০৯:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

পুঁজিবাজারের পাহারাদার আইসিবি এখন নিজের অস্তিত্ব নিয়ে বিপাকে!

বিশেষ প্রতিবেদক
  • আপডেট: ০২:০১:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
  • / ১০৮৫৬ বার দেখা হয়েছে

বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের ইতিহাসে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) এক সময় ছিল আস্থার প্রতীক, বিনিয়োগকারীদের রক্ষাকবচ। তবে সময়ের পরিক্রমায় সেই রক্ষাকবচ আজ এক প্রলয়ঙ্করী ভূতে রূপান্তরিত হয়েছে। পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের রক্ষার উদ্দেশ্যে প্রায় পাঁচ দশক আগে প্রতিষ্ঠিত এই রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটি এখন নিজেই টিকে থাকার লড়াইয়ে জর্জরিত।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

যেখানে একসময় আইসিবির উপস্থিতি মানেই বাজারে ইতিবাচক বার্তা, সেখানে আজ প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক প্রতিবেদন দেখে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের হিসাব বলছে, আইসিবি সুদ বাবদ ব্যয় করেছে ৯০৬ কোটি টাকা, অথচ আয় করেছে মাত্র ১২৫ কোটি টাকা। তারল্য সঙ্কট মেটাতে আইসিবি সরকার ও বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ধার নিয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা, যার বিপরীতে সুদের বোঝা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এই অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানটিকে এক ভয়াবহ ক্ষতির মুখে ঠেলে দিয়েছে।

অবস্থার বেগতিক দেখে আইসিবি মিউচুয়াল ফান্ড খাত থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশেষ করে বেমেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড থেকে অর্থ ফেরত আনতে হবে, অর্থাৎ সেই ফান্ডগুলোর শেয়ার বিক্রি করে টাকা ফেরত দিতে হবে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে, যা প্রাথমিকভাবে শেয়ারদরকে নিম্নমুখী করে দিতে পারে। বিনিয়োগকারীরা এই খবর শুনেই শঙ্কিত। কারণ শেয়ার বিক্রির চাপে পুঁজিবাজার আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে।

পুঁজিবাজারের বিশ্লেষকরা বলছেন, আইসিবির আজকের করুণ দশার পেছনে মূল কারণ হলো ধারাবাহিক ভুল নীতি, রাজনৈতিক প্রভাবিত সিদ্ধান্ত এবং বিতর্কিত বিনিয়োগ। বিভিন্ন দুর্বল আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও লিজিং কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে আইসিবি শুধু যে অর্থ আটকে ফেলেছে তা নয়, বরং প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ও কার্যক্ষমতাকেও চূড়ান্তভাবে ধ্বংস করেছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, প্রাইভেট খাতের পদ্মা ব্যাংকে আইসিবির ১৫৪ কোটি টাকার আমানত এবং ৮৫ কোটি টাকার ইকুইটি বিনিয়োগ রয়েছে। এছাড়া, পিপলস লিজিং, প্রিমিয়ার লিজিং, ফার্স্ট ফাইন্যান্সসহ আরও অনেক দুর্বল প্রতিষ্ঠানে শত শত কোটি টাকা আটকে আছে।

আরও পড়ুন: বিআইএফসির ‘নো’ ডিভিডেন্ড ঘোষণা

গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত আইসিবির খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১,১৫২ কোটি টাকায়, যা গত বছরের জুনে ছিল ৭৯০ কোটি টাকা। এই বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ ও আটকে থাকা আমানত প্রতিষ্ঠানটির তারল্য সঙ্কটকে আরও গভীর করেছে। ফলে সরকারের কাছ থেকে ৩ হাজার কোটি টাকার স্বল্পসুদে (৪%) ঋণ নিয়েও প্রতিষ্ঠানটি কার্যত দিশাহারা। এই অর্থের একটি বড় অংশ পুরনো ঋণ পরিশোধে খরচ হয়ে গেছে, ফলে নতুন বিনিয়োগের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল জোগাড় করতে পারেনি।

গণমাধ্যমে আইসিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদের কথায় স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে যে, তারল্য সঙ্কটের কারণে নতুন বিনিয়োগ বন্ধ রয়েছে এবং মিউচুয়াল ফান্ড থেকে যতটা সম্ভব বিনিয়োগ ফেরত আনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে এ পদক্ষেপ বাজারের ওপর কতটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে তা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির মধ্যে কোনো সুস্পষ্ট কৌশল নেই বললেই চলে।

প্রতিষ্ঠানটির দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা সমাধানে যে বড় সংস্কার প্রয়োজন, তা বছরের পর বছর ধরে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের নথিপত্রে সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে। কোনো প্রকৃত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এর ফলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা তলানিতে এসে ঠেকেছে।

