১০:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

‘প্রকৃতি ধ্বংস করে উন্নয়ন টেকসই হবে না’

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৭:১৭:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
  • / ১০৩২৬ বার দেখা হয়েছে

পানি সম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, প্রকৃতিকে ধ্বংস করে উন্নয়ন হলে সে উন্নয়ন টেকসই হবে না ।আমরা যদি প্রকৃতিকে ধ্বংস করে, বন কেটে, পাহাড় কেটে রেললাইন নির্মাণকে উন্নয়ন ভাবি, তাহলে আমরা ভুল পথে চলছি। এ ভুল পথ থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

আজ বুধবার (১৪ মে) ঢাকায় শেরে বাংলা নগরে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)’র সম্মেলন কক্ষে  ‘আবহাওয়া অর্থায়নের জন্য আর্থিক বিশ্লেষণ এবং বিনিয়োগ যন্ত্রের পরিচিতি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, উন্নয়ন বরাদ্দ সহযোগিতা যতই আসুক, তা যথেষ্ট হবে না যদি আমরা প্রকৃতিকে সংরক্ষণ না করি, যদি আমরা অভিযোজন এবং প্রশমন উভয় ক্ষেত্রেই পর্যাপ্ত বিনিয়োগ না করি।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত জাতিসংঘ চুক্তি এবং প্যারিস চুক্তির অধীনে যে-সব দেশে আমাদের অর্থ দেওয়ার কথা, তারা এখন প্রকৃতিনির্ভর সমাধানের কথা বলছে অথচ প্রকৃত অর্থ বরাদ্দ করছে না। তারা বলছে, তোমরা নিজেদের প্রস্তুত করো, প্রকৃতি রক্ষা করো, যাতে দুর্যোগে টিকে থাকতে পারো। কিন্তু তারা নিজেদের দায় কমিয়ে আমাদের ওপর দায় চাপাচ্ছে। এটি কোনো গ্রহণযোগ্য সমাধান নয়। প্রকৃতি ও বন রক্ষার ক্ষেত্রে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা পুনর্বিবেচনা করতে হবে।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, একটা সুবিধার বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশ সরকার ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ’ নামে একটি প্লাটফর্ম তৈরি করেছে, যেখানে সিডা, এডিবি এবং অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীরা সহায়তা করছে। আমরা চাই, এই প্রক্রিয়াটি ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকরভাবে শুরু হোক। তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করেছি এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে বসতে যাচ্ছি।

উপদেষ্টা আরও বলেন, আজকের বাস্তবতায়, অভিযোজনের জন্য অর্থায়ন না পেলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর পক্ষে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। অথচ, অভিযোজন ও প্রশমনের জন্য বরাদ্দের যে গ্লোবাল সমতা, তার কাছেও আমরা পৌঁছাতে পারিনি। বেশিরভাগ অর্থই যাচ্ছে প্রশমনে, যা উন্নত দেশগুলোর দায়িত্ব। ফলে আমরা একদিকে এমন সমস্যার ভুক্তভোগী, যা আমরা তৈরি করিনি, অন্যদিকে সমস্যার সমাধানের জন্য আমাদের ঋণ নিতে হচ্ছে। তাই জলবায়ু অর্থায়নের রাজনীতি এবং ন্যায়বিচারের রাজনীতি গভীরভাবে বোঝা দরকার। আমাদের পরিকল্পনা আরও স্মার্ট, স্বচ্ছ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং ন্যায়সংগত হতে হবে। এখানে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অনেক কিছু হয়েছে, আরও অনেক কিছু হওয়া দরকার। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে যা হচ্ছে তা যথেষ্ট নয়, এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থাও যথেষ্ট নয়।

আরও পড়ুন: নার্সিং ডিপ্লোমাকে ডিগ্রির সমমান করার দাবিতে শাহবাগ অবরোধ

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য রাখেন। ইআরডির অতিরিক্ত সচিব একেএম সোহেল অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণের ওপর ধারনাপত্র উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে এডিবি, সিডা, জিআইজেডসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার এদেশীয় প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

