স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ কমলো অর্ধেক

- আপডেট: ০১:০৯:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫
- / ১০৩১৪ বার দেখা হয়েছে
এবার সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (আরএডিপি) আকার ৪৯ হাজার কোটি টাকা কমানো হয়েছে। সংশোধিত এডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের অর্থায়ন ১ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা আর বিদেশি ঋণ ৮১ হাজার কোটি টাকা।
সংশোধিত এডিপিতে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ কমানো হয়েছে স্বাস্থ্যখাত থেকে। প্রায় রেকর্ড পরিমাণে ব্যয় কমিয়ে এখন বরাদ্দ রয়েছে মাত্র ৫ হাজার ৬৬৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা। এডিপিতে স্বাস্থ্যে বরাদ্দ ছিল ১১ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা। বর্তমানে সংশোধিত এডিপিতে মোট বরাদ্দের মাত্র ২ দশমিক ৬২ শতাংশ পেয়েছে স্বাস্থ্যখাত।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
সোমবার (৩ মার্চ) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় সংশোধিত এডিপি পাস হয়। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলনকক্ষে এই সভায় সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এনইসি সভাশেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
চলতি অর্থবছরের আরএডিপিতে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার জন্য মোট বরাদ্দ স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিডি) তুলনায় প্রায় ৫৫ শতাংশ কম। আসন্ন আরএডিপিতে স্বাস্থ্য এবং প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার জন্য মোট ২৩ হাজার ৪৩২ কোটি টাকার তহবিল প্রস্তাব করা হবে। অন্যদিকে, সর্বোচ্চ ৩৬ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা বরাদ্দ স্থানীয় সরকার বিভাগে যাচ্ছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে এক টাকাও খরচ করতে পারেনি ৮৯ প্রকল্প। অন্যদিকে এক শতাংশও কাজ হয়নি ১২১ প্রকল্পে। স্বাস্থ্যখাতের বরাদ্দ কমছে ৫০ শতাংশ। বিদেশি ঋণের বরাদ্দ কমেছে ৮১ হাজার কোটি টাকা।
স্বাস্থ্যসেবায় বরাদ্দ কমানো প্রসঙ্গে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘শিক্ষার অনেক প্রকল্পে দুর্নীতি হচ্ছে। তাই বন্ধ করে দিয়েছি। স্বাস্থ্যসেবা খাতেও বরাদ্দ কমানো হয়েছে। এই দুই খাতেই দুর্নীতি হচ্ছে তার প্রমাণ আমরা পেয়েছি। ফলে অনেক প্রকল্প আমরা বন্ধ করে দিয়েছি।’
এনইসি সভা থেকে জানা গেছে, স্বাস্থ্যসেবায় অবকাঠামো খাতে কাড়ি কাড়ি অর্থ ঢালা হলেও পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা নেই। ফলে মানুষ উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারত-সিঙ্গাপুরসহ নানা দেশে পাড়ি দিচ্ছে। আরএডিপিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষার জন্য তহবিল বরাদ্দ ১৬ হাজার ১৩৫ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ১২ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা করা হয়েছে। আরএডিপিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের জন্য ১১ হাজার ৩৮৮ কোটি থেকে কমিয়ে ৫ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে।
সংশোধিত এডিপিতে শীর্ষ পাঁচটি খাত ৬৩ শতাংশের বেশি অর্থ পেয়েছে। এর মধ্যে বরাদ্দের দিক থেকে শীর্ষে আছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাত। এই খাতের জন্য ৪৮ হাজার ২৫৩ কোটি টাকা বা ২২.৩৪ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। এই খাতে বরাদ্দ রয়েছে ৩১ হাজার ৮৯৮ কোটি টাকা বা ১৪.৭৭ শতাংশ টাকা। তৃতীয় সর্বোচ্চ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ ২০ হাজার ৩৪৯ কোটি টাকা বা ৯.৪২ শতাংশ টাকা। এরপর গৃহায়ণ ও কমিউনিটি সার্ভিসেস খাতের জন্য ১৯ হাজার ৬৪৬ কোটি টাকা বা ৯.১৬ শতাংশ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ন: ব্যাংক খাতে প্রভিশন ঘাটতি এক লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা
এদিকে, বিদ্যুৎ বিভাগের জন্য চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে এডিপিতে বরাদ্দ ৩৩ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ২১ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ ১৮ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ১২ হাজার ১২৯ কোটি টাকা, রেলপথ মন্ত্রণালয় ১০ হাজার ২২৮ কোটি টাকা, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ১০ হাজার ২১১ কোটি টাকা, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ৭ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা এবং সেতু বিভাগ ৫ হাজার ৮৪৮ কোটি টাকা আরএডিপিতে বরাদ্দ পেয়েছে।
ঢাকা/টিএ