পুঁজিবাজারে লোকসানি মার্জিন অ্যাকাউন্টের সুদ নিয়ে নতুন জটিলতা

- আপডেট: ১১:৫৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
- / ১০৬৭১ বার দেখা হয়েছে
পুঁজিবাজারে মার্জিন অ্যাকাউন্টে মূলধনি লোকসান (নেগেটিভ ইকুইটি) সম্পর্কিত সমস্যার সমাধানে নতুন করে উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কিন্তু দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত ইস্যুটির সমাধান করতে গিয়ে নতুন করে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্রোকারদের সংগঠন ডিবিএ ও অন্যান্যরা।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
বিএসইসি চেষ্টা করছে বিনিয়োগকারীদের জমা রাখা অর্থের সমন্বিত ব্যাংক হিসাবের (সিসিএ) সুদ আয় সঠিকভাবে ব্যবহার করতে। পূর্ববর্তী কমিশন এই আয়ের শতভাগ বিনিয়োগকারীদের ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল, যা বাস্তবায়ন সম্ভব ছিল না।
বর্তমান কমিশন জানিয়েছে, সমন্বিত ব্যাংক হিসাব থেকে প্রাপ্ত সুদ থেকে আয়ের ২৫ শতাংশ বিনিয়োগকারী সুরক্ষা তহবিলে জমা দিতে হবে এবং বাকি ৭৫ শতাংশ বিনিয়োগ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে ব্যবহার করা হবে।
কিন্তু শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা এই উদ্যোগকে ত্রুটিপূর্ণ ও বাস্তবায়নযোগ্য নয় মনে করছেন। এ বিষয়ে প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, কমিশনের এই আইনটি ‘ত্রুটিপূর্ণ’। তিনি বলেন, প্রথমত সুদ আয়কে ‘অন্যান্য আয়’ ধরতে হবে, যা আন্তর্জাতিক আর্থিক রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড। তাছাড়া সুদ আয় অ্যাকাউন্টে জমার আগেই উৎসে ১০ শতাংশ কর কর্তন করে এনবিআর। আয়ের ক্ষেত্রে বিএসইসির এমন আদেশ সাংঘর্ষিক এবং বাস্তবায়নযোগ্য নয়।
এ বিষয়ে ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, বিশ্বের সব দেশে সিসিএ অ্যাকাউন্টের সুদ আয় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের। বিনিয়োগকারীরা কখনও তা দাবি করেননি। গত নভেম্বরের বৈঠকে বর্তমান কমিশন বিষয়টি মেনে নিয়েছিল। এতদিন পর কেন ভিন্ন নিয়ম করতে যাচ্ছে, তা বোধগম্য নয়।
তিনি বলেন, শেয়ারবাজার অত্যন্ত সংবেদনশীল বাজার। এখানে একটি ‘ভুল’ সিদ্ধান্ত যেমন বাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, তেমনি বিলম্বিত সিদ্ধান্তের ফলও ভালো হয় না। কমিশনের উচিত, সংবেদনশীলতাকে আমলে নিয়ে কাজ করা।
বিষয়টি নিয়ে ডিবিএ সভাপতি সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, সবার সঙ্গে আলোচনা করে ২০৩০ সালের মধ্যে ‘নেগেটিভ ইক্যুইটি’ শূন্যে নামাতে চলতি বছর থেকে কাজ শুরুর প্রস্তাব দিয়েছিলেন তারা। প্রস্তাবটি গ্রহণ না করে কমিশন লোকসানের বিপরীতে প্রভিশনিংয়ে এক বছর ছাড় দিয়েছে। আর ‘কেস-টু-কেস’ সিদ্ধান্ত নিতে জুনের মধ্যে আলাদাভাবে পরিকল্পনা চেয়েছে।
তিনি বলেন, সমস্যাটি হলো- ‘নেগেটিভ ইক্যুইটি’ সমস্যায় আটকে আছে প্রায় দেড়শ ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক। এত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পৃথকভাবে আলোচনা করে কমিশন চলতি বছরের মধ্যে পৃথক পৃথক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। পারলেও তার বাস্তবায়ন চলতি বছর থেকে শুরু হবে কিনা, প্রশ্ন তাঁর।
আরও পড়ুন: সূচকের পতনে চলছে লেনদেন
শেয়ারবাজারে দীর্ঘ মন্দাবস্থার জন্য আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও দীর্ঘ অমীমাংসিত ইস্যুর দ্রুত সমাধান প্রয়োজন মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, আইপিও খরা কাটানো, মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের মেয়াদ ১০ বছরের বেশি থাকবে কিনা, বেক্সিমকো এবং ইসলামী ব্যাংকের ফ্লোর প্রাইস কতদিন থাকবে, বিএফআইইউ যেসব বিও অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে, তার কী হবে– শেয়ারবাজারের স্বার্থে এসব বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত আসা উচিত।
ঢাকা/টিএ