পুঁজিবাজার পতনের দায় আসলেই কার!

- আপডেট: ০৯:২২:০৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- / ১২০৬১ বার দেখা হয়েছে
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়ার মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। কমেছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারদর। বিষয়টিকে কেউ কেউ কারেকশন বললেও অনেকেই বলছেন, বাজারে বিগত বছরগুলোর অনিয়ম তদন্ত এবং এ সংক্রান্ত কমিটি ঘোষণা সূচকের পতনকে ত্বরান্বিত করছে।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
তবে কি অনিয়মের বিচার বা তদন্ত করা যাবে না- এমন প্রশ্ন অনেক বিনিয়োগকারীরা এড়িয়ে গেলেও অনেকে বলছেন, অবশ্যই প্রতিটি অন্যায়ের তদন্ত সাপেক্ষে বিচার হওয়া উচিত। তবে শেয়ারবাজার একটি স্পর্শকাতর জায়গা। তাই এভাবে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে তদন্ত কমিটির জানান দেওয়া বা নিজেদের জাহির করার কোন মানে নেই। তদন্তটা আরও সহনশীল ও গোপনীয় ভাবেও করা যেতো। এছাড়া যাদের নিয়ে কমিটি করা হয়েছে, তাদের নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
বিগত ১৫ বছরে পুঁজিবাজারে যত অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে, সেগুলোর বিচার করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত কমিটিকে প্রথম পর্যায়ে ১২টি প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়ে বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেছেন, শেয়ারবাজারে আর কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতি হতে দেওয়া হবে না। তিনি জানান, এটি প্রথম পর্যায়ের তদন্ত কমিটি। গত ১৫ বছরের অনিয়ম-দুর্নীতি অনুসন্ধানে আরও তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
কিন্তু শেয়ারবাজারের অনিয়ম-দুর্নীতির হোতারা নিয়ন্ত্রক সংস্থার এই সদিচ্ছাকে নেতিবাচকভাবে প্রচার করতে শুরু করেছে। যার কারণে গত দুই কর্মদিবসে শেয়ারবাজারে টানা পতন হয়েছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিএসইসির বর্তমান চেয়ারম্যান শেয়ারবাজারে ঝেঁকে বসা অনিয়ম ও দুর্নীতি বিতাড়িত করতে শক্ত হাতে এগুচ্ছেন। কিন্তু তিনি যাতে সফল না হন, সেজন্য অনিয়ম-দুর্নীতির হোতারা নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। শেয়ারবাজারের স্বার্থে তাদের ই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বিনিয়োগকারীদের সোচ্চার হতে হবে।
আরও পড়ুন: শেয়ারের মূল্য হেরফের: বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি কোটি কোটি টাকা
এদিকে বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, আগের তিন দিন শেয়ারবাজারে উত্থান হয়েছে। ওই তিনদিনে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক বেড়েছে ১৪৪ পয়েন্ট। বিপরীতে গত দুই দিনে সূচক কমেছে ৪৩ পয়েন্ট। তাঁরা বলেন, উত্থান-পতনের মিশ্র প্রবণতায় শেয়ারবাজার সামনে অগ্রসর হচ্ছে। যা শেয়ারবাজারের জন্য ইতিবাচক। এতে বাজারের রেসিসট্যান্স বাড়ে এবং বড় পতনের সম্ভাবনা কমে যায়।
মঙ্গলবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৭৮৭ পয়েন্টে। আগেরদিন ডিএসইর সূচক কমেছিল ২৬ পয়েন্ট।
এদিন ডিএসইতে ৭২৬ কোটি ৫১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন হয়েছিল ১ হাজার ৬৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। লেনদেন কমেছে ৩৩৯ কোটি ৩ লাখ টাকার বা ৩২ শতাংশ।
ডিএসইতে গতকাল লেনদেন হওয়া ৩৯৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ১০২টির বা ২৫.৬২ শতাংশের, কমেছে ২৫৮টির বা ৬৪.৮২ শতাংশের ও দর পরিবর্তন হয়নি ৩৮টির বা ৯.৫৪ শতাংশের।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইতে মঙ্গলবার ৩১ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২২৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৫৮টির, কমেছে ১৫১টির এবং পরিবর্তন হয়নি ১৫টির।
মঙ্গলবার সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৯১ পয়েন্ট কমে দাঁডিয়েছে ১৬৫০১ পয়েন্টে।
ঢাকা/এসআর