১২:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪

পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা টাকা ফেরত হার্ডলাইনে সরকার

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০২:৫১:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ মার্চ ২০২২
  • / ১০২৩৭ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা টাকা গ্রাহকদের ফেরত দিতে যেসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ৩১ মার্চের মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বা ডিজিটাল কমার্স সেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইতিবাচক মনোভাব দেখাবে না তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সোমবার (২১ মার্চ) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শ্রেষ্ঠ ডটকম এবং আলিফ ওয়ার্ল্ডের পেমেন্ট গেটওয়েতে গ্রাহকদের আটকে থাকা টাকা ফেরত দেওয়া উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ ডটকমের ১১ জন গ্রাহকের ১৭ লাখ টাকা এবং আলিফ ওয়ার্ল্ডের ২১ জন গ্রাহকের ২৬ লাখ টাকা ফেরত দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে সফিকুজ্জামান বলেন, ই-কমার্স সেক্টরে যে ডিজাস্টার সেখানে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে এসবি, সিআইডি এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার অবজারভেশন আছে। সে কারণে আমরা আগেই বলেছিলাম, যেসব প্রতিষ্ঠান আবার বিজনেসে ফিরে আসতে চায়, তাদের মধ্যে যাদের টাকা পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে আছে, কিন্তু গ্রাহকদের এই টাকা দেওয়া যায়নি, প্রথম ফেজে এই টাকাগুলো ফেরত দেবো। তার ধারাবাহিকতায় বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকের টাকা আংশিক ফেরত দেওয়া গেছে। বাকিটা প্রক্রিয়াধীন। এরই মধ্যে আমরা ৮টি প্রতিষ্ঠানের টাকা ফেরত দিয়েছি। আজকে আরও দুটি প্রতিষ্ঠানকে এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আসলাম।

তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে আমরা একটা তালিকা তৈরি করেছি। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বিভিন্ন জায়গায় যে পোস্ট দেওয়া হচ্ছে সেখান থেকে আমরা একটা তালিকা করেছি, প্রায় ৩৯টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ আছে। সেই অভিযোগগুলো যাতে আমরা নিষ্পত্তি করতে পারি, সেজন্য আমরা একটা চেষ্টা করেছিলাম। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেকে মামলার মধ্যে আছেন, অনেকে লুকিয়ে আছেন, যারা সার্ভিসে আসতে চান না বিভিন্ন ভয়-ভীতির কারণে। তাদের আমরা আহ্বান করেছিলাম যে, ৩১ মার্চের মধ্যে আপনারা আসেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ডিজিটাল কমার্স সেল এবং ই-ক্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আমরা আপনাদের সাহায্য করতে চাই।

তিনি আরও বলেন, ৩৪-৩৫টির মতো প্রতিষ্ঠান আছে যারা হয়তো গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পারবে। তাদের হয়তো ২০ কোটি টাকার মতো পেন্ডিং আছে, তারা দুই কোটির মতো টাকা ফেরত দিতে পারবে। বাকি টাকা কীভাবে ফেরত দেবে? পরে হয় তো আরও একটা জটিলতায় পড়বে, এই একটা ভয় হয়তো কাজ করছে। কিন্তু বিষয়টা হলো তাকে গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতেই হবে। সে যদি কামব্যাক করতো, বিজনেসে ফিরে আসার জন্য যে সাপোর্টগুলো দরকার আমরা দিতাম।

অতিরিক্ত সচিব বলেন, ৩১ মার্চের মধ্যে যারা যোগাযোগ করে পজিটিভলি অংশগ্রহণ না করবে, তাদের খুঁজে বের করার জন্য পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সহ বিভিন্ন সংস্থার কাছে তালিকা দিয়ে দেব। তারা মানুষকে এখনো কোনো আশার বাণী শোনায়নি এবং তারা দেশে হয়তো লুকিয়ে আছে বা গা ঢাকা দিয়ে আছে।

