বিশ্বব্যাপী বন্ড মার্কেটের তুলনায় দেশের বন্ড মার্কেট দুর্বল: শেখ শামসুদ্দিন

- আপডেট: ০৫:৩১:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
- / ১০৪৫৪ বার দেখা হয়েছে
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্বব্যাপী বন্ড মার্কেটের যে অবস্থান সে তুলনায় আমাদের দেশের বন্ড মার্কেট দুর্বল যায়গায় রয়েছে। স্টক এক্সচেঞ্জের প্ল্যাটফর্মে সরকারি সিকিউরিটিজের লেনদেন বাড়াতে প্রচারনামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে রোববার (৫ ফেব্রুয়ারী) ‘বন্ড ফিচারস এন্ড ট্রেডিং অফ বন্ড অন দা এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্ম’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ৷ অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও তানজিম আলমগীর৷ এছাড়াও যুক্ত ছিলেন ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এম. সাইফুর রহমান মজুমদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক এম আনোয়ার হোসেন, ডিএসই’র প্রোডাক্ট এন্ড মার্কেট ডেভেলপমেন্টের প্রধান সাইদ মাহমুদ জুবায়ের এবং সিনিয়র ম্যানেজার কামরুন নাহার৷
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, আর এজন্য পুঁজিবাজারের মাধ্যমে যে অর্থায়ন হবার কথা সেটি করা যাচ্ছে না। আর এজন্য অর্থায়নের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা ব্যাংকের উপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে। ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত লাভের পরিমাণ কম বেশি হবার কারণে নিয়মিত ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করা কঠিন হয়ে যায়। সেজন্য আমাদের এমন একটি পথে যেতে হবে যাতে প্রতিষ্ঠানগুলো সাচ্ছন্দে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করতে পারে। এ সমস্যার সমাধানে আমাদের একটি শক্তিশালী বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে হবে। আমাদের দেশে বিভিন্ন বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে।আমরা এই সকল প্রকল্পে অর্থায়ন করতে পারছি না। এক্ষেত্রে আমাদের বন্ড মার্কেটের একটি সুষ্ঠ ভবিষ্যত্ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মার্কেটকে সহায়তা করার জন্য কমিশন বিভিন্ন আইন-কানুন প্রণয়ন করেছে। সরকার আইন-কানুন সহজ করে বাংলাদেশ ব্যাংকে ট্রেজারি বন্ডগুলোকে সেকেন্ডারি মার্কেটে লেনদেনের জন্য একটি প্ল্যাটফম তৈরি করা হয়েছে। আমাদের বন্ড মার্কেটে যে সকল সমস্যা রয়েছে তা সমাধানে সরকারের সকল পক্ষ সবসময় গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছেন৷ এছাড়াও তিনি বন্ড মার্কেটের উন্নয়নের জন্য আমাদের প্রযুক্তির ব্যবহার ও প্রচারনামূলক কার্যক্রম বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন৷ ফলে, এর মাধ্যমে বন্ডকে একটি কাঙ্খিত প্রোডাক্ট হিসেবে বিনিয়োগকারীদের কাছে উপস্থাপন করা যাবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) (ভারপ্রাপ্ত) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, ইক্যুইটি মার্কেটের পাশাপাশি বন্ড মার্কেটও পুঁজিবাজারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। লক্ষণীয় বিষয় হলো বন্ড মার্কেট সম্পর্কে আমাদের বিনিয়োগকারীদের ধারণা ততটা স্পষ্ট নয়। আমাদের পুঁজিবাজার মূলত ইক্যুইটি নির্ভর। যেকোনো দেশের পুঁজিবাজার উন্নয়নের জন্য ইকুইটি মার্কেটের পাশাপাশি বন্ড মার্কেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
তিনি আরও বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠানটি শুধুমাত্র সরকারি সিকিউরিটিস নয় বরঞ্চ সামগ্রিক বন্ড মার্কেটকে কেন্দ্র করে করা হয়েছে৷ যাতে বিনিয়োগকারীগণ ফিক্সড ইনকাম সিকিউরিটিজ সম্পর্কে ধারণা পেতে পারে। ফিক্সড ইনকাম সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের মাধ্যমে কিভাবে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা করে লাভবান হওয়া যায় এ বিষয়গুলো আজকের অনুষ্ঠানের আলোচনার প্রতিপাদ্য বিষয়। এই ধরণের সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিনিয়োগকারীদের বন্ড মার্কেট সম্পর্কে সচেতন করার ফলশ্রুতিতে পুঁজিবাজার আরও প্রাণবন্ত হবে৷
আরও পড়ুন: মিডল্যান্ড ব্যাংকের আইপিও আবেদন শুরু ১৬ ফেব্রুয়ারি
অনুষ্ঠানের মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সিনিয়র ম্যানেজার এইস এ মামুন, সরকারি সিকিউরিটিজের ট্রেডিং প্রক্রিয়ার উপর মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ডিএসই’র প্রোডাক্ট এন্ড মার্কেট ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান সাইদ মাহমুদ জুবায়ের, ডিএসই’র প্রডাক্ট এন্ড মার্কেট ডেভেলপমেন্টের সিনিয়র ম্যানেজার কামরুন নাহার এবং পুঁজিবাজারে সরকারি সিকিউরিটিজের সম্ভাবনার ওপর বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক মোহামমদ আনোয়ার হোসেন৷
উল্লেখ্য, গত ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর, ডিএসইতে ২ থেকে ২০ বছর মেয়াদী ২৫০টি সরকারি সিকিউরিটিজ লেনদেনের System Based Trial Trading শুরু হয়৷ যার বাজার মূলধন ৩১ লাখ ৬৮ হাজার ৮০ মিলিয়ন টাকা। যা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে৷
ঢাকা/এসএ