০৮:৫০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সিএমএসএফ ফান্ড থেকে বিনিয়োগকারীদের ঋণ দিবে বিএসইসি

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১১:৫৩:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩
  • / ১০৫৫০ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতায় তারল্য সংকটে থাকা দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেনের চিত্র নিম্নমুখী। বিনিয়োগকারীদের অনাস্থায় প্রতিদিনেই লেনদেন কমছে। এমতাবস্থায় তারল্য সংকট দূর করে বিনিয়েগকারীদের আস্থা ফিরাতে পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিল বা সিএমএসএফ ফান্ডকে কাজে লাগাতে চায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ‍্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এই ফান্ড থেকে ঋণ নিতে পারবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। বিএসইসির সর্বশেষ কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সূত্র মতে, বিএসইসি বাজারের তারল্য সংকট দূর করতে স্বল্প সুদে সিএমএসএফ থেকে বড় ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংককে প্রাথমিকভাবে এই ঋণ দিবে। এ বিষয়ে বিএসইসির সর্বশেষ কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হবে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বিজনেস জার্নালকে বলেন, সিএমএসএফ ফান্ড থেকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদেরকে ঋণ দেওয়ার নিয়েছে কমিশন। এখান থেকে বড় ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংককে ঋণ দেওয়া হবে। খুব শিগগির এই বিষয়ে একটি নির্দেশনা জারি করবে বিএসইসি।

সূত্র মতে, তারল্য সংকট দূর করতে ৩০০ কোটি টাকা স্বল্প সুদে ঋণ হিসেবে দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে যেসব ব্রোকারেজ হাউজ বা মার্চেন্ট ব্যাংকের আর্থিক সক্ষমতা রয়েছে, কেবল তারাই ঋণ পাবে। এই ঋণে ৬ মাস থেকে এক বছর গ্রেস পিরিয়ড (এই সময়ে ঋণ পরিশোধ করতে হবে না) ধরা হতে পারে। ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ ২০ কোটি টাকার মতো পাবে।

হাউজগুলোকে নিজস্ব তহবিল থেকে আরো ২০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। তবে ঋণ পাওয়ার জন্য যেসব ব্রোকারেজ হাউজের মালিকপক্ষের তালিকাভুক্ত কোম্পানি রয়েছে, ওইসব কোম্পানি থেকে গ্যারান্টি দিতে হবে। এছাড়াও ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের জন্য মূল প্রতিষ্ঠান থেকে গ্যারান্টি দিতে হবে। অন্যদিকে যেসব প্রতিষ্ঠান ঋণ নেবে, তাদের ঋণের টাকা অবশ্যই ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে হবে। অর্থাৎ শক্তিশালী মৌলভিত্তির বাইরে দুর্বল কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা যাবে না।

আরও পড়ুন: বিকালে আসছে তিন কোম্পানির ইপিএস ও ডিভিডেন্ড

উল্লেখ, কোম্পানির অবন্ঠিত লভ্যাংশ পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বুঝিয়ে দিতে ২০২১ সালে পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিল’ বা সিএমএসএফ ফান্ড গঠন করে বিএসইসি। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব আছেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মূখ্য সচিব নজিবুর রহমান। ফান্ডটিকে কার্যকরি করার জন্য তিন বছরের অধিক সময়ের জন্য অদাবিকৃত/ অ-বন্টনকৃত নগদ বা স্টক লভ্যাংশের উপর ভিত্তি করে সিএমএসএফ গঠন করেছিল।

প্রসঙ্গত, সিএমএসএফের ফান্ডে বর্তমানে বিনিয়োগকারীদের ৭০০ কোটি টাকা জমা রয়েছে। সেখান থেকে সরকারি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) মাধ্যমে বাজারে ১৫০ কোটি টাকা সেকেন্ডারি মার্কেটে তারল্য প্রবাহ নিশ্চিতে বিনিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়াও বাজার স্থিতিশীলতায় সিএমএসএফ “আইসিবি এএমসিএল সিএমএসএফ গোল্ডেন জুবিলি মিউচুয়াল ফান্ড” নামে একটি ক্লোজড-এন্ড মিউচুয়াল ফান্ড গঠন করেছে। এই ফান্ডের আকার ১০০ (একশত) কোটি টাকা, যার ইউনিট প্রতি অভিহিত মূল্য ১০ (দশ) টাকা। সিএমএসএফ স্পন্সর হিসেবে ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। এছাড়াও বিনিয়োগকারীদের দাবি নিষ্পত্তির জন্য মোট ২২ লাখ ৯৬ হাজার টাকার অমীমাংসিত দাবি নিষ্পত্তির আবেদন গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ২১ লাখ ৩৩ হাজার টাকার দাবি নিষ্পত্তি করেছে।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

