংক হিসেবে তালিকাভুক্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে দেশে ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়ায় ৬২। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালক (বিআরপিডি) শাহরিয়ার সিদ্দিকী সে সময় নগদ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ তানভীর এ মিশুকের হাতে ‘নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি’র লাইসেন্স তুলে দেন।

ব্যাংক কোম্পানি আইনে একক ব্যক্তি, পরিবার বা কোম্পানির কোনো ব্যাংকে ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার ধারণে যে বিধিনিষেধ রয়েছে, তাতে ছাড় দেওয়া হয়েছে নগদকে।

ওই সময়ে এক প্রজ্ঞাপনে ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১৪ ক (১) ধারার উল্লেখ করে বলা হয়, ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১২১ ধারার ক্ষমতাবলে ব্লু হেভেন ভেঞ্চারস এলএলসি, আরসিসি ক্যাপিটাল পার্টনারস এলএলসি এবং ফিনক্লুশন ভেঞ্চারস পিটিই লিমিটেড কর্তৃক ‘নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি’র শেয়ার ধারণের ক্ষেত্রে ১৪ ক (১) ধারা প্রযোজ্য হবে না। তাদের ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার রয়েছে নগদ ডিজিটাল ব্যাংকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গত ২৮ মে অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের সভায় নগদকে লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে গত বছরের ৮ আগস্ট নগদ এবং কড়িকে ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠার নীতিগত অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ।

এদিকে রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস (আরজেএসসিএফ) থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়ার অঙ্গরাজ্যের উইলমিংটনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান অসিরিস ক্যাপিটাল পার্টনার এলএলসি নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের ৪৯ দশমিক ৮ শতাংশের মালিক। এ প্রতিষ্ঠানে মালিকানায় রয়েছেন নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক। উইলমিংটনে অবস্থিত আরেক প্রতিষ্ঠান জেন ফিনটেক এলএলসির ড্যানিয়েল ভিনসেন্ট পারকারের রয়েছে ৫ শতাংশ মালিকানা। উইলমিংটনে নিবন্ধিত আরেক কোম্পানি ট্রুপে টেকনোলজিস এলএলসির হাতে রয়েছে ৩ দশমিক ২ শতাংশ শেয়ার। আর এই কোম্পানির প্রতিনিধি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে জেরিন আহমেদ আঁখির নাম।

নগদে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের গ্রেট ফলসে নিবন্ধিত ব্লু হেভেন ভেঞ্চারস এলএলসির রয়েছে ২৫ শতাংশ মালিকানা। আর এই কোম্পানির মালিকানায় রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র নিবাসী মুহাম্মদ ফরিদ খান। মুহাম্মদ ফরিদ খানের যুক্তরাষ্ট্র নিবাসী পুত্র ফারহান করিম খানের হাতে রয়েছে আরও ৫ শতাংশ শেয়ার।
সিঙ্গাপুরের মেরিনা বে ফাইন্যান্সিয়াল সেন্টারে অবস্থিত ফিনক্লুশন ভেঞ্চারস পিটিই নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের ১১ শতাংশের মালিক। এ প্রতিষ্ঠানকে প্রতিনিধিত্ব করছেন নকিব চৌধুরী। ঢাকার পুরানা পল্টনে অবস্থিত ফিনটেকচুয়াল হোল্ডিংস লিমিটেডের প্রতিনিধি মারুফুল ইসলাম ঝলকের রয়েছে ১ শতাংশ শেয়ার। মারুফুল ইসলাম নগদের নির্বাহী পরিচালক পদেও রয়েছেন।

মোবাইলে আর্থিক সেবায় (এমএফএস) বিকাশের পরই এখন নগদের অবস্থান। তবে অভিযোগ রয়েছে, প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে চলেনি প্রতিষ্ঠানটি। ডাক বিভাগের সেবা বলা হলেও আদতে এতে সরকারের কোনো অংশীদারত্ব ছিল না। দফায় দফায় পরিবর্তন হয় নগদের মালিকানায়। প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় যুক্ত ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। যথাযথ গ্রাহক তথ্য যাচাই (কেওয়াইসি) ছাড়াই মুঠোফোন গ্রাহকদের নিজস্ব গ্রাহক বানিয়ে ফেলার সুযোগ পায় নগদ।

