১২:৫৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আপিল শুনানি শুরু

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৬:৪১:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২২
  • / ১০৩৭৭ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার ডেথ রেফারেন্স, আসামিদের আপিল ও জেল আপিল শুনানি শুরু হয়েছে।

আজ সোমবার (৫ ডিসেম্বর) বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়। প্রথম দিনের শুনানি শেষে পরবর্তী শুনানির জন্য মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) দিন ধার্য করেছেন আদালত।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। আসামিদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আমিনুল ইসলাম ও মোহাম্মদ শিশির মনির।

পরে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, মামলার আপিল শুনানি শুরু হয়েছে। আজ রাষ্ট্রপক্ষ থেকে মামলার এফআইআর ও চার্জশিটের কিছু অংশ পড়া হয়েছে। আগামী দুদিনের মধ্যে চার্জশিট পড়া শেষ হয়ে যাবে। আশা করি আগামী বছরের প্রথম দিকেই মামলার শুনানি শেষ হবে।

তিনি বলেন, এ মামলার শুনানির জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময় দেখেছি মামলায় ট্রায়াল কোর্টের রায়টি অত্যন্ত যুক্তিগ্রাহ্য। আমাদের প্রত্যাশা, বিচারিক আদালতের রায় উচ্চ আদালতেও বহাল থাকবে। 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মামলার শুনানিতে সব আসামির ব্যাপারেই বক্তব্য থাকবে। তবে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে কোনো আপিল দেখেননি বলে জানান অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি বলেন, তারেক রহমানের যেহেতু কোনো আপিল নেই, সুতরাং তার বিষয়টি আসবে না।

এর আগে গত ২৯ অক্টোবর এ মামলার আপিল শুনানির জন্য বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেন প্রধান বিচারপতি।

আরও পড়ুন: চার প্রতিষ্ঠানে ৩৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ অনুসন্ধানের নির্দেশ

আলোচিত এ মামলায় ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপ-মন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে ফাঁসির দণ্ড দেন বিচারিক আদালত। এছাড়া বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী ও বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন কায়কোবাদসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত।

পরে একই বছরের ২৭ নভেম্বর মামলার বিচারিক আদালতের রায় প্রয়োজনীয় নথিসহ হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় এসে পৌঁছায়।

নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৯ আসামি হলেন—সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফ, জঙ্গি নেতা মাওলানা তাজউদ্দীন, মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, মাওলানা শেখ ফরিদ, মাওলানা আবু সাইদ, মুফতি মঈনউদ্দিন শেখ ওরফে আবু জান্দাল, হাফেজ আবু তাহের, মো. ইউসুফ ভাট ওরফে মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক, মফিজুর রহমান ওরফে মহিবুল্লাহ, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হোসাইন আহমেদ তামিম, রফিকুল ইসলাম ওরফে সবুজ ও মো. উজ্জ্বল ওরফে রতন।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১৯ আসামি হলেন— তারেক রহমান ওরফে তারেক জিয়া (পলাতক), শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ ওরফের আবু ওমর, আবু হোমাইরা ওরফে পীরসাহেব, মাওলানা সাব্বির আহমদ ওরফে আবদুল হান্নান সাব্বির, আরিফ হাসান ওরফে সুজন ওরফে আবদুর রাজ্জাক, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, আবু বকর ওরফে সেলিম হাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফ, মহিবুল মোত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন (পলাতক), আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন (পলাতক), মো. খলিল (পলাতক), জাহাঙ্গীর আলম বদর ওরফে ওস্তাদ জাহাঙ্গীর (পলাতক), মো. ইকবাল (পলাতক), লিটন ওরফে মাওলানা লিটন (পলাতক), হারিছ চৌধুরী (পলাতক), কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ (পলাতক), মুফতি শফিকুর রহমান (পলাতক), মুফতি আবদুল হাই (পলাতক) ও রাতুল আহম্মেদ বাবু ওরফে বাবু ওরফে রাতুল বাবু (পলাতক)।

গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া দুই মামলার রায়সহ প্রায় ৩৭ হাজার ৩৮৫ পাতার নথি ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এসে পৌঁছায়। পরে আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানির জন্য মামলার পেপারবুক তৈরির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। সেই আদেশের ধারাবাহিকতায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সাড়ে ১০ হাজার পৃষ্ঠার পেপারবুক প্রস্তুত করা হয়।

আসামিদের মধ্যে ২২ জন খালাস চেয়ে আপিল করেন। অপরদিকে ১২ জন আসামির জেল আপিল দায়ের হয়।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করা হয়। ওই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা-বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের কয়েকশ নেতাকর্মী। তাদের অনেকে আজও শরীরে গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের আঘাত নিয়ে দুঃসহ জীবনযাপন করছেন। অনেকে চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন।

