০৮:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

যুক্তরাজ্যের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি চায় এফবিসিসিআই

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১০:৪৬:৪৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ অক্টোবর ২০২২
  • / ১০৩৯১ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের মুক্তবাণিজ্য চুক্তি চায় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। সংগঠনটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন কনফেডারেশন অব ব্রিটিশ ইন্ডাস্ট্রিকে (সিবিআই) এ বিষয়ে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে এফবিসিসিআই আয়োজিত নেটওয়ার্কিং ডিনারে তিনি এ আহ্বান জানান।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

ঢাকা সফররত সিবিআই সভাপতি ও বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য লর্ড করন বিমিমোরিয়ার সৌজন্যে এ ডিনারের আয়োজন করা হয়।

এফবিসিসিআই সভাপতি বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে পদার্পণের পরেও যুক্তরাজ্যের বর্তমান বাণিজ্য সহযোগিতাগুলো অব্যাহত রাখার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। দুদেশের বাণিজ্য-বিনিয়োগ বাড়ানো ও দক্ষতা উন্নয়নের জন্য এফবিসিসিআই ও সিবিআইর মধ্যে সমঝোতা চুক্তির প্রস্তাব দেন তিনি।

বর্তমানে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ পাঁচ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশটিতে রপ্তানি হয়েছিল চার দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য, বিপরীতে আমদানি ছিল দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার।

আরও পড়ুন: রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ বাড়তি প্রণোদনা পাবেন মালয়েশিয়া প্রবাসীরা

বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে জসিম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে বাণিজ্য প্রবৃদ্ধি ও অবকাঠামো উন্নয়নের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাত, প্লাস্টিক, জাহাজ নির্মাণ, পেট্রোকেমিক্যাল, পর্যটন, অবকাঠামো, পেট্রোলিয়াম, জ্বালানি খাতে দুদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রশংসা করেন। বর্তমান সরকারের ১৫ বছরের শাসনামলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন তিনি। এসময় স্বল্পোন্নত আয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়াসহ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরবর্তী ধাপগুলোতেও যুক্তরাজ্যকে পাশে পাওয়ার আশা প্রকাশ করেন নূরুল মজিদ।

সিবিআই সভাপতি ও বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য লর্ড করন বিলিমোরিয়া বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনাসদস্য হিসেবে তার পিতার অংশগ্রহণের স্মৃতিচারণ করেন। তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ বিশাল সংখ্যক বাংলাদেশি তরুণ জনশক্তিকে কীভাবে আরও কার্যকরভাবে কাজে লাগানো যায়, সে বিষয়ে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যকে একত্রে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি।

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যে আরও বেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাই ভবিষ্যতে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী দেখা যাবে। দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ বাড়াতে দুদেশের মধ্যে আস্থার উন্নয়ন করতে হবে বলে মন্তব্য করেন লর্ড করণ বিলিমোরিয়া।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, দুদেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে বাংলাদেশি কৃষিপণ্য রপ্তানির সম্ভাব্যতা যাচাই বিষয়ে গবেষণা হতে পারে। এছাড়াও যুক্তরাজ্যের আউটসোর্সিং বাজারে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের অংশগ্রহণ বাড়ানো, চিকিৎসক, নার্স, কেয়ারগিভারসসহ অন্যান্য জনশক্তি রপ্তানি, যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপারে দুই দেশের বেসরকারিখাতকে কাজ করার পরামর্শ দেন মাসুদ বিন মোমেন।

ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে ব্রিটিশ বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ব্যবসা করে আসছে। ব্যবসার সম্প্রসারণও হচ্ছে। তবে আরও নতুন ব্রিটিশ কোম্পানি যেন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয়ে ওঠে সে জন্য বাংলাদেশকে উদ্যোগ নিতে হবে। ব্যবসায়িক পরিবেশ আরও উন্নয়নের তাগিদ দেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার।

অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান, কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ, এ কে আব্দুল মাতলুব আহমাদ, এফবিসিসিআইর সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী, সালাউদ্দিন আলমগীর, মো. হাবীব উল্ল্যাহ ডন ও পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন: পোশাক খাতের রফতানিতে সুবাতাস