অন্যদিকে, মিউচুয়াল ফান্ড খাত থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে আইসিবি তারল্য সঙ্কটের তাৎক্ষণিক সমাধান খুঁজলেও এটি মূল সমস্যার স্থায়ী সমাধান নয়। কারণ এই অর্থের কিছু অংশ ফেরত এলেও তা ঋণ পরিশোধ বা সুদের খরচে শেষ হয়ে যাবে। ফলে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সক্ষমতা বাড়বে না। বরং, এর ফলে বাজারে শেয়ার বিক্রির চাপ তৈরি হয়ে নতুন করে ধসের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

আইসিবির এই পরিণতি আমাদের জন্য এক বড় শিক্ষা। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে রাজনৈতিক প্রভাবের বাইরে থেকে পেশাদার ব্যবস্থাপনা, কার্যকর স্বচ্ছতা এবং সঠিক বিনিয়োগ কৌশল গ্রহণ করা কতটা জরুরি তা প্রমাণ হয়ে গেছে। বারবার বলা হয়েছে, পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা আনতে হলে আইসিবির সক্রিয় এবং শক্তিশালী ভূমিকা প্রয়োজন। অথচ বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, প্রতিষ্ঠানটি নিজেই পুঁজিবাজারের বড় ঝুঁকির উৎসে পরিণত হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনই যদি সময়োপযোগী সংস্কার এবং কঠোর নীতি প্রণয়ন না করা হয়, তাহলে আইসিবি শুধু নিজের অবস্থাই নয়, পুরো পুঁজিবাজারকেই ধ্বংসের মুখে নিয়ে যেতে পারে। দেশের অর্থনীতির স্বার্থে এই ধস ঠেকাতে অবিলম্বে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের বাইরে গিয়ে, পেশাদার ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা টিম দিয়ে পুনর্গঠন করা দরকার।

আরও পড়ুন: বে লিজিংয়ের ‘নো’ ডিভিডেন্ড ঘোষণা

এখন প্রশ্ন একটাই—সরকার এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা কি এই চরম সংকেতকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা নেবে, নাকি আইসিবি ধীরে ধীরে আরও গভীর অন্ধকারে তলিয়ে যাবে? যদি দ্বিতীয়টি ঘটে, তবে তা হবে দেশের অর্থনৈতিক ইতিহাসের এক ভয়াবহ অধ্যায়, যা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য ভয়াবহ বার্তা বহন করবে।

পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের জন্যও এটি একটি বড় সতর্কবার্তা। কারণ, আস্থার প্রতীক হিসেবে যারা আইসিবিকে দেখে আসছিলেন, তাদের চোখের সামনে এখন স্পষ্ট হচ্ছে—আস্থা আর বাস্তবতার ফারাক কতটা গভীর।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

error: Content is protected ! Please Don't Try!

পুঁজিবাজারের পাহারাদার আইসিবি এখন নিজের অস্তিত্ব নিয়ে বিপাকে!

আপডেট: ০২:০১:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের ইতিহাসে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) এক সময় ছিল আস্থার প্রতীক, বিনিয়োগকারীদের রক্ষাকবচ। তবে সময়ের পরিক্রমায় সেই রক্ষাকবচ আজ এক প্রলয়ঙ্করী ভূতে রূপান্তরিত হয়েছে। পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের রক্ষার উদ্দেশ্যে প্রায় পাঁচ দশক আগে প্রতিষ্ঠিত এই রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটি এখন নিজেই টিকে থাকার লড়াইয়ে জর্জরিত।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

যেখানে একসময় আইসিবির উপস্থিতি মানেই বাজারে ইতিবাচক বার্তা, সেখানে আজ প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক প্রতিবেদন দেখে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের হিসাব বলছে, আইসিবি সুদ বাবদ ব্যয় করেছে ৯০৬ কোটি টাকা, অথচ আয় করেছে মাত্র ১২৫ কোটি টাকা। তারল্য সঙ্কট মেটাতে আইসিবি সরকার ও বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ধার নিয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা, যার বিপরীতে সুদের বোঝা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এই অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানটিকে এক ভয়াবহ ক্ষতির মুখে ঠেলে দিয়েছে।

অবস্থার বেগতিক দেখে আইসিবি মিউচুয়াল ফান্ড খাত থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশেষ করে বেমেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড থেকে অর্থ ফেরত আনতে হবে, অর্থাৎ সেই ফান্ডগুলোর শেয়ার বিক্রি করে টাকা ফেরত দিতে হবে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে, যা প্রাথমিকভাবে শেয়ারদরকে নিম্নমুখী করে দিতে পারে। বিনিয়োগকারীরা এই খবর শুনেই শঙ্কিত। কারণ শেয়ার বিক্রির চাপে পুঁজিবাজার আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে।

