০৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাজেট প্রতিক্রিয়ায় একাধিক প্রস্তাবনা ও উদ্বেগ প্রকাশ ঢাকা চেম্বারের

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৮:১০:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫
  • / ১০৩২০ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

বৈষম্যহীন ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ার প্রত্যয় নিয়ে ঘোষিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের প্রাথমিক বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। আজ সোমবার (২ জুন) এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বাজেটের বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে একাধিক প্রস্তাবনা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

ডিসিসিআই বলছে, ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানালেও বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনও দৃশ্যমান উদ্যোগ দেখা যায়নি-তারা বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংকনির্ভরতা বৃদ্ধিকে নেতিবাচক বলে মন্তব্য করেছে এবং করজাল সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজস্ব বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছে।

ব্যক্তিশ্রেণির আয়কর নিয়ে হতাশা

সংগঠনটি বলছে, মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক সংকট বিবেচনায় করমুক্ত আয়ের সীমা অপরিবর্তিত রাখা হতাশাজনক। তারা করমুক্ত সীমা ৫ লাখ টাকা করার দাবি জানিয়েছে। এছাড়া আয়কর স্ল্যাবে পরিবর্তনের ফলে মধ্যবিত্ত ও চাকরিজীবীদের করের বোঝা বাড়বে বলে মন্তব্য করেছে। টার্নওভার কর ০.২৫ শতাংশ থেকে ১ শতাংশ করায় ব্যক্তিশ্রেণির করভার বাড়বে বলেও ডিসিসিআই উদ্বেগ জানিয়েছে।

করপোরেট কর ও টার্নওভার কর

অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করাকে ‘ঐতিহাসিক উদ্যোগ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে ঢাকা চেম্বার। তবে টার্নওভার কর ০.৬ শতাংশ থেকে ১ শতাংশ করার প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

মূসক ও ভ্যাট

প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক্স, মোবাইল ফোন ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যে মূসক বৃদ্ধির ফলে স্থানীয় শিল্প ঝুঁকির মধ্যে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ডিসিসিআই। এসব প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।

আরও পড়ুন: ঋণের বোঝা কমাতে সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্য কমালো সরকার

অগ্রিম কর ও উৎসে কর

শিল্প খাতে ব্যবহৃত কাঁচামালে আগাম কর কমিয়ে ৩ শতাংশ থেকে ২ শতাংশ করাকে স্বাগত জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার। পাশাপাশি ন্যূনতম কর ভবিষ্যতে সমন্বয়ের সুযোগকে ব্যবসাবান্ধব হিসেবে বিবেচনা করেছে। তবে করমুক্ত প্রায় ১৫২টি পণ্যের ওপর আমদানি পর্যায়ে ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর আরোপকে অযৌক্তিক বলেছে সংগঠনটি।

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি

২০২৫-২৬ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা হলেও বাস্তবায়ন হার (৪১.৩১ শতাংশ) অতীতের তুলনায় কম, যা উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছে ডিসিসিআই। তারা পরিচালন ব্যয় কমিয়ে উন্নয়ন ব্যয় বাড়ানোর সুপারিশ করেছে।

শুল্ক-কর কাঠামো ও রফতানি

বাজেটে শুল্ক ব্যবস্থাকে যৌক্তিক করতে নেওয়া পদক্ষেপগুলোকে স্বাগত জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার। তবে টেক্সটাইল মিলের পণ্যে সুনির্দিষ্ট কর বৃদ্ধি স্থানীয় শিল্পের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে বলে জানিয়েছে তারা। পাশাপাশি বন্ড ব্যবস্থার সহজীকরণ ও ‘সেন্ট্রাল বন্ডেড ওয়্যারহাউজ’ ব্যবস্থা প্রবর্তনকে রফতানিকারকদের জন্য সময় ও খরচ কমানোর উপায় হিসেবে দেখছে তারা।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২২ হাজার ৫২০ কোটি টাকার বরাদ্দকে অপর্যাপ্ত বলেছে ডিসিসিআই। তারা স্থানীয় পর্যায়ে প্রাথমিক জ্বালানি সরবরাহে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এলএনজি আমদানিতে ভ্যাট অব্যাহতিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে ব্যবসায়ীদের সংগঠন ঢাকা চেম্বার।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

error: Content is protected ! Please Don't Try!

