পুঁজিবাজারে নীতি সহায়তা দিতে এনবিআর চেয়ারম্যানের আশ্বাস

- আপডেট: ০৭:৫১:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪
- / ১০৬১৭ বার দেখা হয়েছে
শেয়ারবাজারকে ইতিবাচক ধারায় ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ব্যক্তিশ্রেণীর করদাতাদের জন্য ৫০ লক্ষ টাকার অধিক মূলধনী আয়ের উপর অর্জিত আয়কে সম্পূর্ণরূপে কর অব্যাহতি দেয়ার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। এটি করা হলে শুধুমাত্র শেয়ারবাজারই উপকৃত হবে না, সাথে সাথে লেনদেনের উপর আরোপিত কর এবং মূলধনী আয়ের উপর কর উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি ঘটবে।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
আজ রোববার (২৭ অক্টোবর) ডিএসই’র চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ আবদুর রহমান খান, এফসিএমএ এর সাথে তাঁর অফিসে সাক্ষাত করে এ অনুরোধ জানান।
লিখিত বক্তব্যে ডিএসই চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, আয়কর আইন ২০২৩-এর মাধ্যমে ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতাদের তালিকাভুক্ত কোন কোম্পানি বা তহবিলের শেয়ার বা ইউনিট হস্তান্তর হতে অর্জিত ৫০ লক্ষ টাকার অধিক মূলধনী আয়ের উপর কর অব্যাহতি প্রত্যাহার করা হয়। যার ফলে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ হারে কর প্রদানকারী করদাতাদের জন্য সারচার্জসহ এরূপ অর্জিত আয়ের উপর কার্যকরী করের হার ক্ষেত্র বিশেষে ৪০.৫ শতাংশে উপনীত হয়। এটি ব্যক্তিশ্রেণীর বিনিয়োগকারীদের শেয়ারবাজার বিমুখ করেছে এবং শেয়ারবাজারের উপর সামগ্রিকভাবে ভীষণ নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। যার ফলে শেয়ারবাজারের দৈনিক লেনদেন ১৮০০ কোটি টাকা থেকে ক্রমাগত হ্রাস পেয়ে ৩০০ কোটি টাকার নিচে নেমে এসেছে। তিনি বলেন, বাজারের সূচকও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে এবং সূচকের অব্যাহত পতন বিনিয়োগকারীদের মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। বাজারের এই লেনদেন এবং সূচকের পতনের ফলে সরকারের মূলধনী আয়ের উপর কর এবং লেনদেনের উপর আরোপিত কর উভয়ই উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে।
ডিএসইর চেয়ারম্যান আরো বলেন, ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীদের জন্য তালিকাভূক্ত কোম্পানি থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ আয়ের উপর উৎসে কর্তিত কর-কে চূড়ান্ত কর হিসেবে পরিগণনা, ব্রোকারেজ হাউসগুলোর লেনদেন থেকে ০.০৫ শতাংশ উৎসে কর-কে হ্রাসকরন এবং এ খাত থেকে নিরূপিত ক্ষতি অন্য খাতের আয়ের সাথে সমন্বয় কিংবা নিরূপিত ক্ষতির জের পরবর্তী ছয় বছর পর্যন্ত টানার অনুমতিসহ বেশ কিছু প্রস্তাবনা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিবেচনার জন্য ডিএসই’র পক্ষ থেকে প্রেরণ করা হয়েছে। এসকল প্রস্তাবনার বিষয়গুলোও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সুবিবেচনা লাভ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
আরও পড়ুন: একমি ল্যাবরেটরিজের ডিভিডেন্ড ঘোষণা
ডিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, শেয়ারবাজার মুক্তবাজার অর্থনীতির প্রধানতম চালিকাশক্তি। কিন্তু বিভিন্ন অনিয়ম এবং নীতি অসংগতির কারণে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার অর্থনীতিতে কাঙ্খিত ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমানে শেয়ারবাজারের কাঠামোগত সংস্কারে বাংলাদেশ সরকার, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জসহ সকল বাজার মধ্যস্থাকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ একযোগে কাজ করছে। আশা করা যায় সকল সংস্কার কার্যক্রমের সফল সম্পাদন এবং পরিপূরক নীতিসহায়তার মাধ্যমে দেশের শেয়ারবাজার শীঘ্রই একটি দৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড়াতে সক্ষম হবে এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখা শুরু করবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, প্রস্তাবিত বিষয়গুলো নিয়ে তিনি অবহিত আছেন এবং সামগ্রিক অর্থনীতি, শেয়ারবাজারের উন্নয়ন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা ইত্যাদি বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রস্তাবনাগুলোর ব্যাপারে শীঘ্রই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। তিনি প্রতিনিধি দলকে বাজার মধ্যস্থতাকারীদের পেশাদারিত্বের সাথে কার্যক্রম পরিচালনা, ডিভিডেন্ড আয়ের উপর উৎসে কর কর্তনের সার্টিফিকেট প্রদানসহ কিছু বিষয়ে ডিএসই’র নেতৃত্বশীল ভূমিকা পালনের অনুরোধ করেন।
এ সময় ডিএসই’র পরিচালক অধ্যাপক মেজর জেনারেল (অবঃ) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, মোঃ শাকিল রিজভী, রিচার্ড ডি রোজারিও, ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাত্বিক আহমেদ শাহ এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (ট্যাক্স পলিসি) এ কে এম বদরুল আলম এবং সেন্টার ইন্টেলিজেন্স সেলের ডিরেক্টর জেনারেল আহসান হাবীব উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/এসএইচ