সাবেক গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নরের পরিবারও তদন্তের আওতায়

- আপডেট: ০৬:৩০:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫
- / ১০৩৩৪ বার দেখা হয়েছে
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক তিন গভর্নর ও চার ডেপুটি গভর্নরের পাশাপাশি তাদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধেও শুরু হয়েছে দুর্নীতির অনুসন্ধান। ব্যাংক দখল, অর্থ লোপাট ও টাকা ছাপিয়ে বিতরণের অভিযোগে তাদের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। তদন্তে রয়েছে স্ত্রী, সন্তান ও পুত্রবধূ-জামাতার হিসাবও। একইসঙ্গে বিএফআইইউর সাবেক দুই প্রধানের ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাবও তলব করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিএফআইইউ’র সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশ ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুরোধে সম্প্রতি দেশের সব ব্যাংকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছে বিএফআইইউ। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ পদে দায়িত্ব পালন করা এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আর্থিক খাতের বিভিন্ন অনিয়ম, ব্যাংক দখলের মাধ্যমে অর্থ লোপাট এবং অতিরিক্ত টাকা ছাপিয়ে ঋণ বিতরণের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে।
যাদের হিসাব তলব করা হয়েছে, তাদের মধ্যে আছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান, ফজলে কবির এবং আব্দুর রউফ তালুকদার।
অভিযোগ অনুযায়ী, ফজলে কবিরের মেয়াদে রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর দখল নিয়ে লুটপাট শুরু হয় এবং তা অব্যাহত থাকে আব্দুর রউফ তালুকদারের সময়েও। বিশেষ করে রউফ তালুকদারের সময় টাকা ছাপিয়ে ব্যাংক খাতে ঋণ বিতরণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ লোপাটের সুযোগ তৈরি হয়েছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন: আমদানি সহজ করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাস্টার সার্কুলার
তলব করা সাবেক ডেপুটি গভর্নরদের মধ্যে রয়েছেন এস কে সুর চৌধুরী, এস এম মনিরুজ্জামান, কাজী ছাইদুর রহমান এবং আবু ফরাহ মো. নাছের। এর মধ্যে এস কে সুর চৌধুরী বর্তমানে দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি। একই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন বিএফআইইউর সাবেক প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাসও। অন্যদিকে সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে সরকারি ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের অবৈধ আর্থিক সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আর আবু ফরাহ মো. নাছেরের বিরুদ্ধে নীতিমালা শিথিল করে বিশেষ সুবিধা প্রদানের অভিযোগ রয়েছে।
বিএফআইইউ র সাবেক প্রধান আবু হেনা মো. রাজী হাসান এবং মো. মাসুদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মাসুদ বিশ্বাসকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। এই দুজনসহ তাদের পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব, লেনদেন বিবরণী, হিসাব খোলার ফরম এবং পরিচয় সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ব্যাংকগুলোর কাছে চাওয়া হয়েছে। কোনো হিসাব বর্তমানে বন্ধ থাকলেও, সেটির তথ্য আলাদাভাবে জানাতে বলা হয়েছে।
আর্থিক খাতে দীর্ঘদিন ধরে চলা নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এক বছর পর এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেই বড় পরিসরে তদন্ত শুরু করল দুদক।
ঢাকা/এসএইচ