ঢাকা/টিএ

শেয়ার করুন

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আপিল শুনানি শুরু

আপডেট: ০৬:৪১:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার ডেথ রেফারেন্স, আসামিদের আপিল ও জেল আপিল শুনানি শুরু হয়েছে।

আজ সোমবার (৫ ডিসেম্বর) বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়। প্রথম দিনের শুনানি শেষে পরবর্তী শুনানির জন্য মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) দিন ধার্য করেছেন আদালত।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। আসামিদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আমিনুল ইসলাম ও মোহাম্মদ শিশির মনির।

পরে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, মামলার আপিল শুনানি শুরু হয়েছে। আজ রাষ্ট্রপক্ষ থেকে মামলার এফআইআর ও চার্জশিটের কিছু অংশ পড়া হয়েছে। আগামী দুদিনের মধ্যে চার্জশিট পড়া শেষ হয়ে যাবে। আশা করি আগামী বছরের প্রথম দিকেই মামলার শুনানি শেষ হবে।

তিনি বলেন, এ মামলার শুনানির জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময় দেখেছি মামলায় ট্রায়াল কোর্টের রায়টি অত্যন্ত যুক্তিগ্রাহ্য। আমাদের প্রত্যাশা, বিচারিক আদালতের রায় উচ্চ আদালতেও বহাল থাকবে। 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মামলার শুনানিতে সব আসামির ব্যাপারেই বক্তব্য থাকবে। তবে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে কোনো আপিল দেখেননি বলে জানান অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি বলেন, তারেক রহমানের যেহেতু কোনো আপিল নেই, সুতরাং তার বিষয়টি আসবে না।

এর আগে গত ২৯ অক্টোবর এ মামলার আপিল শুনানির জন্য বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেন প্রধান বিচারপতি।

আরও পড়ুন: চার প্রতিষ্ঠানে ৩৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ অনুসন্ধানের নির্দেশ

আলোচিত এ মামলায় ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপ-মন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে ফাঁসির দণ্ড দেন বিচারিক আদালত। এছাড়া বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী ও বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন কায়কোবাদসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত।

পরে একই বছরের ২৭ নভেম্বর মামলার বিচারিক আদালতের রায় প্রয়োজনীয় নথিসহ হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় এসে পৌঁছায়।

নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৯ আসামি হলেন—সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফ, জঙ্গি নেতা মাওলানা তাজউদ্দীন, মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, মাওলানা শেখ ফরিদ, মাওলানা আবু সাইদ, মুফতি মঈনউদ্দিন শেখ ওরফে আবু জান্দাল, হাফেজ আবু তাহের, মো. ইউসুফ ভাট ওরফে মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক, মফিজুর রহমান ওরফে মহিবুল্লাহ, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হোসাইন আহমেদ তামিম, রফিকুল ইসলাম ওরফে সবুজ ও মো. উজ্জ্বল ওরফে রতন।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১৯ আসামি হলেন— তারেক রহমান ওরফে তারেক জিয়া (পলাতক), শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ ওরফের আবু ওমর, আবু হোমাইরা ওরফে পীরসাহেব, মাওলানা সাব্বির আহমদ ওরফে আবদুল হান্নান সাব্বির, আরিফ হাসান ওরফে সুজন ওরফে আবদুর রাজ্জাক, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, আবু বকর ওরফে সেলিম হাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফ, মহিবুল মোত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন (পলাতক), আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন (পলাতক), মো. খলিল (পলাতক), জাহাঙ্গীর আলম বদর ওরফে ওস্তাদ জাহাঙ্গীর (পলাতক), মো. ইকবাল (পলাতক), লিটন ওরফে মাওলানা লিটন (পলাতক), হারিছ চৌধুরী (পলাতক), কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ (পলাতক), মুফতি শফিকুর রহমান (পলাতক), মুফতি আবদুল হাই (পলাতক) ও রাতুল আহম্মেদ বাবু ওরফে বাবু ওরফে রাতুল বাবু (পলাতক)।

গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া দুই মামলার রায়সহ প্রায় ৩৭ হাজার ৩৮৫ পাতার নথি ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এসে পৌঁছায়। পরে আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানির জন্য মামলার পেপারবুক তৈরির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। সেই আদেশের ধারাবাহিকতায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সাড়ে ১০ হাজার পৃষ্ঠার পেপারবুক প্রস্তুত করা হয়।

আসামিদের মধ্যে ২২ জন খালাস চেয়ে আপিল করেন। অপরদিকে ১২ জন আসামির জেল আপিল দায়ের হয়।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করা হয়। ওই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা-বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের কয়েকশ নেতাকর্মী। তাদের অনেকে আজও শরীরে গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের আঘাত নিয়ে দুঃসহ জীবনযাপন করছেন। অনেকে চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন।

ঢাকা/টিএ