বাজেট প্রতিক্রিয়ায় একাধিক প্রস্তাবনা ও উদ্বেগ প্রকাশ ঢাকা চেম্বারের

আপডেট: ০৮:১০:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫

বৈষম্যহীন ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ার প্রত্যয় নিয়ে ঘোষিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের প্রাথমিক বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। আজ সোমবার (২ জুন) এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বাজেটের বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে একাধিক প্রস্তাবনা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

ডিসিসিআই বলছে, ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানালেও বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনও দৃশ্যমান উদ্যোগ দেখা যায়নি-তারা বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংকনির্ভরতা বৃদ্ধিকে নেতিবাচক বলে মন্তব্য করেছে এবং করজাল সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজস্ব বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছে।

ব্যক্তিশ্রেণির আয়কর নিয়ে হতাশা

সংগঠনটি বলছে, মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক সংকট বিবেচনায় করমুক্ত আয়ের সীমা অপরিবর্তিত রাখা হতাশাজনক। তারা করমুক্ত সীমা ৫ লাখ টাকা করার দাবি জানিয়েছে। এছাড়া আয়কর স্ল্যাবে পরিবর্তনের ফলে মধ্যবিত্ত ও চাকরিজীবীদের করের বোঝা বাড়বে বলে মন্তব্য করেছে। টার্নওভার কর ০.২৫ শতাংশ থেকে ১ শতাংশ করায় ব্যক্তিশ্রেণির করভার বাড়বে বলেও ডিসিসিআই উদ্বেগ জানিয়েছে।

করপোরেট কর ও টার্নওভার কর

অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করাকে ‘ঐতিহাসিক উদ্যোগ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে ঢাকা চেম্বার। তবে টার্নওভার কর ০.৬ শতাংশ থেকে ১ শতাংশ করার প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

মূসক ও ভ্যাট

প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক্স, মোবাইল ফোন ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যে মূসক বৃদ্ধির ফলে স্থানীয় শিল্প ঝুঁকির মধ্যে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ডিসিসিআই। এসব প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।

আরও পড়ুন: ঋণের বোঝা কমাতে সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্য কমালো সরকার

অগ্রিম কর ও উৎসে কর

শিল্প খাতে ব্যবহৃত কাঁচামালে আগাম কর কমিয়ে ৩ শতাংশ থেকে ২ শতাংশ করাকে স্বাগত জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার। পাশাপাশি ন্যূনতম কর ভবিষ্যতে সমন্বয়ের সুযোগকে ব্যবসাবান্ধব হিসেবে বিবেচনা করেছে। তবে করমুক্ত প্রায় ১৫২টি পণ্যের ওপর আমদানি পর্যায়ে ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর আরোপকে অযৌক্তিক বলেছে সংগঠনটি।

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি

২০২৫-২৬ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা হলেও বাস্তবায়ন হার (৪১.৩১ শতাংশ) অতীতের তুলনায় কম, যা উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছে ডিসিসিআই। তারা পরিচালন ব্যয় কমিয়ে উন্নয়ন ব্যয় বাড়ানোর সুপারিশ করেছে।

শুল্ক-কর কাঠামো ও রফতানি

বাজেটে শুল্ক ব্যবস্থাকে যৌক্তিক করতে নেওয়া পদক্ষেপগুলোকে স্বাগত জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার। তবে টেক্সটাইল মিলের পণ্যে সুনির্দিষ্ট কর বৃদ্ধি স্থানীয় শিল্পের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে বলে জানিয়েছে তারা। পাশাপাশি বন্ড ব্যবস্থার সহজীকরণ ও ‘সেন্ট্রাল বন্ডেড ওয়্যারহাউজ’ ব্যবস্থা প্রবর্তনকে রফতানিকারকদের জন্য সময় ও খরচ কমানোর উপায় হিসেবে দেখছে তারা।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২২ হাজার ৫২০ কোটি টাকার বরাদ্দকে অপর্যাপ্ত বলেছে ডিসিসিআই। তারা স্থানীয় পর্যায়ে প্রাথমিক জ্বালানি সরবরাহে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এলএনজি আমদানিতে ভ্যাট অব্যাহতিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে ব্যবসায়ীদের সংগঠন ঢাকা চেম্বার।

ঢাকা/এসএইচ