০৩:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রভিশনে ঘাটতি ১১ হাজার কোটি টাকা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৬:৪০:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ১০৪৩৩ বার দেখা হয়েছে

সমাপ্ত ২০২২ অর্থবছরে দেশের ব্যাংক খাত ৭৩ হাজার ১৪৮ কোটি টাকার নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) রাখতে সক্ষম হয়েছে। এই বছরটিতে প্রভিশন সংরক্ষণের কথা ছিলো ৮৪ হাজার ১৫৭ কোটি টাকা। এতে ১১ হাজার ৯ কোটি টাকার ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশের ব্যাংক খাতে প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঘাটতি ৮ হাজার ৮২৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট প্রভিশন ঘাটতি ৮০ শতাংশই রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর। আর বাকি ২ হাজার ৭৪৬ কোটি টাকা ঘাটতি বেসরকারি ব্যাংকগুলোর।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সরকারি-বেসরকারিসহ সব ধরনের ব্যাংক যেসব ঋণ বিতরণ করে, তার গুণমান বিবেচনায় নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) হিসেবে জমা রাখতে হয়। কোনো ঋণ শেষ পর্যন্ত মন্দঋণে (খেলাপি) পরিণত হলে তাতে ব্যাংক যেন আর্থিকভাবে ঝুঁকিতে না পড়ে, সেজন্য প্রভিশন রাখার বিধান রয়েছে।

প্রভিশন ঘাটতিতে থাকা ব্যাংক লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারে না। প্রয়োজনীয় প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ হলে ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে পড়ার শঙ্কা থাকে। এর ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে ব্যাংকের ওপর। একইসঙ্গে আমানতও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

উল্লেখ্য, বিদায়ী ২০২২ সালের জুন প্রান্তিক শেষে ব্যাংক খাতের ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিলো ১৩ লাখ ৯৮ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা। তখন খেলাপি ঋণ ছিলো ১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা। আলোচিত এই সময়ের তিন মাস আগে মার্চ শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। এরআগে ২০২১ সালের জুন প্রান্তিক শেষে খেলাপি ছিল ৯৯ হাজার ২০৫ কোটি টাকা।

এরপরে ডিসেম্বর শেষে দেশের ব্যাংক খাতের মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৭৭ হাজার ৭৭৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। মোট ঋণের ৮ দশমিক ১৬ শতাংশই খেলাপি। একবছর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিলো ১ লাখ ৩ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা। সেই সময়ে খেলাপির পরিমাণ ছিলো মোট ঋণের ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ।

আরও পড়ুন: তিন মাসে খেলাপি ঋণ কমেছে ১৪ হাজার কোটি টাকা

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর প্রান্তিক থেকে ডিসেম্বর প্রান্তিকে দেশে ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ৪১ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। আর খেলাপি ঋণ কমেছে ১৩ হাজার ৭৩৯ কোটি টাকা। আলোচিত সময়ে প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) ঘাটতি কমেছে ২ হাজার ৫২০ কোটি টাকা। এছাড়া খেলাপি ঋণের মধ্যে মন্দ ঋণের পরিমাণ ৮৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ। টাকার অঙ্গে যার পরিমাণ ১ লাখ ৬ হাজার ৯৮২ কোটি টাকা।

এছাড়া দেশের ব্যাংক খাতের মোট খেলাপি ঋণের ৪৬ দশমিক ৭৯ শতাংশই সরকারি মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর। ব্যাংকগুলোর খেলাপির পরিমাণ ৫৬ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা, যা ওই কয়েকটি ব্যাংকের মোট ঋণের ২০ দশমিক ২৮ শতাংশ।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

error: Content is protected ! Please Don't Try!

প্রভিশনে ঘাটতি ১১ হাজার কোটি টাকা

আপডেট: ০৬:৪০:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

সমাপ্ত ২০২২ অর্থবছরে দেশের ব্যাংক খাত ৭৩ হাজার ১৪৮ কোটি টাকার নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) রাখতে সক্ষম হয়েছে। এই বছরটিতে প্রভিশন সংরক্ষণের কথা ছিলো ৮৪ হাজার ১৫৭ কোটি টাকা। এতে ১১ হাজার ৯ কোটি টাকার ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশের ব্যাংক খাতে প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঘাটতি ৮ হাজার ৮২৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট প্রভিশন ঘাটতি ৮০ শতাংশই রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর। আর বাকি ২ হাজার ৭৪৬ কোটি টাকা ঘাটতি বেসরকারি ব্যাংকগুলোর।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সরকারি-বেসরকারিসহ সব ধরনের ব্যাংক যেসব ঋণ বিতরণ করে, তার গুণমান বিবেচনায় নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) হিসেবে জমা রাখতে হয়। কোনো ঋণ শেষ পর্যন্ত মন্দঋণে (খেলাপি) পরিণত হলে তাতে ব্যাংক যেন আর্থিকভাবে ঝুঁকিতে না পড়ে, সেজন্য প্রভিশন রাখার বিধান রয়েছে।

প্রভিশন ঘাটতিতে থাকা ব্যাংক লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারে না। প্রয়োজনীয় প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ হলে ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে পড়ার শঙ্কা থাকে। এর ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে ব্যাংকের ওপর। একইসঙ্গে আমানতও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

উল্লেখ্য, বিদায়ী ২০২২ সালের জুন প্রান্তিক শেষে ব্যাংক খাতের ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিলো ১৩ লাখ ৯৮ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা। তখন খেলাপি ঋণ ছিলো ১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা। আলোচিত এই সময়ের তিন মাস আগে মার্চ শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। এরআগে ২০২১ সালের জুন প্রান্তিক শেষে খেলাপি ছিল ৯৯ হাজার ২০৫ কোটি টাকা।

এরপরে ডিসেম্বর শেষে দেশের ব্যাংক খাতের মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৭৭ হাজার ৭৭৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। মোট ঋণের ৮ দশমিক ১৬ শতাংশই খেলাপি। একবছর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিলো ১ লাখ ৩ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা। সেই সময়ে খেলাপির পরিমাণ ছিলো মোট ঋণের ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ।

আরও পড়ুন: তিন মাসে খেলাপি ঋণ কমেছে ১৪ হাজার কোটি টাকা

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর প্রান্তিক থেকে ডিসেম্বর প্রান্তিকে দেশে ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ৪১ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। আর খেলাপি ঋণ কমেছে ১৩ হাজার ৭৩৯ কোটি টাকা। আলোচিত সময়ে প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) ঘাটতি কমেছে ২ হাজার ৫২০ কোটি টাকা। এছাড়া খেলাপি ঋণের মধ্যে মন্দ ঋণের পরিমাণ ৮৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ। টাকার অঙ্গে যার পরিমাণ ১ লাখ ৬ হাজার ৯৮২ কোটি টাকা।

এছাড়া দেশের ব্যাংক খাতের মোট খেলাপি ঋণের ৪৬ দশমিক ৭৯ শতাংশই সরকারি মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর। ব্যাংকগুলোর খেলাপির পরিমাণ ৫৬ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা, যা ওই কয়েকটি ব্যাংকের মোট ঋণের ২০ দশমিক ২৮ শতাংশ।

ঢাকা/এসএ