ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার কথা ভাবছে না বিএসইসি

- আপডেট: ০৭:৪৯:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
- / ১০৪৫৬ বার দেখা হয়েছে
বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: অস্থির পুঁজিবাজারে স্বস্থি ফিরাতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) গত ২৮ জুলাই ফ্লোর প্রাইস বা দর পতনের সর্বনিম্ন সীমা বেঁধে দিয়েছিলো। কিন্তু হঠাৎ করেই ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দেওয়ার গুজবে মার্কেট অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। কিন্তু এ গুজব সত্যি নয় বরং অনির্দিষ্টকালের জন্য ফ্লোর প্রাইস অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়েত উল ইসলাম।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, কমিশন ফ্লোর প্রাইস উঠানোর ব্যাপারে কোন আলোচনা বা চিন্তা কিছুই করেনি। এছাড়া ফ্লোর প্রাইস উঠানোর ব্যাপারে সামনে কোন পরিকল্পনাও নেই। যারাই এ ব্যাপারে কথা বলে তারা শুধুই গুজব ছড়াচ্ছে। আমি বিনিয়োগকারীদের বলবো, যতক্ষণ কমিশনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত না আসে ততক্ষণ কোন সোর্সকে যেন বিশ্বাস না করে। ফ্লোর প্রাইস চলবে অনির্দিষ্টকাল।
বিএসইসি কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে একটি গোষ্ঠি ফ্লোর প্রাইস নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে। কমিশন ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার কথা ভাবছে না। অদূর ভবিষ্যতে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার পরিকল্পনাও কমিশনের নেই। ফলে শেয়ার লেনদেনের ক্ষেত্রে ‘ফ্লোর প্রাইস’ পদ্ধতি অনির্দিষ্টকালের জন্য অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, ‘আমি বিনিয়োগকারীদের পরামর্শ দেব, ফ্লোর প্রাইস উঠে যাওয়ার কোনো খবর যেন তারা বিশ্বাস না করে, যতক্ষণ না কমিশন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়।’
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, গুজব রটনাকারীদের ব্যাপারে অবশ্য কমিশন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। তিনি আরো বলেন, ‘যারা পুঁজিবাজার নিয়ে গুজব ছড়ায়, কমিশন তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছে। যারা গুজব ছড়াবে তাদের চিহ্নিত করে দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
উল্লেখ্য, গত পহেলা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাজার ঠিক ছিল। এ দিন ডিএসইএক্স সূচক ৫১ পয়েন্ট বাড়ে। আর অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৫০৮ পয়েন্টে। এর পরেই মার্কেটে গুজব ওঠে যে ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দেওয়া হবে কিন্তু যা সত্যি নয় বরং অনির্দিষ্টকালের জন্য ফ্লোর প্রাইস অব্যাহত থাকবে বলে আমরা বিএসইসি থেকে ৩ সেপ্টেম্বর থেকেই শুনে আসছি।
এক শ্রেণির অসাধু বিনিয়োগকারী গুজব ছড়িয়ে বর্তমান মার্কেটকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। ফলে বাজারে আবার পতন শুরু হয়েছে। গত দুই কার্যদিবস রোববার ও সোমবার যথাক্রমে ১৮ ও ৫৮ পয়েন্ট মূল্য সূচকের পতন হয়। রোববার ১৮ পয়েন্ট পড়লেও বিক্রয়চাপ ছিল অনেক। এদিন ১ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। যা গত ১১ মাসের সর্বোচ্চ লেনদেন।
প্রসঙ্গত, ধারাবাহিক পতন রোধে গত ২৮ জুলাই বিএসইসির চেয়ারম্যান ফ্লোর প্রাইস বা দর পতনের সর্বনিম্ন সীমার আদেশ জারি করে। যা ৩১ জুলাই থেকে কার্যকর হয়। ধারাবাহিক পতনে দিশেহারা বিনিয়োগকারীরা ফ্লোর প্রাইস চালু করায় আস্থা ফিরে পায়। যার সুফলও বিনিয়োগকারীরা পাচ্ছিল। ফ্লোর প্রাইস চালুর পূর্বে সূচক ৬০০০ হাজারের নিচেও নেমে আসে। ২৮ জুলাই প্রধান মূল্য সূচক ৫৯৮০ পয়েন্টে নেমে আসার পর ফ্লোর প্রাইস চালু করে বিএসইসি।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ৪৭৬৮ পয়েন্টে অবস্থান করছিল। যা করোনার কারণে ৮ মার্চ কমে দাড়াঁয় ৪২৮৭ পয়েন্ট। আর ওইদিন দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পরে ৯ মার্চ একদিনেই ২৭৯ পয়েন্ট কমে যায়। যা ১৮ মার্চ করোনাভাইরাসে বাংলাদেশে ১ম রোগী মারা যাওয়ার দিন নেমে যায় ৩৬০৪ পয়েন্টে। আতঙ্কিত পুঁজিবাজারের এমন পতন ঠেকাতে ১৯ মার্চ চালু করা হয় ফ্লোর প্রাইস।
আরো পড়ুন: বিএসসিসিএলের নতুন এমডি আজম আলী
ঢাকা/এসএ