ফার কেমিক্যাল ও এসএফ টেক্সটাইলের মার্জার বন্ধে বিনিয়োগকারীদের চিঠি
- আপডেট: ০৪:৩৬:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ এপ্রিল ২০২২
- / ১০৩২২ বার দেখা হয়েছে
বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: বিনিয়োগকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ ওষুধ ও রসায়ন খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ফার কেমিক্যালের সঙ্গে এসএফ টেক্সটাইলের একত্রীকরণ প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি জানিয়েছে। সংগঠনটি মনে করে, ফার কেমিক্যাল এস এফ টেক্সটাইলের সঙ্গে একত্রীত হয়ে শেয়ার সংখ্যা বাড়াবে। একইসঙ্গে ভুয়া ইপিএস দেখিয়ে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে কারসাজি ও দুর্নীতির মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে টাকা লুণ্ঠন করবে। ফলে আবারও পথে বসাবে বিনিয়োগকারীরা।
সোমবার (৪ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে এ দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাক।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
একইসঙ্গে বিষয়টি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দাকে (এনএসআই) অবহিত করা হয়েছে।
ফার কেমিক্যালের সঙ্গে এস এফ টেক্সটাইলের একত্রীকরণ প্রক্রিয়া বন্ধের বিষয়ে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ফার কেমিক্যাল ২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ২১৮ কোটি ৯ লাখ ৩০ হাজার। সে হিসাবে শেয়ার সংখ্যা ২১ কোটি ৮০ লাখ ৯৩ হাজার ৪২৩টি। কোম্পানিটি তালিকাভুক্তির পর থেকে ২০১৪ সালে ২০ শতাংশ স্টক, ২০১৫ সালে ২৫ শতাংশ স্টক, ২০১৬ সালে ২০ শতাংশ স্টক ও ৫ শতাংশ ক্যাশ, ২০১৭ সালে ১০ শতাংশ স্টক, ২০১৮ সালে ১০ শতাংশ স্টক, ২০১৯ সালে ১০ শতাংশ স্টক, ২০২০ সালে ১ শতাংশ ক্যাশ এবং সর্বশেষ ২০২১ সালে ১ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেট ঘোষণা করে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে চরমভাবে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে।
২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ৯০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ট দিয়েছে তাতে কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা বেড়ে প্রায় ২২ কোটি কাছাকাছি পৌঁছেছে। কোম্পানিটি আইপিও’র মাধ্যমে তালিকাভুক্ত হওয়ার সময় ১ কোটি ২০ লাখ শেয়ার ছেড়ে ১২ কোটি উত্তোলন করেছিল। তখন ২০১৪ সালে ইপিএস ছিল ৫.০১ টাকা এবং এনএভি ছিল ১৫.৫৫ টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ছিল আইপিও টাকাসহ ৯ কোটি ১০ লাখ ৩১ হাজার। ২০১৪ সালে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ইপিএস বেশি দেখিয়ে কারসাজি চক্রের সঙ্গে আঁতাত করে শেয়ার দর বৃদ্ধি করেছে। আর আইপিওতে আসার বছর অর্থাৎ ২০১৪ সাল থেকে ২০১৭ সাল কয়েক দফায় কোম্পানির পরিচালকরা শেয়ার বিক্রি করে প্রায় ৮১ কোটি টাকা লুটপাট করে সরিয়ে নিয়েছে। যে কোম্পানিটি ২০১৪ সালে আইপিওতে আসার সময় ইপিএস থাকে ৫.০১ টাকা, সেই কোম্পানি ২০২১ সালে ইপিএস দেখানো হয় ঋণাত্মক ০.১৬ টাকা এবং এনএভি ১৫.৫৫ টাকা থেকে কমে ১৩.৭১ টাকায় দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে শেয়ারের বাজার দর মাত্র ১২ টাকা।
চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, কোম্পানিটি আইপিওতে আসার পূর্বে প্লেসমেন্ট শেয়ার বিক্রি করে প্রায় ৬০ কোটি লুটপাট করেছিল এবং ২০১৪ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত পরিচালকরা হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ৮১ কোটি টাকা। আইপিওর মাধ্যমে মাত্র ১২ কোটি টাকা সংগ্রহ করা কোম্পানিটি মোট ১৪১ টাকা পুঁজিবাজার থেকে লুটপাট করে সরিয়ে নিয়েছে। আমরা সন্ধিহান যে, ফার কেমিক্যাল কোম্পানিটি এস এফ টেক্সটাইলের সঙ্গে একত্রীত হয়ে শেয়ার সংখ্যা বাড়িয়ে আবার ভুয়া ইপিএস দেখিয়ে শেয়ারের দাম বৃদ্ধি করে কারসাজি ও দুর্নীতির মাধ্যমে আরেক দফা পুঁজিবাজার থেকে টাকা লুণ্ঠন করবে। ফলে বিনিয়োগকারীদের পথে বসাবে। তাই পুঁজিবাজারের দুর্নীতি, অনিয়ম ও লুণ্ঠন বন্ধ করতে ফার কেমিক্যাল কোম্পানির সঙ্গে এস এফ টেক্সটাইলের একত্রীকরণ বন্ধের জোর দাবি জানানো হচ্ছে।
ঢাকা/এসআর