এ ছাড়া সরকারের সব ভাতা বিতরণে একচ্ছত্র সুবিধা পায় নগদ। ফলে সরকারি ভাতা পেতে নগদের গ্রাহক হওয়া বাধ্যতামূলক হয়ে ওঠে। এই ভাতা বিতরণে নয়ছয় হওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

নগদের মালিকানা খতিয়ে দেখছে বাংলাদেশ ব্যাংক

আপডেট: ১২:০৭:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪

চূড়ান্ত লাইসেন্স দেওয়ার দুই মাস পর নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের উদ্যোক্তা ও শেয়ারধারীদের তথ্য খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নগদের বিদেশি উদ্যোক্তাদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ–সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের কাছেও। গত রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক এ চিঠি পাঠায়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর গভর্নর হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যোগ দেওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ২০১৯ সাল থেকে লাইসেন্স ছাড়া কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে মোবাইলে আর্থিক সেবা নগদ। এরপর রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে বিদায়ী সরকারের সময় লাইসেন্স নেয় নগদ ডিজিটাল ব্যাংক। নথিপত্রে ঘাটতি থাকার পরও এই অনুমোদন দেন সাবেক গভর্নর। এখন তথ্যে গরমিল বা উদ্যোক্তাদের যোগ্যতায় ঘাটতি পাওয়া গেলে সেই লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে। কোনো ঘাটতি না মিললে কার্যক্রম শুরুর অনুমোদন দেওয়া হবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়েছে, নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসির উদ্যোক্তা শেয়ারধারীদের তথ্য যাচাই করা প্রয়োজন। এ জন্য পাঁচটি বিদেশি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের নাম যুক্ত করে তাদের বিষয়ে তথ্য চেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রতিষ্ঠান পাঁচটি হলো ব্লু হেভেন ভেঞ্চারস এলএলসি, অসিরিস ক্যাপিটাল পার্টনারস এলএলসি, জেন ফিনটেক এলএলসি, ফিনক্লুশন ভেঞ্চারস পিটিই লিমিটেড এবং ট্রপে টেকনোলজিস এলএলসি। চিঠিতে এই পাঁচটি বিদেশি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধনপত্র যুক্ত করা হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের তথ্যাদি যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে সংগ্রহ করে জমা দিতে বলা হয়।

চিঠিতে প্রতিষ্ঠানগুলোর নিবন্ধন ও ঠিকানা বা অবস্থান, গঠনকালীন মালিকানা কাঠামো ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, ব্যবসায়িক কার্যক্রম, বর্তমান মালিকানা ও মালিকদের নাগরিকত্ব, বিগত তিন বছরের কর পরবর্তী প্রকৃত মুনাফা ও প্রকৃত সম্পদের পরিমাণ এবং হোল্ডিং কোম্পানির ক্ষেত্রে সহযোগী কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রমের তথ্য জানাতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন: দীপু মনি, জাহিদ মালেকসহ আরো ১৩ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ

এর আগে গত জুনে দেশের প্রথম ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে চূড়ান্ত লাইসেন্স পায় নগদ। আইনে বিশেষ ছাড় দিয়ে ‘নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি’কে তফসিলি ব্যাংক হিসেবে তালিকাভুক্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে দেশে ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়ায় ৬২। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালক (বিআরপিডি) শাহরিয়ার সিদ্দিকী সে সময় নগদ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ তানভীর এ মিশুকের হাতে ‘নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি’র লাইসেন্স তুলে দেন।

ব্যাংক কোম্পানি আইনে একক ব্যক্তি, পরিবার বা কোম্পানির কোনো ব্যাংকে ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার ধারণে যে বিধিনিষেধ রয়েছে, তাতে ছাড় দেওয়া হয়েছে নগদকে।

