সিপিডির দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্যে ক্ষুব্ধ পুঁজিবাজার টাস্কফোর্স

- আপডেট: ০৬:৫৮:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
- / ১১০৮৪ বার দেখা হয়েছে
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) প্রতিনিধিদের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্যে ক্ষুব্ধ পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের সদস্যরা। তাদের মতে, সিপিডির মতো স্বনামধন্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য খুবই অপ্রত্যাশিত। তারা যদি বাস্তবতার নিরিখে সঠিত তথ্য-উপাত্ত জেনে মিডিয়াতে বক্তব্য দিত, তাহলে ভালো হতো। কোনো বিষয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করে নিজেদের পপুলার করার কিছু নেই। নিজেদের পপুলার করতে গিয়ে, মিডিয়াতে ভুল তথ্য প্রকাশ করা ঠিক নয়।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
আজ বুধবার (২৮ মে) গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্স সদস্যরা এমন মন্তব্য করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি ২০২৪-২৫ অর্থবছর অবস্থান (তৃতীয় পাঠ)’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, ‘পুঁজিবাজার সংস্কারে একটা টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। কিন্তু, সেখানে খুব একটা অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।’
এ বিষয়ে পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন বলেন, সিপিডির মতো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য আমরা প্রত্যাশা করিনি। পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্স কী কী কাজ করেছে, তা না জেনে মিডিয়াতে ঢালাওভাবে বক্তব্য দেওয়া ঠিক হয়নি। তারা কিন্তু আমাদের প্রত্যেক সদস্যকে চেনেন ও জানেন। আমারা কী কাজ করেছি, তা সিপিডি বিভিন্ন জায়গা থেকে চাইলেই জানতে পারত। প্রয়োজনে তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারত। কিন্তু, তারা সেটা করেনি।
তিনি আরো বলেন, আমাদের এই কমিটি গঠনের পর থেকে পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে বেশ কয়েকটি রিপোর্ট বিএসইসিতে জমা দিয়েছি। গত মঙ্গলবারের (২৭ মে) ৯৫৬তম কমিশন সভায় আমাদের জমা দেওয়া মিউচ্যুয়াল ফান্ড বিধিমালা এবং পাবলিক ইস্যু রুলসের বিষয়ে পেশকৃত চূড়ান্ত সুপারিশমালার আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমাদের ওপর যেসব দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তা জুনের মধ্যে সম্পন্ন করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু, সিপিডির মতো একটি স্বনামধন্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আমরা দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করছিলাম। তারা আমাদের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জেনে-শুনে বক্তব্য দিলে ভালো হতো। সিপিডির কাছে প্রত্যাশা থাকবে, আগামীতে তারা যে রিপোর্ট প্রস্তুত করবে, তাতে সঠিক তথ্য-উপাত্ত দিয়ে এবং বাস্তবতা জেনে যেন রিপোর্ট করে।
পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন বলেন, সিপিডির কাছ থেকে মানুষ দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করে। সিপিডি মিডিয়াতে যে ধরনের স্টেটমেন্ট দিয়েছে, তাতে পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের সদস্যরা চরমভাবে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। কারণ, কোনো কিছু না জেনে-শুনে মিডিয়াতে এভাবে বক্তব্য দিলে সিপিডির রিসার্চের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। তখন মানুষের মনে প্রশ্ন উঠবে, সিপিডি কারো পরপাস সার্ভ করছে কি না? আমার প্রত্যাশা হলো, ভবিষ্যতে জেনে-শুনে মিডিয়াতে তথ্য-উপাত্ত যেন প্রকাশ করে সিপিডি।
আরও পড়ুন: আইএসও সার্টিফিকেশন অর্জন করলো সিটি ব্রোকারেজ
গত বছরের ৭ অক্টোবর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ স্বাক্ষরিত আদেশে পাঁচ সদস্যের ‘পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্স’ গঠন করা হয়। এ টাস্কফোর্স ১৭টি কার্যপরিধি নিয়ে কাজ করছে। গত বছরের ৯ অক্টোবর প্রথম সভার মাধ্যমে কাজ শুরু করে টাস্কফোর্স। ইতোমধ্যে এ কমিটি তিনটি বিষয়ের ওপর তাদের সুপারিশ বিএসইসির কাছে জমা দিয়েছে। বিষয়গুলো হলো—মার্জিন রুলস, মিউচ্যুয়াল ফান্ড রুলস এবং পাবলিক ইস্যু রুলস।
ঢাকা/টিএ