১২:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪

শেয়ারবাজার বিনিয়োগ তহবিলে জমা সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১১:৫৮:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ মার্চ ২০২২
  • / ১০৩৫২ বার দেখা হয়েছে

শফীউল আলম সুমন: পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের সুযোগ হলেও এখন পর্যন্ত ব্যাংকগুলো সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছে। যদিও দুই বছর আগে গঠিত হওয়া পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য ব্যাংকগুলোর বিশেষ তহবিলের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়ছে। তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে পৃথকভাবে ২০০ কোটি টাকার তহবিল গঠনের নির্দেশনা থাকলেও অনেকেই তা করেনি। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এদিকে তহবিল গঠন করলেও বিনিয়োগে বেশ সতর্কতা অবলম্বন করছে প্রতিষ্ঠানগুলো। গতকাল পর্যন্ত গঠন করা তহবিলের মধ্যে তিন হাজার ৬০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে পুঁজিবাজারে। তবে বিশেষ তহবিল থেকে সুকুকে ব্যাংকের বিনিয়োগের কারণে অন্যান্য তালিকাভুক্ত শেয়ার প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ কিছুটা কমে গেছে। গত নভেম্বরে বিভিন্ন শেয়ারে বিশেষ তহবিল থেকে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ ছিল প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা, যা এখন প্রায় এক হাজার ৫৫০ কোটি টাকায় নেমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গতকাল পর্যন্ত মোট ৩৬টি ব্যাংক প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যাংকগুলো নিজস্ব অর্থায়নে এ তহবিল গঠন করেছে।

সূত্র জানায়, গতকাল পর্যন্ত ৩৬টি ব্যাংক সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করেছে, যার মধ্য থেকে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছে তিন হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এ বিনিয়োগ থেকে এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা গেছে সম্প্রতি তালিকাভুক্ত হওয়া বেসরকারি খাতে দেশের প্রথম সুকুক বন্ড বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক আল ইস্তিসনায়।

অবশ্য বেক্সিমকোর সুকুকে ব্যাংকগুলোর মোট বিনিয়োগ হয়েছে দুই হাজার ২২০ কোটি টাকা, যা বন্ডটির মোট আকারের ৭৪ শতাংশ। শেয়ারবাজারের জন্য গঠিত বিশেষ তহবিলের বাইরে আরও প্রায় ৯০০ কোটি টাকা নিজস্ব তহবিল থেকে বিনিয়োগ করেছে ব্যাংকগুলো।

২০২০ সালের শুরুতে পুঁজিবাজারের টানা দরপতন সামাল দিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য বিশেষ তহবিল গঠনের সুযোগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য তহবিল গঠন-সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, তফসিলি ব্যাংকগুলো ট্রেজারি বিল ও বন্ড রেপোর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ ২০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করতে পারে।

ব্যাংকগুলো চাইলে নিজস্ব উৎস থেকেও এমন তহবিল গঠন করতে পারে। যদিও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে পৃথকভাবে ২০০ কোটি টাকার তহবিল গঠনের নির্দেশনা থাকলেও অনেকেই তা করেনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের সুযোগ হয়।

গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের জন্য ব্যাংকগুলোর গঠন করা বিশেষ তহবিলের ৭০ শতাংশ সৌর, বায়ু, জল, বায়োমাসের মতো নবায়নযোগ্য শক্তি প্রকল্পে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে বেসরকারি উদ্যোক্তার আনা গ্রিন সুকুক বন্ডেও বিনিয়োগে সুযোগ দেয়া হয়। এজন্য বিশেষ তহবিলের মেয়াদ ২০২৫ সাল থেকে বাড়িয়ে ২০২৮ সাল পর্যন্ত করা হয়। ব্যাংকগুলোর এ বিনিয়োগ পুঁজিবাজারে ব্যাংক কোম্পানি আইনের বর্ণিত বিনিয়োগ গণনার বাইরে থাকবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গতকাল পর্যন্ত মোট ৩৬টি ব্যাংক প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যাংকগুলো নিজস্ব অর্থায়নে এ তহবিল গঠন করেছে।

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, জোর করে কাউকে বিনিয়োগ করানো উচিত নয়। যদি তারা (ব্যাংক) এটা প্রফিটেবল মনে করে তাহলে বিনিয়োগ করবে। ক্যাপিটাল মার্কেটকে বাঁচাতে ব্যাংকগুলোকে বিনিয়োগ করতে হবে, বিষয়টা এমন নয়। ব্যাংক ব্যাংকের মতো চলবে। ক্যাপিটাল মার্কেটে বিনিয়োগকে লাভজনক মনে করলে তারা নিজের ইচ্ছাতেই এখানে আসবে। ব্যাংকগুলোকে জোরজবরদস্তি করে ক্যাপিটাল মার্কেটে নিয়ে আসা উচিত নয়। কারণ এগুলো আমানতকারীদের টাকা। এটা ঝুঁকির মুখে ফেলে দেয়া উচিত নয়।

