০১:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এক দফা দাবিতে আন্দোলনে কৃষি ব্যাংকের ১০ম গ্রেডের কর্মকর্তারা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৬:৪৩:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ১০৩৯১ বার দেখা হয়েছে

দীর্ঘদিন থেকে পদোন্নতি বঞ্চিত হচ্ছে উল্লেখ করে এক দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন কৃষি ব্যাংকের দশম গ্রেডের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, অন্যান্য গ্রেডে তিন বছর পর পর পদোন্নতি হলেও দশম গ্রেডের কর্মকর্তারা ৭-৮ বছরেও পদোন্নতি পান না। এমন পরিস্থিতিতে পদোন্নতির সুষ্ঠু নীতিমালা ও বঞ্চিতদের পদোন্নতির দাবিতে কৃষি ব্যাংকের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ও মানববন্ধন করেছেন তারা।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

আজ শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে বক্তারা বলেন, ৯ম গ্রেড থেকে ওপরে থাকা কর্মকর্তাদের নিয়মিত পদোন্নতি হলেও বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন দশম গ্রেডের কর্মকর্তারা। অথচ কৃষি ব্যাংকের মোট জনবলের অর্ধেকের বেশি দশম গ্রেডের কর্মকর্তা। অন্য গ্রেডের কর্মকর্তাদের বিধান অনুযায়ী ৩ বছর পরপর পদোন্নতি হলেও দশম গ্রেডের কর্মকর্তাদের পদোন্নতির জন্য অপেক্ষা করতে হয় ৭ থেকে ৮ বছর।

বৈষম্যবিরোধী কর্মকর্তাদের দাবি, কৃষি ব্যাংকের মোট ১০ হাজার ২৭ জনবলের মধ্যে ৫ হাজার ২৭২ জন শুধু দশম গ্রেডের কর্মকর্তা। এই সিংহভাগ জনবলই ব্যাংকের প্রাণ। ঋণ আদায়, বিতরণ, আমানত সংগ্রহ, কিংবা প্রাত্যহিক গ্রাহক সেবা এসবের চৌদ্দ আনা কাজই এই গ্রেডের কর্মকর্তারা করে থাকেন। নানা ধরনের অব্যবস্থাপনার মধ্যেও তাই প্রতি বছর বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত সব লক্ষ্যমাত্রা সন্তোষজনকভাবে অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছে। অথচ এই গ্রেডের জনবলই সবচেয়ে বৈষম্যের শিকার।

আরও পড়ুন: বিদেশি বিনিয়োগ খুব একটা পাওয়া যাবে না: অর্থ উপদেষ্টা

বৈষম্যের শিকার দশম গ্রেডের এক কর্মকর্তা বলেন, পদোন্নতির বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও বারবার আশ্বাস দিয়ে উল্টো কর্মকর্তাদের অসন্তোষ মনে আরও ক্রোধের জন্ম দিচ্ছে। ২৭ আগস্ট ব্যবস্থাপনা পরিচালককে স্মারকলিপি দিয়ে দাবির কথা জানিয়ে ৭ কর্মদিবস সময় দেওয়া হলেও অদ্যাবধি কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তাই কর্মকর্তারা মনে করেন- বৈষম্যমূলক এই স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তারা বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে যাবেন।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শওকত আলী বলেন, তাদের দাবির বিষয়ে আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ নেব। আগামীকাল তাদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে। এখন তো আর আন্দোলন করার কারণ নেই। সম্প্রতি এসব দাবি নিয়ে তারা প্রধান উপদেষ্টা, অর্থ উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দিয়েছে। সেখানে দাবি হিসেবে তারা চারটি বিষয় উল্লেখ করেন।

দাবিগুলো হচ্ছে- ১. বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রবিধানমালা, ২০০৮ অনুযায়ী যাদের ৩ বছরের অধিক হয়েছে তারা পদোন্নতিযোগ্য। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো- ১০ম গ্রেড কর্মকর্তা ব্যতীত ৯ম গ্রেড থেকে তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের পদোন্নতি যথাসময়ে নিশ্চিত করা হলেও শুধু ১০ম গ্রেডের কর্মকর্তাদের বারবার বঞ্চিত করা হয়েছে। এমতাবস্থায় সুপারনিউমারি পদ্ধতিতে পদোন্নতিযোগ্য (যাদের ৩ বছরের অধিক হয়েছে) ১০ম গ্রেডের পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি প্রদান করার জন্য দাবি জানাচ্ছি।

২. বৈষম্যমূলক কালাকানুন তথা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পদে পদোন্নতির মাধ্যমে ৫০% ও সরাসরি ৫০% নিয়োগ পদ্ধতি বাতিল করে পদোন্নতির মাধ্যমে ৭৫% ও সরাসরি ২৫% নিয়োগ প্রদান করার জন্য দাবি জানাচ্ছি।

৩. বৈষম্যমূলক ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ অর্গানোগ্রাম সংশোধনপূর্বক সময়োপযোগী নতুন অর্গানোগ্রাম বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে যেখানে অন্যান্য ব্যাংকের মতো অধিক সংখ্যক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও মুখ্য কর্মকর্তা পদ থাকবে।

৪. জুন ও ডিসেম্বর ভিত্তিক পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তাদের পদোন্নতি নিশ্চিতকরণে আপনার সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

