১২:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

খেলাপি ঋণের ভাড়ে বিপর্যস্ত আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১০:৫৪:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ এপ্রিল ২০২১
  • / ১০৪৬৭ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদকঃ করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে নতুন করে কোনো ঋণ খেলাপি হচ্ছে না। এরপরও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণ দুই বছরে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুর্বল তদারকি ব্যবস্থা, প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় অদক্ষতা ও অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে প্রতিনিয়ত দুর্বল হচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসার মডেল প্রায় এক হওয়ার কারণেও ভালো ব্যবসা করতে পারছে না অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান।

মালিকপক্ষের বিভিন্ন অনিয়ম-জালিয়াতি আর অব্যবস্থাপনায় ধুঁকছে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। যাচাই-বাছাই ছাড়াই নিয়মবহির্ভূত বিতরণ করা ঋণ অনেকেই আদায় করতে পারছে না। ফলে করোনা মহামারির সময় বিশেষ সুবিধা দেওয়ার পরও এ খাতে লাগামহীনভাবে বাড়ছে খেলা‌পি ঋণ। তারল্য সংকটে প্রতিনিয়ত দুর্বল হচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো। অনেকে আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে পারছে না। এ অবস্থায় অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ডিসেম্বর শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ৬৬ হাজার ৯২৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৫৩ কোটি টাকা। যা বিতরণ করা মোট ঋণের ১৫ দশমিক ০২ শতাংশ। ২০১৯ সাল শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ৬৭ হাজার ৮০৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ছিল ছয় হাজার ৪৪১ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের সাড়ে ৯ শতাংশ।

এ হিসাবে গত এক বছরের ব্যবধানে (২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত) খেলাপি ঋণ বেড়েছে তিন হাজার ৬১২ কোটি টাকা, অর্থাৎ প্রায় ৩৬ শতাংশ। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণ ছিল পাঁচ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা, যা ওই সময়ের বিতরণ করা ঋণের ৭ দশমিক ৯ শতাংশ। সেই হিসাবে প্রতিষ্ঠানগুলোতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে খারাপ করছে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান। তাদের খেলাপি ঋণ বাড়ছে। এছাড়া করোনার কারণে ঋণ আদায় ব্যাপক কমেছে। বিভিন্ন অনিয়মের খবরে সাধারণ গ্রাহকরা আমানত তুলে নিচ্ছেন। ফলে অনেক প্রতিষ্ঠান তারল্য সংকটে পড়েছে। এদের মধ্যে কমপক্ষে ১০টি প্রতিষ্ঠান আমানতকারীদের সময়মতো টাকা ফেরত দিতে পারছে না। তারল্য সংকট কাটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ১০ হাজার কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিলও চেয়েছে।

ঢাকা/এসএ

 

শেয়ার করুন

খেলাপি ঋণের ভাড়ে বিপর্যস্ত আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো

আপডেট: ১০:৫৪:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ এপ্রিল ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদকঃ করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে নতুন করে কোনো ঋণ খেলাপি হচ্ছে না। এরপরও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণ দুই বছরে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুর্বল তদারকি ব্যবস্থা, প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় অদক্ষতা ও অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে প্রতিনিয়ত দুর্বল হচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসার মডেল প্রায় এক হওয়ার কারণেও ভালো ব্যবসা করতে পারছে না অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান।

মালিকপক্ষের বিভিন্ন অনিয়ম-জালিয়াতি আর অব্যবস্থাপনায় ধুঁকছে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। যাচাই-বাছাই ছাড়াই নিয়মবহির্ভূত বিতরণ করা ঋণ অনেকেই আদায় করতে পারছে না। ফলে করোনা মহামারির সময় বিশেষ সুবিধা দেওয়ার পরও এ খাতে লাগামহীনভাবে বাড়ছে খেলা‌পি ঋণ। তারল্য সংকটে প্রতিনিয়ত দুর্বল হচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো। অনেকে আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে পারছে না। এ অবস্থায় অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ডিসেম্বর শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ৬৬ হাজার ৯২৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৫৩ কোটি টাকা। যা বিতরণ করা মোট ঋণের ১৫ দশমিক ০২ শতাংশ। ২০১৯ সাল শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ৬৭ হাজার ৮০৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ছিল ছয় হাজার ৪৪১ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের সাড়ে ৯ শতাংশ।

এ হিসাবে গত এক বছরের ব্যবধানে (২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত) খেলাপি ঋণ বেড়েছে তিন হাজার ৬১২ কোটি টাকা, অর্থাৎ প্রায় ৩৬ শতাংশ। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণ ছিল পাঁচ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা, যা ওই সময়ের বিতরণ করা ঋণের ৭ দশমিক ৯ শতাংশ। সেই হিসাবে প্রতিষ্ঠানগুলোতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে খারাপ করছে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান। তাদের খেলাপি ঋণ বাড়ছে। এছাড়া করোনার কারণে ঋণ আদায় ব্যাপক কমেছে। বিভিন্ন অনিয়মের খবরে সাধারণ গ্রাহকরা আমানত তুলে নিচ্ছেন। ফলে অনেক প্রতিষ্ঠান তারল্য সংকটে পড়েছে। এদের মধ্যে কমপক্ষে ১০টি প্রতিষ্ঠান আমানতকারীদের সময়মতো টাকা ফেরত দিতে পারছে না। তারল্য সংকট কাটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ১০ হাজার কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিলও চেয়েছে।

ঢাকা/এসএ