৮০ শতাংশ ব্রোকার হাউজ পরিচালন খরচ নির্বাহ করতে পারছে না: ডিবিএ প্রেসিডেন্ট

- আপডেট: ০৫:১৪:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৪
- / ১০৫০২ বার দেখা হয়েছে
পুঁজিবাজারে গত এক থেকে দেড় বছর শেয়ার লেনদেন নেই বললেই চলে। ৮০ শতাংশ ব্রোকার হাউজ পরিচালন ব্যয় নির্বাহ করতে পারছে না। এতে প্রতিষ্ঠান গুলো টিকে থাকার প্রশ্ন চলে এসেছে বলে মন্তব্য করেন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম।
আজ বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) ডিবিএ আয়োজিত সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
সাইফুল ইসলাম বলেন, ২০১০ সালের পর থেকে বাজারে গতি আসেনি। গত ১৫ বছরে দেশের অর্থনীতির যে উন্নতি হয়েছে তার কোন প্রভাব পুঁজিবাজারে পড়েনি। দেশের অর্থনীতি এগিয়ে গেলেও পুঁজিবাজার পিছিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া নতুন কোম্পানি বাজারে আসা প্রক্রিয়া জটিল। এই বিষয়গুলো পুনঃবিবেচনা করলে বাজার সমৃদ্ধ হবে।
তিনি বলেন, দেশের পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক দুর পিছিয়ে গেছে। বাজারের লেনদেন কমার অন্যতম কারন ফ্লোর প্রাইস। বাজারকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হবে নয়তো স্বাভাবিক ধারায় আসা সম্ভব না।
ডিবিএর প্রেসিডেন্ট বলেন, আইপিও’র বিষয়টি বর্তমানে পর্যালোচনা করার সময় এসেছে। নির্দিষ্টতা খুঁজে বের না করলে সমস্যা সমাধান সম্ভব না। বিগত ৩ বছর লক্ষ্য করলে দেখা যায় বড় অংকে আইপিও কমেছে। এই বিষয়ে গুরুত্ব সঠিক সমস্যা বের করে সমাধান না করা হয় তাহলে বাজারের উন্নতি সম্ভব না।
ডিবিএর প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, মার্কেট বর্তমান পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার সঠিক পরিকল্পনা ও পরামর্শ আপনাদের থেকে আশা করছি। যাতে এই সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা সম্বলিতভাবে কাজ করতে পারি।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাবেক প্রেসিডেন্ট মো. সাইদুর রহমান বলেন, বাজারে ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত না হলে বাজারের উন্নতি সম্ভব না। অন্যদিকে তালিকাভুক্ত অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার সাড়ে ৭ শতাংশ এটা খুবই কম। কর হার বাড়ানোটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, আমরা সব সময় এই বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে আসছি কিন্তু কার্যকরী পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। সুতরাং ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত করতে হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মাজেদা খাতুন বলেন, পুঁজিবাজারে সার্বিক সহযোগিতায় আমরা সাংবাদিকদে সহযোগিতা কামনা করি। সবাই মিলে দেশের শেয়ারবাজারের উন্নয়নে একসাথে কাজ করবো। সবাই যার যার জায়গা থেকে এগিয়ে আসলে শেয়ারবাজারের উন্নয়ন হবে বলে আশা করছি।
ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) সভাপতি গোলাম সামদানী ভুঁইয়া বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি যেভাবে এগিয়ে গেছে সেভাবে পুঁজিবাজার উন্নতি হয়নি। যখন দেশের অর্থনীতি ভালো ছিল তখন যেমন পুঁজিবাজার খারাপ ছিল এখন অর্থনীতি কিছুটা মন্দা যখন তখনও বাজার খারাপই রয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের পুঁজিবাজারে বর্তমানে ফ্লোর প্রাইস একটা বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফ্লোর প্রাইসের কারনে বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি দিন দিন বাড়ছে। সঠিক সময় শেয়ার ক্রয় বিক্রয় করতে না পারায় অনেকের পুঁজি আটকে পড়েছে। এমন পরিস্থিতি থেকে বিনিয়োগকারিরা পরিত্রাণ চায়। সবার প্রত্যাশা বাজারের লেনদেন স্বাভাবিক গতিতে চলুক।
সিএমজেএফের সেক্রেটারি আবু আলী বলেন, সিএমজিএফ পুঁজিবাজারের উন্নয়ন এবং সাংবাদিকদে দক্ষতা বৃদ্ধিতে আমরা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকি। এছাড়া আমরা বিভিন্ন গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করেছি যা বাজারের উন্নয়নে কাজে আসবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাজার উন্নতি করতে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
সিএমজেএফ এর সাবেক সভাপতি জিয়াউর রহমান বলেন, আমরা যদি পুঁজিবাজার ভালো অবস্থানে দেখতে চাই। বাজারে সকল স্টেক হোল্ডারকে নিয়ে যদি একটি ইকো সিস্টেম তৈরি করা যায় তবে বাজারে ভালো ভালো প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত হবে। ফ্লোর প্রাইজ নিয়ে আপনাদের যে উদ্বেগ তা আমরা লিখা-লিখির মাধ্যমে প্রকাশ করেছি। সরাসরিও আমারা তাদের কাছে তুলে ধরেছি৷ এর ফলে যে আস্থার সংকট তৈরি হচ্ছে তা যদি মানুষের মাঝে থেকে যায় তাহলে ভবিষ্যত সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীরা আর বাজারে বিনিয়োগে আগ্রহী হবে না।
ঢাকা/টিএ