মেট্রোরেলের ভাড়া ৩০ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব আইপিডির

- আপডেট: ০৭:২১:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২২
- / ১০৪০৩ বার দেখা হয়েছে
মেট্রোরেলকে গণপরিবহনে রূপ দিতে ও পর্যাপ্ত যাত্রী নিশ্চিত করতে ভাড়া ৩০ শতাংশ কমানোর দাবি জানিয়েছেন ইনস্টিটিউট অব প্লানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি)। আজ সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) আইপিডি আয়োজিত ‘রাজধানীর টেকসই পরিকল্পনায় মেট্রোরেল: প্রেক্ষিত ও করণীয়’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ দাবি করা হয়।
আলোচকরা বলেন, মধ্যবিত্তরাই এই গণপরিবহন বেশি ব্যবহার করবে ফলে মেট্রোরেলের পর্যাপ্ত যাত্রীসংখ্যা নিশ্চিত করতে মেট্রোরেলের ভাড়া ৩০ শতাংশ কমানো দরকার এবং মেট্রোলাইনকে কেন্দ্র করে বহুমাধ্যমভিত্তিক সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন।
এ বছর মেট্রোরেলের উদ্বোধন করা হলেও আগামী বছর উত্তরা থেকে আগারগাঁও হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত এমআরটি-৬ লাইনের পুরোটা চালু হয়ে গেলে বিপুলসংখ্যক যাত্রীকে মেট্রোরেলের মাধ্যমে দ্রুত পরিবহন করা যাবে, যা নগরের পরিবহন ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
মেট্রোরেলকে সাধারণ জনগণের পরিবহন হিসেবে গড়ে তুলতে নিম্নমধ্যবিত্ত ও ন্যূনতম আয়শ্রেণি এবং ছাত্রদের জন্য ৫০ ভাগ ভাড়ার ব্যবস্থা করা এবং ৫ বছর পর্যন্ত বয়সীদের জন্য বিনা ভাড়ায় মেট্রো পরিবহনের ব্যবস্থা করবার দাবি করা হয় আইপিডি’র পক্ষ থেকে।
মূল প্রবন্ধে আইপিডি’র নির্বাহী পরিচালক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, মেট্রোরেলের স্টেশনের আশেপাশের এলাকার ভূমি ব্যবহারের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে, যার আলামত ইতিমধ্যেই উত্তরা থেকে আগারগাঁও এলাকায় চোখে পড়ছে। মেট্রোরেলের কারণে এই এলাকার ভূমির মূল্য বেড়ে গিয়েছে এবং নতুন নতুন আবাসন প্রকল্পে তৈরি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘নগর পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায় সঠিক নীতি কৌশল প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও যথাযথ উন্নয়ন নজরদারি প্রয়োজন, যেন এই জেনিট্রিফিকেশন তুলনামূলকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং মেট্রোরেলের সুফল সকল আয়-শ্রেণির মানুষ পেতে পারে ও সার্বিক জনকল্যাণ নিশ্চিত করা যায়।’
ভূমির উন্নয়ন ফি আরোপের মাধ্যমে মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যয় পুনরুদ্ধার, স্টেশন প্লাজা নির্মাণের মাধ্যমে মেট্রো স্টেশনকে কার্যকর করা, মেট্রো করিডোরের দুইপাশে ‘ইন্টিগ্রেটেড করিডোর ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান’ তৈরি করা, মেট্রো স্টেশনের ৫০০ মিটারের মধ্যে টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভূমি ব্যবহার ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা তৈরির প্রস্তাব করা হয় আইপিডি’র পক্ষ থেকে।
আইপিডির উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বলেন, মেট্রোরেলের আশেপাশের পরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য ছোট ছোট প্লট একত্রীকরণ বা ল্যান্ড কনসোলিডেশন করবার উদ্যোগ নেওয়া দরকার।
রাজউকের নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, মেট্রোরেলকে কার্যকর করতে মেট্রোর পাশাপাশি সমন্বিত উপায়ে বাস সার্ভিস চালু করা এবং স্টেশনগুলোতে পর্যাপ্ত পদচারী সুবিধা ও গাড়ি পার্কিং সুবিধা রাখা প্রয়োজন।
আইপিডির পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, মেট্রো স্টেশনের ৫০০ মিটারের মধ্যে ভবনের আকার-আয়তন ব্যবহার সুনির্দিষ্টকরণ করা দরকার, যেন এলাকাভিত্তিক জনসংখ্যা, উন্নয়নের মাত্রা এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট এলাকার জন্য টেকসই ও এলাকার ভারবহন ক্ষমতার সাথে সামঞ্জস্য থাকে। মেট্রো স্টেশনের ৫০০ মিটার প্রভাববলয়ে বেসরকারি অ্যাপার্টমেন্ট ও ফ্ল্যাট প্রকল্পে বাধ্যতামূলক সাশ্রয়ী আবাসনের মাধ্যমে নিম্নবিত্তদের জন্য আবাসনের সুযোগ বৃদ্ধি করা দরকার।
আরও পড়ুন: বার্ড হিটের শিকার বিমানের ড্রিমলাইনার
মেট্রোরেল সংশ্লিষ্ট ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট (টিওডি) প্রকল্পের পরামর্শক ড. আফসানা হক বলেন, মেট্রোরেলের আশেপাশের ভূমি ব্যবহার এবং স্টেশন প্লাজাকেন্দ্রিক পরিকল্পনার যে উদ্যোগ এখন নেওয়া হচ্ছে, তা কয়েক বছর আগেই শুরু করা প্রয়োজন ছিল।
আইপিডি অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) ডেপুটি আরবান প্ল্যানার মো. মিজানুর রহমান, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক পরিকল্পনাবিদ এটিএম শাহজাহানসহ অন্যান্যরা।
ঢাকা/এসএ