যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াল পাকিস্তান-আফগানিস্তান

- আপডেট: ১১:৫৩:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫
- / ১০২১১ বার দেখা হয়েছে
যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়িয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। আজ শনিবার কাতারের রাজধানী দোহায় শান্তি সংলাপ শুরু হচ্ছে দুই দেশের সরকারি প্রতিনিধিদের মধ্যে, সেই সংলাপ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি চলবে।
গতকাল শুক্রবার এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছিল, পাকিস্তানের সরকারি প্রতিনিধি ইতোমধ্যে দোহায় পৌঁছেছেন। আজ শনিবার সেখানে যাবেন আফগান প্রতিনিধিরা।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে বরাত প্রতিবেদেনে জিও নিউজ জানিয়েছে, পাকিস্তানের প্রতিনিধিরা এখনও দোহায় যাননি। আজ দোহার উদ্দেশে রওনা হবেন তারা।
২০২১ সালের আগস্টে তালেবান সরকার কাবুল দখল করার পর থেকে আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্ক নিম্নগামী হওয়া শুরু করে। বর্তমানে তা তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে তিক্ততার প্রধান কারণ পাকিস্তানি তালেবানপন্থি রাজনৈতিক গোষ্ঠী তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)। সন্ত্রাসী তৎপরতার কারণে বেশ কয়েক বছর আগে এই গোষ্ঠীটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে পাকিস্তান।
তবে এতে টিটিপির কোনো ক্ষতি হয়নি, বরং কাবুলে তালেবান সরকার অধিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে দিনকে দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে গোষ্ঠীটি। টিটিপির প্রধান ঘাঁটি অঞ্চল পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়া। আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী এই প্রদেশটিতে নিয়মিতই টিটিপির সঙ্গে সংঘাত হচ্ছে পাকিস্তানের সেনা ও পুলিশ বাহিনীর।
আফগানিস্তানের তালেবান সরকার টিটিপিকে মদত ও আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে— গত কয়েক বছরে বেশ কয়েক বার কাবুলকে এ অভিযোগ আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে ইসলামাবাদ। তবে কাবুল প্রতিবারই এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
গত ৯ অক্টোবর রাতে কাবুলে বিমান অভিযান চালায় পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। সেই অভিযানে নিহত হন টিটিপির শীর্ষ নেতা নূর ওয়ালি মেহসুদ. দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা ক্বারি সাইফুল্লাহ মেহসুদসহ টিটিপির বেশ কয়েক জন সম্মুখ সারির নেতা।
এ অভিযানের ২ দিন পর ১১ অক্টোবর খাইবার পাখতুনখোয়ার সীমান্তবর্তী পাকিস্তানি সেনা চৌকিগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালায় আফগান সেনাবাহিনী। পাকিস্তানও পাল্টা জবাব দেয়। ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত চলে এই সংঘাত। পাক সেনাবাহিনীর আন্ত:বিভাগ সংযোগ দপ্তর (আইএসপিআর)-এর তথ্য অনুসারে, সংঘাতে আফগান সেনাবাহিনীর ২ শতাধিক এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ২৩ জন যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।
চার দিন সংঘাতের পর গত ১৫ অক্টোবর ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতিতে যায় পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। সেই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হয় গতকাল শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে।
যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আফগানিস্তানের কান্দাহার ও পাকতিকা প্রদেশে বিমান হামলা চালায় পাকিস্তানের সেনাবাহনী। হামলায় দুই প্রদেশে নিহত হয়েছেন ৫০ জনেরও বেশি এবং আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক।
এরপর রাতে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে সম্মত হয় কাবুল ও ইসলামাবাদ।
সূত্র: জিও নিউজ
ঢাকা/এসএইচ