ঢাকা/বিজনেস জার্নাল

ঢাকা/এসআর

শেয়ার করুন

x

শেয়ারবাজার বিনিয়োগ তহবিলে জমা সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা

আপডেট: ১১:৫৮:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ মার্চ ২০২২

শফীউল আলম সুমন: পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের সুযোগ হলেও এখন পর্যন্ত ব্যাংকগুলো সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছে। যদিও দুই বছর আগে গঠিত হওয়া পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য ব্যাংকগুলোর বিশেষ তহবিলের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়ছে। তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে পৃথকভাবে ২০০ কোটি টাকার তহবিল গঠনের নির্দেশনা থাকলেও অনেকেই তা করেনি। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এদিকে তহবিল গঠন করলেও বিনিয়োগে বেশ সতর্কতা অবলম্বন করছে প্রতিষ্ঠানগুলো। গতকাল পর্যন্ত গঠন করা তহবিলের মধ্যে তিন হাজার ৬০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে পুঁজিবাজারে। তবে বিশেষ তহবিল থেকে সুকুকে ব্যাংকের বিনিয়োগের কারণে অন্যান্য তালিকাভুক্ত শেয়ার প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ কিছুটা কমে গেছে। গত নভেম্বরে বিভিন্ন শেয়ারে বিশেষ তহবিল থেকে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ ছিল প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা, যা এখন প্রায় এক হাজার ৫৫০ কোটি টাকায় নেমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গতকাল পর্যন্ত মোট ৩৬টি ব্যাংক প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যাংকগুলো নিজস্ব অর্থায়নে এ তহবিল গঠন করেছে।

সূত্র জানায়, গতকাল পর্যন্ত ৩৬টি ব্যাংক সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করেছে, যার মধ্য থেকে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছে তিন হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এ বিনিয়োগ থেকে এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা গেছে সম্প্রতি তালিকাভুক্ত হওয়া বেসরকারি খাতে দেশের প্রথম সুকুক বন্ড বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক আল ইস্তিসনায়।

অবশ্য বেক্সিমকোর সুকুকে ব্যাংকগুলোর মোট বিনিয়োগ হয়েছে দুই হাজার ২২০ কোটি টাকা, যা বন্ডটির মোট আকারের ৭৪ শতাংশ। শেয়ারবাজারের জন্য গঠিত বিশেষ তহবিলের বাইরে আরও প্রায় ৯০০ কোটি টাকা নিজস্ব তহবিল থেকে বিনিয়োগ করেছে ব্যাংকগুলো।

২০২০ সালের শুরুতে পুঁজিবাজারের টানা দরপতন সামাল দিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য বিশেষ তহবিল গঠনের সুযোগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য তহবিল গঠন-সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, তফসিলি ব্যাংকগুলো ট্রেজারি বিল ও বন্ড রেপোর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ ২০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করতে পারে।

ব্যাংকগুলো চাইলে নিজস্ব উৎস থেকেও এমন তহবিল গঠন করতে পারে। যদিও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে পৃথকভাবে ২০০ কোটি টাকার তহবিল গঠনের নির্দেশনা থাকলেও অনেকেই তা করেনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের সুযোগ হয়।

গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের জন্য ব্যাংকগুলোর গঠন করা বিশেষ তহবিলের ৭০ শতাংশ সৌর, বায়ু, জল, বায়োমাসের মতো নবায়নযোগ্য শক্তি প্রকল্পে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে বেসরকারি উদ্যোক্তার আনা গ্রিন সুকুক বন্ডেও বিনিয়োগে সুযোগ দেয়া হয়। এজন্য বিশেষ তহবিলের মেয়াদ ২০২৫ সাল থেকে বাড়িয়ে ২০২৮ সাল পর্যন্ত করা হয়। ব্যাংকগুলোর এ বিনিয়োগ পুঁজিবাজারে ব্যাংক কোম্পানি আইনের বর্ণিত বিনিয়োগ গণনার বাইরে থাকবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গতকাল পর্যন্ত মোট ৩৬টি ব্যাংক প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যাংকগুলো নিজস্ব অর্থায়নে এ তহবিল গঠন করেছে।

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, জোর করে কাউকে বিনিয়োগ করানো উচিত নয়। যদি তারা (ব্যাংক) এটা প্রফিটেবল মনে করে তাহলে বিনিয়োগ করবে। ক্যাপিটাল মার্কেটকে বাঁচাতে ব্যাংকগুলোকে বিনিয়োগ করতে হবে, বিষয়টা এমন নয়। ব্যাংক ব্যাংকের মতো চলবে। ক্যাপিটাল মার্কেটে বিনিয়োগকে লাভজনক মনে করলে তারা নিজের ইচ্ছাতেই এখানে আসবে। ব্যাংকগুলোকে জোরজবরদস্তি করে ক্যাপিটাল মার্কেটে নিয়ে আসা উচিত নয়। কারণ এগুলো আমানতকারীদের টাকা। এটা ঝুঁকির মুখে ফেলে দেয়া উচিত নয়।

ঢাকা/বিজনেস জার্নাল

ঢাকা/এসআর