সিএমএসএফ ফান্ড থেকে বিনিয়োগকারীদের ঋণ দিবে বিএসইসি

আপডেট: ১১:৫৩:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতায় তারল্য সংকটে থাকা দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেনের চিত্র নিম্নমুখী। বিনিয়োগকারীদের অনাস্থায় প্রতিদিনেই লেনদেন কমছে। এমতাবস্থায় তারল্য সংকট দূর করে বিনিয়েগকারীদের আস্থা ফিরাতে পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিল বা সিএমএসএফ ফান্ডকে কাজে লাগাতে চায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ‍্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এই ফান্ড থেকে ঋণ নিতে পারবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। বিএসইসির সর্বশেষ কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সূত্র মতে, বিএসইসি বাজারের তারল্য সংকট দূর করতে স্বল্প সুদে সিএমএসএফ থেকে বড় ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংককে প্রাথমিকভাবে এই ঋণ দিবে। এ বিষয়ে বিএসইসির সর্বশেষ কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হবে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বিজনেস জার্নালকে বলেন, সিএমএসএফ ফান্ড থেকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদেরকে ঋণ দেওয়ার নিয়েছে কমিশন। এখান থেকে বড় ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংককে ঋণ দেওয়া হবে। খুব শিগগির এই বিষয়ে একটি নির্দেশনা জারি করবে বিএসইসি।

সূত্র মতে, তারল্য সংকট দূর করতে ৩০০ কোটি টাকা স্বল্প সুদে ঋণ হিসেবে দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে যেসব ব্রোকারেজ হাউজ বা মার্চেন্ট ব্যাংকের আর্থিক সক্ষমতা রয়েছে, কেবল তারাই ঋণ পাবে। এই ঋণে ৬ মাস থেকে এক বছর গ্রেস পিরিয়ড (এই সময়ে ঋণ পরিশোধ করতে হবে না) ধরা হতে পারে। ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ ২০ কোটি টাকার মতো পাবে।

হাউজগুলোকে নিজস্ব তহবিল থেকে আরো ২০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। তবে ঋণ পাওয়ার জন্য যেসব ব্রোকারেজ হাউজের মালিকপক্ষের তালিকাভুক্ত কোম্পানি রয়েছে, ওইসব কোম্পানি থেকে গ্যারান্টি দিতে হবে। এছাড়াও ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের জন্য মূল প্রতিষ্ঠান থেকে গ্যারান্টি দিতে হবে। অন্যদিকে যেসব প্রতিষ্ঠান ঋণ নেবে, তাদের ঋণের টাকা অবশ্যই ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে হবে। অর্থাৎ শক্তিশালী মৌলভিত্তির বাইরে দুর্বল কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা যাবে না।

আরও পড়ুন: বিকালে আসছে তিন কোম্পানির ইপিএস ও ডিভিডেন্ড

উল্লেখ, কোম্পানির অবন্ঠিত লভ্যাংশ পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বুঝিয়ে দিতে ২০২১ সালে পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিল’ বা সিএমএসএফ ফান্ড গঠন করে বিএসইসি। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব আছেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মূখ্য সচিব নজিবুর রহমান। ফান্ডটিকে কার্যকরি করার জন্য তিন বছরের অধিক সময়ের জন্য অদাবিকৃত/ অ-বন্টনকৃত নগদ বা স্টক লভ্যাংশের উপর ভিত্তি করে সিএমএসএফ গঠন করেছিল।

প্রসঙ্গত, সিএমএসএফের ফান্ডে বর্তমানে বিনিয়োগকারীদের ৭০০ কোটি টাকা জমা রয়েছে। সেখান থেকে সরকারি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) মাধ্যমে বাজারে ১৫০ কোটি টাকা সেকেন্ডারি মার্কেটে তারল্য প্রবাহ নিশ্চিতে বিনিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়াও বাজার স্থিতিশীলতায় সিএমএসএফ “আইসিবি এএমসিএল সিএমএসএফ গোল্ডেন জুবিলি মিউচুয়াল ফান্ড” নামে একটি ক্লোজড-এন্ড মিউচুয়াল ফান্ড গঠন করেছে। এই ফান্ডের আকার ১০০ (একশত) কোটি টাকা, যার ইউনিট প্রতি অভিহিত মূল্য ১০ (দশ) টাকা। সিএমএসএফ স্পন্সর হিসেবে ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। এছাড়াও বিনিয়োগকারীদের দাবি নিষ্পত্তির জন্য মোট ২২ লাখ ৯৬ হাজার টাকার অমীমাংসিত দাবি নিষ্পত্তির আবেদন গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ২১ লাখ ৩৩ হাজার টাকার দাবি নিষ্পত্তি করেছে।

ঢাকা/এসএ