ট্রাম্পের শুল্কের প্রভাবে ভারতের পুঁজিবাজারে বড় পতন

- আপডেট: ১২:১০:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ অগাস্ট ২০২৫
- / ১০৩৫০ বার দেখা হয়েছে
ভারতের পুঁজিবাজার গত শুক্রবার বড় পতনের মুখে পড়েছে। সেনসেক্স, নিফটি ৫০ ও ব্যাংক নিফটি—এই তিন প্রধান সূচকেরই মূল্য প্রায় ১ শতাংশ কমেছে। দিনশেষে সেনসেক্স দাঁড়িয়েছে ৭৯,৮৫৭.৭৯ পয়েন্ট (-৭৬৫.৪৭), নিফটি ৫০ হয়েছে ২৪,৩৬৩.৩০ (-২৩২.৮৫) এবং ব্যাংক নিফটি ৫৫,০০৪.৯০ (-৫১৬.২৫) পয়েন্টে।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
বিএসই তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মোট বাজারমূল্য ₹৪৪৫ লাখ কোটি থেকে কমে এক দিনে প্রায় ₹৫ লাখ কোটি রুপিতে নেমে এসেছে। সব খাতে ব্যাপক শেয়ার বিক্রির কারণে এই বিশাল পতন ঘটে। সাপ্তাহিক হিসেবে টানা ছয় সপ্তাহ ধরে সূচকের পতন অব্যাহত রয়েছে। ৮ আগস্ট শেষ হওয়া সপ্তাহে সেনসেক্স ও নিফটি ৫০ উভয়ই প্রায় ১ শতাংশ করে পয়েন্ট হারিয়েছে।
বাজারে বড় ধাক্কা লেগেছে এইচডিএফসি ও ভারতীয় এয়ারটেলের শেয়ারে। নিফটির অধিকাংশ খাতেও বড় দরপতন হয়েছে। নিফটি স্মল ক্যাপ ও মিড ক্যাপ যথাক্রমে ১.৪ শতাংশ ও ১.১ শতাংশ কমেছে। ব্যাংক খাত ভালো মুনাফার মুখ দেখিয়েছে, পাশাপাশি ধাতু খাতেও কিছুটা লাভ হয়েছে। তবে আইটি, ফাইন্যান্স, জ্বালানি, অয়েল অ্যান্ড গ্যাস, এফএমসিজি ও ওষুধ খাতের বড় পতন লক্ষ্য করা গেছে।
বড় কোম্পানির মধ্যে আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ার দর প্রায় ৭ শতাংশ কমেছে। বস্ত্র রপ্তানি কোম্পানি কেপিআর মিল, গোকলদাস এক্সপোর্ট, বর্ধমান টেক্সটাইল ও ট্রিডেন্টের শেয়ার দরও অনেকটাই কমেছে। এর বিপরীতে হিরো মোটোকর্প ও এলআইসির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
দ্য মিন্টের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের শুল্ক নীতির জেরে ভারতের বাজার আগেই বড় ধাক্কা খেয়েছে। কোম্পানিগুলোর আয় কমে যাওয়া, অতিমূল্যায়ন এবং বিপুল পরিমাণ বিদেশি পুঁজি বেরিয়ে যাওয়ার উদ্বেগ এখনো কাটেনি। ট্রাম্পের সাম্প্রতিক শুল্ক আরোপ ও আক্রমণাত্মক অবস্থান বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন শঙ্কা সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ৫০ শতাংশ শুল্কের কারণে ভারতের জিডিপি ১ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে।
আরও পড়ুন: বিনিয়োগকারীদের মূলধন বাড়লো দুই হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা
জিওজিত ইনভেস্টমেন্টসের গবেষণাপ্রধান বিনোদ নায়ার বলেন, মার্কিন শুল্ক ভারতের রপ্তানিতে কী প্রভাব ফেলবে—এ আশঙ্কায় ভারতীয় পুঁজিবাজার তিন মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে। বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা টানা শেয়ার বিক্রি করায় দেশি সূচকের ওপর চাপ আরও বেড়েছে।
নায়ার আরও জানান, শুল্কসংক্রান্ত চলমান উদ্বেগের প্রভাবে বৈশ্বিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে দিয়েছে। ২০২৫ ও ২০২৬ সালের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসও কমানো হয়েছে। ফলে ভারতের বাণিজ্য ও সামষ্টিক অর্থনীতি ঘিরে অনিশ্চয়তা বাড়ছে।
বিদেশি বিনিয়োগেও প্রভাব পড়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বিপুল অঙ্কের বিদেশি পুঁজি ভারত থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। মার্চ থেকে পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হলেও জুলাই থেকে বিদেশি বিনিয়োগ ফের নেতিবাচক প্রবণতায় ফিরে এসেছে। আগস্ট মাসেও এই ধারা অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/এসএইচ