০৪:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪

সাত মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমেছে ৩ হাজার ৬৯ কোটি টাকা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৭:০৭:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ মার্চ ২০২৩
  • / ১০৩৭৩ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

গত কয়েক মাস ধরে জাতীয় সঞ্চয়পত্রে যে পরিমাণ বিনিয়োগ হচ্ছে, তার চেয়ে আগে কেনা সঞ্চয়পত্রের ভাঙানো বাবদ মূল অর্থ পরিশোধের পরিমাণ বেশি হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি কমেছে ৩ হাজার ৬৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের হালনাগাদ তথ্য থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের এই সাত মাসে যত টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে তা দিয়ে গ্রাহকদের আগে বিনিয়োগ করা সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। উল্টো ৩ হাজার ৬৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা সরকার তার কোষাগার থেকে অথবা ব্যাংকব্যবস্থা থেকে ঋণ নিয়ে শোধ করেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এর আগে গত ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে নিট বিক্রির পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ১৭৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ ওই সাত মাসে সুদ-আসল পরিশোধের পরও সরকারের কোষাগারে ১২ হাজার ১৭৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা জমা ছিল। এর ফলে তখন ব্যাংক থেকে বেশি ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন পড়েনি।

এদিকে চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে মাত্র ৩৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে এই বিক্রির পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ সঞ্চয়পত্র বিক্রি ব্যাপকহারে কমছে।

বাজেট ঘাটতি মেটাতে চলতি অর্থবছর সঞ্চয়পত্র থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে সরকার। এর বিপরীতে প্রথম ছয় মাসে এই খাত থেকে কোনো ঋণ পায়নি সরকার, উল্টো শোধ করেছে। এ অর্থ বছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১ লাখ ১৪ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা।

এর আগে সঞ্চয়পত্র বিক্রির চাপ কমাতে ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে মুনাফার ওপর উৎসে করের হার ৫ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়। একই সঙ্গে এক লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন বাধ্যতামূলক করা হয়। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকলে সঞ্চয়পত্র বিক্রি না করার শর্ত আরোপসহ আরও কিছু কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তার পরও বাড়তে থাকে বিক্রি।

আরও পড়ুন: তিন দিন ব্যাংক বন্ধ থাকবে যেসব এলাকায়

সর্বশেষ সঞ্চয়পত্রের বিক্রি কমাতে ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ২ শতাংশের মতো কমিয়ে দেয় সরকার। এর পর থেকেই বিক্রি কমছে।

এদিকে সঞ্চয়পত্র থেকে কোনো ঋণ না পাওয়ায় ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের পরিমাণ বেড়ে গেছে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি পূরণে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার। আগের অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ছিল ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। অর্থাৎ এবার প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা বেশি ঋণ নেয়ার লক্ষ্য সরকারের।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x

সাত মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমেছে ৩ হাজার ৬৯ কোটি টাকা

আপডেট: ০৭:০৭:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ মার্চ ২০২৩

গত কয়েক মাস ধরে জাতীয় সঞ্চয়পত্রে যে পরিমাণ বিনিয়োগ হচ্ছে, তার চেয়ে আগে কেনা সঞ্চয়পত্রের ভাঙানো বাবদ মূল অর্থ পরিশোধের পরিমাণ বেশি হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি কমেছে ৩ হাজার ৬৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের হালনাগাদ তথ্য থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের এই সাত মাসে যত টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে তা দিয়ে গ্রাহকদের আগে বিনিয়োগ করা সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। উল্টো ৩ হাজার ৬৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা সরকার তার কোষাগার থেকে অথবা ব্যাংকব্যবস্থা থেকে ঋণ নিয়ে শোধ করেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এর আগে গত ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে নিট বিক্রির পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ১৭৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ ওই সাত মাসে সুদ-আসল পরিশোধের পরও সরকারের কোষাগারে ১২ হাজার ১৭৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা জমা ছিল। এর ফলে তখন ব্যাংক থেকে বেশি ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন পড়েনি।

এদিকে চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে মাত্র ৩৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে এই বিক্রির পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ সঞ্চয়পত্র বিক্রি ব্যাপকহারে কমছে।

বাজেট ঘাটতি মেটাতে চলতি অর্থবছর সঞ্চয়পত্র থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে সরকার। এর বিপরীতে প্রথম ছয় মাসে এই খাত থেকে কোনো ঋণ পায়নি সরকার, উল্টো শোধ করেছে। এ অর্থ বছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১ লাখ ১৪ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা।

এর আগে সঞ্চয়পত্র বিক্রির চাপ কমাতে ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে মুনাফার ওপর উৎসে করের হার ৫ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়। একই সঙ্গে এক লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন বাধ্যতামূলক করা হয়। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকলে সঞ্চয়পত্র বিক্রি না করার শর্ত আরোপসহ আরও কিছু কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তার পরও বাড়তে থাকে বিক্রি।

আরও পড়ুন: তিন দিন ব্যাংক বন্ধ থাকবে যেসব এলাকায়

সর্বশেষ সঞ্চয়পত্রের বিক্রি কমাতে ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ২ শতাংশের মতো কমিয়ে দেয় সরকার। এর পর থেকেই বিক্রি কমছে।

এদিকে সঞ্চয়পত্র থেকে কোনো ঋণ না পাওয়ায় ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের পরিমাণ বেড়ে গেছে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি পূরণে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার। আগের অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ছিল ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। অর্থাৎ এবার প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা বেশি ঋণ নেয়ার লক্ষ্য সরকারের।

ঢাকা/এসএ