তিনি বলেন, এপ্রিল মাসে আমরা টেকনিক্যাল কমিটির মিটিং করে কঠিন এক সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি। সেটা হচ্ছে- তাদের বিরুদ্ধে আইনগত যে ব্যবস্থা আছে তা আমাদের সংস্থাগুলো নেবে। কিন্তু যে টাকাগুলো আটকে আছে, পেমেন্ট গেটওয়েগুলোকে আমরা নির্দেশনা দিয়ে দেবে যেন আটকে থাকা টাকা সাত দিনের মধ্যে গ্রাহকদের কাছে চলে যায়। সে ক্ষেত্রে কোনো আপত্তি থাকবে না।

তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান পেমেন্ট গেটওয়ে অপারেটরের সঙ্গে যোগাযোগ করছে, কিন্তু তারা (পেমেন্ট গেটওয়ে অপারেটর) স্লো হয়ে যাচ্ছে। কী কারণে তারা স্লো হয়ে যাচ্ছে? তাদের তো স্লো যাওয়ার কথা না। এখানে কী হচ্ছে তা দেখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি চিঠি দিচ্ছি। আমার পে, সূর্য পে এবং বড় আরও একটি প্রতিষ্ঠান, তাদের বিষয়ে আমাদের দেখা দরকার। এই পেমেন্ট গেটওয়েগুলো যদি হাওয়া হয়ে যায় তাহলে তো আর কিছু থাকবে না। সে জন্য আমরা এ বিষয়ে সতর্ক আছি।

পেমেন্ট গেটওয়েতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের কত টাকা আটকে আছে- সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটার সঠিক তথ্য আমাদের কাছে নেই।

সরকার কিছু অসাধু প্রতিষ্ঠানের জন্য ই-কমার্স ব্যবসা বন্ধ করবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ই-কমার্স দেশের জন্যই চালিয়ে যাওয়া হবে। তবে এখন আর আগের মতো কেউ এই ব্যবসা নিয়ে যাতে প্রতারণা করতে না পারে সে ব্যাপারে নজরদারি রাখছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

ঢাকা/টিএ

শেয়ার করুন

x

পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা টাকা ফেরত হার্ডলাইনে সরকার

আপডেট: ০২:৫১:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ মার্চ ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা টাকা গ্রাহকদের ফেরত দিতে যেসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ৩১ মার্চের মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বা ডিজিটাল কমার্স সেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইতিবাচক মনোভাব দেখাবে না তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সোমবার (২১ মার্চ) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শ্রেষ্ঠ ডটকম এবং আলিফ ওয়ার্ল্ডের পেমেন্ট গেটওয়েতে গ্রাহকদের আটকে থাকা টাকা ফেরত দেওয়া উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ ডটকমের ১১ জন গ্রাহকের ১৭ লাখ টাকা এবং আলিফ ওয়ার্ল্ডের ২১ জন গ্রাহকের ২৬ লাখ টাকা ফেরত দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে সফিকুজ্জামান বলেন, ই-কমার্স সেক্টরে যে ডিজাস্টার সেখানে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে এসবি, সিআইডি এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার অবজারভেশন আছে। সে কারণে আমরা আগেই বলেছিলাম, যেসব প্রতিষ্ঠান আবার বিজনেসে ফিরে আসতে চায়, তাদের মধ্যে যাদের টাকা পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে আছে, কিন্তু গ্রাহকদের এই টাকা দেওয়া যায়নি, প্রথম ফেজে এই টাকাগুলো ফেরত দেবো। তার ধারাবাহিকতায় বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকের টাকা আংশিক ফেরত দেওয়া গেছে। বাকিটা প্রক্রিয়াধীন। এরই মধ্যে আমরা ৮টি প্রতিষ্ঠানের টাকা ফেরত দিয়েছি। আজকে আরও দুটি প্রতিষ্ঠানকে এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আসলাম।

তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে আমরা একটা তালিকা তৈরি করেছি। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বিভিন্ন জায়গায় যে পোস্ট দেওয়া হচ্ছে সেখান থেকে আমরা একটা তালিকা করেছি, প্রায় ৩৯টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ আছে। সেই অভিযোগগুলো যাতে আমরা নিষ্পত্তি করতে পারি, সেজন্য আমরা একটা চেষ্টা করেছিলাম। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেকে মামলার মধ্যে আছেন, অনেকে লুকিয়ে আছেন, যারা সার্ভিসে আসতে চান না বিভিন্ন ভয়-ভীতির কারণে। তাদের আমরা আহ্বান করেছিলাম যে, ৩১ মার্চের মধ্যে আপনারা আসেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ডিজিটাল কমার্স সেল এবং ই-ক্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আমরা আপনাদের সাহায্য করতে চাই।

তিনি আরও বলেন, ৩৪-৩৫টির মতো প্রতিষ্ঠান আছে যারা হয়তো গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পারবে। তাদের হয়তো ২০ কোটি টাকার মতো পেন্ডিং আছে, তারা দুই কোটির মতো টাকা ফেরত দিতে পারবে। বাকি টাকা কীভাবে ফেরত দেবে? পরে হয় তো আরও একটা জটিলতায় পড়বে, এই একটা ভয় হয়তো কাজ করছে। কিন্তু বিষয়টা হলো তাকে গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতেই হবে। সে যদি কামব্যাক করতো, বিজনেসে ফিরে আসার জন্য যে সাপোর্টগুলো দরকার আমরা দিতাম।

অতিরিক্ত সচিব বলেন, ৩১ মার্চের মধ্যে যারা যোগাযোগ করে পজিটিভলি অংশগ্রহণ না করবে, তাদের খুঁজে বের করার জন্য পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সহ বিভিন্ন সংস্থার কাছে তালিকা দিয়ে দেব। তারা মানুষকে এখনো কোনো আশার বাণী শোনায়নি এবং তারা দেশে হয়তো লুকিয়ে আছে বা গা ঢাকা দিয়ে আছে।

তিনি বলেন, এপ্রিল মাসে আমরা টেকনিক্যাল কমিটির মিটিং করে কঠিন এক সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি। সেটা হচ্ছে- তাদের বিরুদ্ধে আইনগত যে ব্যবস্থা আছে তা আমাদের সংস্থাগুলো নেবে। কিন্তু যে টাকাগুলো আটকে আছে, পেমেন্ট গেটওয়েগুলোকে আমরা নির্দেশনা দিয়ে দেবে যেন আটকে থাকা টাকা সাত দিনের মধ্যে গ্রাহকদের কাছে চলে যায়। সে ক্ষেত্রে কোনো আপত্তি থাকবে না।

তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান পেমেন্ট গেটওয়ে অপারেটরের সঙ্গে যোগাযোগ করছে, কিন্তু তারা (পেমেন্ট গেটওয়ে অপারেটর) স্লো হয়ে যাচ্ছে। কী কারণে তারা স্লো হয়ে যাচ্ছে? তাদের তো স্লো যাওয়ার কথা না। এখানে কী হচ্ছে তা দেখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি চিঠি দিচ্ছি। আমার পে, সূর্য পে এবং বড় আরও একটি প্রতিষ্ঠান, তাদের বিষয়ে আমাদের দেখা দরকার। এই পেমেন্ট গেটওয়েগুলো যদি হাওয়া হয়ে যায় তাহলে তো আর কিছু থাকবে না। সে জন্য আমরা এ বিষয়ে সতর্ক আছি।

পেমেন্ট গেটওয়েতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের কত টাকা আটকে আছে- সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটার সঠিক তথ্য আমাদের কাছে নেই।

সরকার কিছু অসাধু প্রতিষ্ঠানের জন্য ই-কমার্স ব্যবসা বন্ধ করবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ই-কমার্স দেশের জন্যই চালিয়ে যাওয়া হবে। তবে এখন আর আগের মতো কেউ এই ব্যবসা নিয়ে যাতে প্রতারণা করতে না পারে সে ব্যাপারে নজরদারি রাখছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

ঢাকা/টিএ