ওই সময়ে এক প্রজ্ঞাপনে ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১৪ ক (১) ধারার উল্লেখ করে বলা হয়, ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১২১ ধারার ক্ষমতাবলে ব্লু হেভেন ভেঞ্চারস এলএলসি, আরসিসি ক্যাপিটাল পার্টনারস এলএলসি এবং ফিনক্লুশন ভেঞ্চারস পিটিই লিমিটেড কর্তৃক ‘নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি’র শেয়ার ধারণের ক্ষেত্রে ১৪ ক (১) ধারা প্রযোজ্য হবে না। তাদের ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার রয়েছে নগদ ডিজিটাল ব্যাংকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গত ২৮ মে অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের সভায় নগদকে লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে গত বছরের ৮ আগস্ট নগদ এবং কড়িকে ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠার নীতিগত অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ।

এদিকে রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস (আরজেএসসিএফ) থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়ার অঙ্গরাজ্যের উইলমিংটনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান অসিরিস ক্যাপিটাল পার্টনার এলএলসি নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের ৪৯ দশমিক ৮ শতাংশের মালিক। এ প্রতিষ্ঠানে মালিকানায় রয়েছেন নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক। উইলমিংটনে অবস্থিত আরেক প্রতিষ্ঠান জেন ফিনটেক এলএলসির ড্যানিয়েল ভিনসেন্ট পারকারের রয়েছে ৫ শতাংশ মালিকানা। উইলমিংটনে নিবন্ধিত আরেক কোম্পানি ট্রুপে টেকনোলজিস এলএলসির হাতে রয়েছে ৩ দশমিক ২ শতাংশ শেয়ার। আর এই কোম্পানির প্রতিনিধি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে জেরিন আহমেদ আঁখির নাম।

নগদে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের গ্রেট ফলসে নিবন্ধিত ব্লু হেভেন ভেঞ্চারস এলএলসির রয়েছে ২৫ শতাংশ মালিকানা। আর এই কোম্পানির মালিকানায় রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র নিবাসী মুহাম্মদ ফরিদ খান। মুহাম্মদ ফরিদ খানের যুক্তরাষ্ট্র নিবাসী পুত্র ফারহান করিম খানের হাতে রয়েছে আরও ৫ শতাংশ শেয়ার।
সিঙ্গাপুরের মেরিনা বে ফাইন্যান্সিয়াল সেন্টারে অবস্থিত ফিনক্লুশন ভেঞ্চারস পিটিই নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের ১১ শতাংশের মালিক। এ প্রতিষ্ঠানকে প্রতিনিধিত্ব করছেন নকিব চৌধুরী। ঢাকার পুরানা পল্টনে অবস্থিত ফিনটেকচুয়াল হোল্ডিংস লিমিটেডের প্রতিনিধি মারুফুল ইসলাম ঝলকের রয়েছে ১ শতাংশ শেয়ার। মারুফুল ইসলাম নগদের নির্বাহী পরিচালক পদেও রয়েছেন।

মোবাইলে আর্থিক সেবায় (এমএফএস) বিকাশের পরই এখন নগদের অবস্থান। তবে অভিযোগ রয়েছে, প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে চলেনি প্রতিষ্ঠানটি। ডাক বিভাগের সেবা বলা হলেও আদতে এতে সরকারের কোনো অংশীদারত্ব ছিল না। দফায় দফায় পরিবর্তন হয় নগদের মালিকানায়। প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় যুক্ত ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। যথাযথ গ্রাহক তথ্য যাচাই (কেওয়াইসি) ছাড়াই মুঠোফোন গ্রাহকদের নিজস্ব গ্রাহক বানিয়ে ফেলার সুযোগ পায় নগদ।

এ ছাড়া সরকারের সব ভাতা বিতরণে একচ্ছত্র সুবিধা পায় নগদ। ফলে সরকারি ভাতা পেতে নগদের গ্রাহক হওয়া বাধ্যতামূলক হয়ে ওঠে। এই ভাতা বিতরণে নয়ছয় হওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।

ঢাকা/এসএইচ