পুঁজিবাজারের বিশ্লেষকরা বলছেন, আইসিবির আজকের করুণ দশার পেছনে মূল কারণ হলো ধারাবাহিক ভুল নীতি, রাজনৈতিক প্রভাবিত সিদ্ধান্ত এবং বিতর্কিত বিনিয়োগ। বিভিন্ন দুর্বল আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও লিজিং কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে আইসিবি শুধু যে অর্থ আটকে ফেলেছে তা নয়, বরং প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ও কার্যক্ষমতাকেও চূড়ান্তভাবে ধ্বংস করেছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, প্রাইভেট খাতের পদ্মা ব্যাংকে আইসিবির ১৫৪ কোটি টাকার আমানত এবং ৮৫ কোটি টাকার ইকুইটি বিনিয়োগ রয়েছে। এছাড়া, পিপলস লিজিং, প্রিমিয়ার লিজিং, ফার্স্ট ফাইন্যান্সসহ আরও অনেক দুর্বল প্রতিষ্ঠানে শত শত কোটি টাকা আটকে আছে।

আরও পড়ুন: বিআইএফসির ‘নো’ ডিভিডেন্ড ঘোষণা

গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত আইসিবির খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১,১৫২ কোটি টাকায়, যা গত বছরের জুনে ছিল ৭৯০ কোটি টাকা। এই বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ ও আটকে থাকা আমানত প্রতিষ্ঠানটির তারল্য সঙ্কটকে আরও গভীর করেছে। ফলে সরকারের কাছ থেকে ৩ হাজার কোটি টাকার স্বল্পসুদে (৪%) ঋণ নিয়েও প্রতিষ্ঠানটি কার্যত দিশাহারা। এই অর্থের একটি বড় অংশ পুরনো ঋণ পরিশোধে খরচ হয়ে গেছে, ফলে নতুন বিনিয়োগের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল জোগাড় করতে পারেনি।

গণমাধ্যমে আইসিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদের কথায় স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে যে, তারল্য সঙ্কটের কারণে নতুন বিনিয়োগ বন্ধ রয়েছে এবং মিউচুয়াল ফান্ড থেকে যতটা সম্ভব বিনিয়োগ ফেরত আনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে এ পদক্ষেপ বাজারের ওপর কতটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে তা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির মধ্যে কোনো সুস্পষ্ট কৌশল নেই বললেই চলে।

প্রতিষ্ঠানটির দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা সমাধানে যে বড় সংস্কার প্রয়োজন, তা বছরের পর বছর ধরে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের নথিপত্রে সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে। কোনো প্রকৃত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এর ফলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা তলানিতে এসে ঠেকেছে।

অন্যদিকে, মিউচুয়াল ফান্ড খাত থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে আইসিবি তারল্য সঙ্কটের তাৎক্ষণিক সমাধান খুঁজলেও এটি মূল সমস্যার স্থায়ী সমাধান নয়। কারণ এই অর্থের কিছু অংশ ফেরত এলেও তা ঋণ পরিশোধ বা সুদের খরচে শেষ হয়ে যাবে। ফলে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সক্ষমতা বাড়বে না। বরং, এর ফলে বাজারে শেয়ার বিক্রির চাপ তৈরি হয়ে নতুন করে ধসের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

আইসিবির এই পরিণতি আমাদের জন্য এক বড় শিক্ষা। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে রাজনৈতিক প্রভাবের বাইরে থেকে পেশাদার ব্যবস্থাপনা, কার্যকর স্বচ্ছতা এবং সঠিক বিনিয়োগ কৌশল গ্রহণ করা কতটা জরুরি তা প্রমাণ হয়ে গেছে। বারবার বলা হয়েছে, পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা আনতে হলে আইসিবির সক্রিয় এবং শক্তিশালী ভূমিকা প্রয়োজন। অথচ বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, প্রতিষ্ঠানটি নিজেই পুঁজিবাজারের বড় ঝুঁকির উৎসে পরিণত হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনই যদি সময়োপযোগী সংস্কার এবং কঠোর নীতি প্রণয়ন না করা হয়, তাহলে আইসিবি শুধু নিজের অবস্থাই নয়, পুরো পুঁজিবাজারকেই ধ্বংসের মুখে নিয়ে যেতে পারে। দেশের অর্থনীতির স্বার্থে এই ধস ঠেকাতে অবিলম্বে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের বাইরে গিয়ে, পেশাদার ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা টিম দিয়ে পুনর্গঠন করা দরকার।

আরও পড়ুন: বে লিজিংয়ের ‘নো’ ডিভিডেন্ড ঘোষণা

এখন প্রশ্ন একটাই—সরকার এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা কি এই চরম সংকেতকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা নেবে, নাকি আইসিবি ধীরে ধীরে আরও গভীর অন্ধকারে তলিয়ে যাবে? যদি দ্বিতীয়টি ঘটে, তবে তা হবে দেশের অর্থনৈতিক ইতিহাসের এক ভয়াবহ অধ্যায়, যা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য ভয়াবহ বার্তা বহন করবে।

পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের জন্যও এটি একটি বড় সতর্কবার্তা। কারণ, আস্থার প্রতীক হিসেবে যারা আইসিবিকে দেখে আসছিলেন, তাদের চোখের সামনে এখন স্পষ্ট হচ্ছে—আস্থা আর বাস্তবতার ফারাক কতটা গভীর।

ঢাকা/এসএইচ