এক দফা দাবিতে আন্দোলনে কৃষি ব্যাংকের ১০ম গ্রেডের কর্মকর্তারা

আপডেট: ০৬:৪৩:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দীর্ঘদিন থেকে পদোন্নতি বঞ্চিত হচ্ছে উল্লেখ করে এক দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন কৃষি ব্যাংকের দশম গ্রেডের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, অন্যান্য গ্রেডে তিন বছর পর পর পদোন্নতি হলেও দশম গ্রেডের কর্মকর্তারা ৭-৮ বছরেও পদোন্নতি পান না। এমন পরিস্থিতিতে পদোন্নতির সুষ্ঠু নীতিমালা ও বঞ্চিতদের পদোন্নতির দাবিতে কৃষি ব্যাংকের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ও মানববন্ধন করেছেন তারা।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

আজ শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে বক্তারা বলেন, ৯ম গ্রেড থেকে ওপরে থাকা কর্মকর্তাদের নিয়মিত পদোন্নতি হলেও বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন দশম গ্রেডের কর্মকর্তারা। অথচ কৃষি ব্যাংকের মোট জনবলের অর্ধেকের বেশি দশম গ্রেডের কর্মকর্তা। অন্য গ্রেডের কর্মকর্তাদের বিধান অনুযায়ী ৩ বছর পরপর পদোন্নতি হলেও দশম গ্রেডের কর্মকর্তাদের পদোন্নতির জন্য অপেক্ষা করতে হয় ৭ থেকে ৮ বছর।

বৈষম্যবিরোধী কর্মকর্তাদের দাবি, কৃষি ব্যাংকের মোট ১০ হাজার ২৭ জনবলের মধ্যে ৫ হাজার ২৭২ জন শুধু দশম গ্রেডের কর্মকর্তা। এই সিংহভাগ জনবলই ব্যাংকের প্রাণ। ঋণ আদায়, বিতরণ, আমানত সংগ্রহ, কিংবা প্রাত্যহিক গ্রাহক সেবা এসবের চৌদ্দ আনা কাজই এই গ্রেডের কর্মকর্তারা করে থাকেন। নানা ধরনের অব্যবস্থাপনার মধ্যেও তাই প্রতি বছর বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত সব লক্ষ্যমাত্রা সন্তোষজনকভাবে অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছে। অথচ এই গ্রেডের জনবলই সবচেয়ে বৈষম্যের শিকার।

আরও পড়ুন: বিদেশি বিনিয়োগ খুব একটা পাওয়া যাবে না: অর্থ উপদেষ্টা

বৈষম্যের শিকার দশম গ্রেডের এক কর্মকর্তা বলেন, পদোন্নতির বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও বারবার আশ্বাস দিয়ে উল্টো কর্মকর্তাদের অসন্তোষ মনে আরও ক্রোধের জন্ম দিচ্ছে। ২৭ আগস্ট ব্যবস্থাপনা পরিচালককে স্মারকলিপি দিয়ে দাবির কথা জানিয়ে ৭ কর্মদিবস সময় দেওয়া হলেও অদ্যাবধি কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তাই কর্মকর্তারা মনে করেন- বৈষম্যমূলক এই স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তারা বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে যাবেন।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শওকত আলী বলেন, তাদের দাবির বিষয়ে আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ নেব। আগামীকাল তাদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে। এখন তো আর আন্দোলন করার কারণ নেই। সম্প্রতি এসব দাবি নিয়ে তারা প্রধান উপদেষ্টা, অর্থ উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দিয়েছে। সেখানে দাবি হিসেবে তারা চারটি বিষয় উল্লেখ করেন।

দাবিগুলো হচ্ছে- ১. বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রবিধানমালা, ২০০৮ অনুযায়ী যাদের ৩ বছরের অধিক হয়েছে তারা পদোন্নতিযোগ্য। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো- ১০ম গ্রেড কর্মকর্তা ব্যতীত ৯ম গ্রেড থেকে তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের পদোন্নতি যথাসময়ে নিশ্চিত করা হলেও শুধু ১০ম গ্রেডের কর্মকর্তাদের বারবার বঞ্চিত করা হয়েছে। এমতাবস্থায় সুপারনিউমারি পদ্ধতিতে পদোন্নতিযোগ্য (যাদের ৩ বছরের অধিক হয়েছে) ১০ম গ্রেডের পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি প্রদান করার জন্য দাবি জানাচ্ছি।

২. বৈষম্যমূলক কালাকানুন তথা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পদে পদোন্নতির মাধ্যমে ৫০% ও সরাসরি ৫০% নিয়োগ পদ্ধতি বাতিল করে পদোন্নতির মাধ্যমে ৭৫% ও সরাসরি ২৫% নিয়োগ প্রদান করার জন্য দাবি জানাচ্ছি।

৩. বৈষম্যমূলক ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ অর্গানোগ্রাম সংশোধনপূর্বক সময়োপযোগী নতুন অর্গানোগ্রাম বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে যেখানে অন্যান্য ব্যাংকের মতো অধিক সংখ্যক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও মুখ্য কর্মকর্তা পদ থাকবে।

৪. জুন ও ডিসেম্বর ভিত্তিক পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তাদের পদোন্নতি নিশ্চিতকরণে আপনার সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

ঢাকা/এসএইচ