পদ্মা ব্যাংকে আটকে আছে সরকারের হাজার কোটি টাকা

- আপডেট: ১১:০৯:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪
- / ১০৪৪৭ বার দেখা হয়েছে
দফায় দফায় বৈঠক আর বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপ কামনার পরও পদ্মা ব্যাংকে আটকে থাকা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের প্রায় এক হাজার ২৬৮ কোটি টাকা তুলছে পারছে না সরকার। টাকা আদায়ে চাপ দিচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, তিতাস গ্যাস ও জীবন বিমা করপোররেশন। সুদাসলে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা না পেলে আইনি ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এছাড়াও জলবায়ু তহবিলের ৮৭৪ কোটি টাকা আদায়ের উদ্যোগ নিচ্ছেন পরিবেশ উপদেষ্টা।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠার তিন বছর পর নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে বড় ধরনের তারল্য সংকটে পড়ে ফারমার্স ব্যাংক। তারপরও ব্যাংকটিতে আমানত হিসেবে রাখা হয় বিপুল সরকারি অর্থ।
ডুবতে থাকা এ ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদ থেকে ২০১৭ সালের নভেম্বরে আওয়ামী লীগ নেতা মহিউদ্দিন খান (মখা) আলমগীর পদত্যাগ করলে চেয়ারম্যান হন আলোচিত-সমালোচিত ব্যবসায়ী নাফিজ সরাফাত। এরপর ফারমার্স নাম পরিবর্তন করে পদ্মা ব্যাংক নামে যাত্রা এটি শুরু করে।
নথিপত্রে দেখা যায়, মখা আলমগীরের পদত্যাগের ঠিক এক মাস আগে এবং পরে পদ্মা ব্যাংকের ৪টি শাখায় ২৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা আমানত রাখে বিটিআরসি। মাত্র আড়াই শতাংশ সুদে এক থেকে তিন মাস মেয়াদে রাখা হয় এ অর্থ। অথচ বারবার তাগাদা দিয়েও ৭ বছরে সুদাসলে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা তুলতে পারেনি সংস্থাটি।
আরও পড়ুন: ২৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে একনেকে চার প্রকল্প অনুমোদন
বিটিআরসির অর্থ কমিশনার ড. মুশফিক মান্নান চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, আমি পদ্মা ব্যাংকে ক্যাশের জন্য যাবো। ক্যাশ করতে না পারলে আইনি বিভাগকে দিয়ে দেবো। মামলা করতে আইন বিভাগ দায়িত্ব নেবে।
২০১৫ ও ’১৬ সালে পদ্মা ব্যাংকের ৭টি শাখায় এক বছর মেয়াদি আমানতের মাধ্যমে প্রায় ১১৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা রাখে জীবন বিমা করপোরেশন। এ অর্থ পরিশোধে একাধিকবার চিঠি দেয়া হলেও সাড়া পায়নি। সুদাসলে বর্তমানে ব্যাংকটির কাছে পাওনা ১২৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকার বেশি।
রাজনৈতিক বিবেচনায় ২০১৫ সালে তৎকালীন ফারমার্স ব্যাংকে এক বছর মেয়াদে জলবায়ু তহবিলের ৫০৮ কোটি টাকা আমানত রাখা হয়। বারবার তাগাদা দিয়েও অর্থ ফেরত পায়নি সরকার। পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, সুদাসলে বর্তমানে ৮৭৪ কোটি টাকা পাওয়া যাবে পদ্মা ব্যাংক থেকে।
উপদেষ্টা বলেন, তাদের এখন বক্তব্য হচ্ছে যে, তারা ২০৩৮ সালের আগে এই টাকাটা আমাদেরকে দিতে পারবে না। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে বলা হবে একটা রোডম্যাপ তৈরি করে দিতে, যাতে যে কাজে আমরা টাকাটা নিয়েছিলাম, সেই কাজের জন্য ফেরত পাই।
এর বাইরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ১৭৯ কোটি টাকা এবং তিতাস গ্যাসের ৫৩ কোটি টাকা আটকে আছে পদ্মা ব্যাংকে। এ বিষয়ে পদ্মা ব্যাংকের বক্তব্য জানতে চেয়ে গুলশানে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গেলে কথা বলবেন না বলে জানান ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
ঢাকা/এসএইচ