ঢাকা/টিএ

শেয়ার করুন

‘প্রকৃতি ধ্বংস করে উন্নয়ন টেকসই হবে না’

আপডেট: ০৭:১৭:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

পানি সম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, প্রকৃতিকে ধ্বংস করে উন্নয়ন হলে সে উন্নয়ন টেকসই হবে না ।আমরা যদি প্রকৃতিকে ধ্বংস করে, বন কেটে, পাহাড় কেটে রেললাইন নির্মাণকে উন্নয়ন ভাবি, তাহলে আমরা ভুল পথে চলছি। এ ভুল পথ থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

আজ বুধবার (১৪ মে) ঢাকায় শেরে বাংলা নগরে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)’র সম্মেলন কক্ষে  ‘আবহাওয়া অর্থায়নের জন্য আর্থিক বিশ্লেষণ এবং বিনিয়োগ যন্ত্রের পরিচিতি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, উন্নয়ন বরাদ্দ সহযোগিতা যতই আসুক, তা যথেষ্ট হবে না যদি আমরা প্রকৃতিকে সংরক্ষণ না করি, যদি আমরা অভিযোজন এবং প্রশমন উভয় ক্ষেত্রেই পর্যাপ্ত বিনিয়োগ না করি।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত জাতিসংঘ চুক্তি এবং প্যারিস চুক্তির অধীনে যে-সব দেশে আমাদের অর্থ দেওয়ার কথা, তারা এখন প্রকৃতিনির্ভর সমাধানের কথা বলছে অথচ প্রকৃত অর্থ বরাদ্দ করছে না। তারা বলছে, তোমরা নিজেদের প্রস্তুত করো, প্রকৃতি রক্ষা করো, যাতে দুর্যোগে টিকে থাকতে পারো। কিন্তু তারা নিজেদের দায় কমিয়ে আমাদের ওপর দায় চাপাচ্ছে। এটি কোনো গ্রহণযোগ্য সমাধান নয়। প্রকৃতি ও বন রক্ষার ক্ষেত্রে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা পুনর্বিবেচনা করতে হবে।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, একটা সুবিধার বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশ সরকার ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ’ নামে একটি প্লাটফর্ম তৈরি করেছে, যেখানে সিডা, এডিবি এবং অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীরা সহায়তা করছে। আমরা চাই, এই প্রক্রিয়াটি ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকরভাবে শুরু হোক। তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করেছি এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে বসতে যাচ্ছি।

উপদেষ্টা আরও বলেন, আজকের বাস্তবতায়, অভিযোজনের জন্য অর্থায়ন না পেলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর পক্ষে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। অথচ, অভিযোজন ও প্রশমনের জন্য বরাদ্দের যে গ্লোবাল সমতা, তার কাছেও আমরা পৌঁছাতে পারিনি। বেশিরভাগ অর্থই যাচ্ছে প্রশমনে, যা উন্নত দেশগুলোর দায়িত্ব। ফলে আমরা একদিকে এমন সমস্যার ভুক্তভোগী, যা আমরা তৈরি করিনি, অন্যদিকে সমস্যার সমাধানের জন্য আমাদের ঋণ নিতে হচ্ছে। তাই জলবায়ু অর্থায়নের রাজনীতি এবং ন্যায়বিচারের রাজনীতি গভীরভাবে বোঝা দরকার। আমাদের পরিকল্পনা আরও স্মার্ট, স্বচ্ছ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং ন্যায়সংগত হতে হবে। এখানে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অনেক কিছু হয়েছে, আরও অনেক কিছু হওয়া দরকার। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে যা হচ্ছে তা যথেষ্ট নয়, এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থাও যথেষ্ট নয়।

আরও পড়ুন: নার্সিং ডিপ্লোমাকে ডিগ্রির সমমান করার দাবিতে শাহবাগ অবরোধ

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য রাখেন। ইআরডির অতিরিক্ত সচিব একেএম সোহেল অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণের ওপর ধারনাপত্র উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে এডিবি, সিডা, জিআইজেডসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার এদেশীয় প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

ঢাকা/টিএ