ঢাকা/টিএ

শেয়ার করুন

যুক্তরাজ্যের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি চায় এফবিসিসিআই

আপডেট: ১০:৪৬:৪৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ অক্টোবর ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের মুক্তবাণিজ্য চুক্তি চায় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। সংগঠনটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন কনফেডারেশন অব ব্রিটিশ ইন্ডাস্ট্রিকে (সিবিআই) এ বিষয়ে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে এফবিসিসিআই আয়োজিত নেটওয়ার্কিং ডিনারে তিনি এ আহ্বান জানান।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

ঢাকা সফররত সিবিআই সভাপতি ও বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য লর্ড করন বিমিমোরিয়ার সৌজন্যে এ ডিনারের আয়োজন করা হয়।

এফবিসিসিআই সভাপতি বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে পদার্পণের পরেও যুক্তরাজ্যের বর্তমান বাণিজ্য সহযোগিতাগুলো অব্যাহত রাখার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। দুদেশের বাণিজ্য-বিনিয়োগ বাড়ানো ও দক্ষতা উন্নয়নের জন্য এফবিসিসিআই ও সিবিআইর মধ্যে সমঝোতা চুক্তির প্রস্তাব দেন তিনি।

বর্তমানে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ পাঁচ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশটিতে রপ্তানি হয়েছিল চার দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য, বিপরীতে আমদানি ছিল দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার।

আরও পড়ুন: রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ বাড়তি প্রণোদনা পাবেন মালয়েশিয়া প্রবাসীরা

বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে জসিম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে বাণিজ্য প্রবৃদ্ধি ও অবকাঠামো উন্নয়নের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাত, প্লাস্টিক, জাহাজ নির্মাণ, পেট্রোকেমিক্যাল, পর্যটন, অবকাঠামো, পেট্রোলিয়াম, জ্বালানি খাতে দুদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রশংসা করেন। বর্তমান সরকারের ১৫ বছরের শাসনামলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন তিনি। এসময় স্বল্পোন্নত আয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়াসহ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরবর্তী ধাপগুলোতেও যুক্তরাজ্যকে পাশে পাওয়ার আশা প্রকাশ করেন নূরুল মজিদ।

সিবিআই সভাপতি ও বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য লর্ড করন বিলিমোরিয়া বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনাসদস্য হিসেবে তার পিতার অংশগ্রহণের স্মৃতিচারণ করেন। তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ বিশাল সংখ্যক বাংলাদেশি তরুণ জনশক্তিকে কীভাবে আরও কার্যকরভাবে কাজে লাগানো যায়, সে বিষয়ে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যকে একত্রে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি।

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যে আরও বেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাই ভবিষ্যতে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী দেখা যাবে। দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ বাড়াতে দুদেশের মধ্যে আস্থার উন্নয়ন করতে হবে বলে মন্তব্য করেন লর্ড করণ বিলিমোরিয়া।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, দুদেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে বাংলাদেশি কৃষিপণ্য রপ্তানির সম্ভাব্যতা যাচাই বিষয়ে গবেষণা হতে পারে। এছাড়াও যুক্তরাজ্যের আউটসোর্সিং বাজারে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের অংশগ্রহণ বাড়ানো, চিকিৎসক, নার্স, কেয়ারগিভারসসহ অন্যান্য জনশক্তি রপ্তানি, যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপারে দুই দেশের বেসরকারিখাতকে কাজ করার পরামর্শ দেন মাসুদ বিন মোমেন।

ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে ব্রিটিশ বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ব্যবসা করে আসছে। ব্যবসার সম্প্রসারণও হচ্ছে। তবে আরও নতুন ব্রিটিশ কোম্পানি যেন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয়ে ওঠে সে জন্য বাংলাদেশকে উদ্যোগ নিতে হবে। ব্যবসায়িক পরিবেশ আরও উন্নয়নের তাগিদ দেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার।

অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান, কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ, এ কে আব্দুল মাতলুব আহমাদ, এফবিসিসিআইর সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী, সালাউদ্দিন আলমগীর, মো. হাবীব উল্ল্যাহ ডন ও পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন: পোশাক খাতের রফতানিতে সুবাতাস

ঢাকা/টিএ