০৪:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

‎পাবনার সব রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০২:১৯:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫
  • / ১০৩১২ বার দেখা হয়েছে

পাবনা থেকে সব রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট চলছে। ‎আজ বুধবার (১৩ আগস্ট) সকাল থেকে পাবনা থেকে ঢাকাসহ অন্যান্য রুটে বাস, ট্রাকসহ অন্যান্য পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। তারা বিকল্প উপায়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

‎জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে পাবনার ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া মোড় থেকে মাই লাইন পরিবহনে যাত্রী তোলা নিয়ে বিআরটিসি বাসের শ্রমিকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর নাটোর গিয়েও আবারও কথা কাটাকাটি হয় তাদের মধ্যে। রাজশাহীর বানেশ্বরে যাত্রী তোলা নিয়ে বিআরটিসি ও মাই লাইন বাসের শ্রমিকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে মাই লাইন বাস শ্রমিকদের মারধর করে বিআরটিসি বাস শ্রমিকরা।

‎এ ঘটনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নকে জানালে বিষয়টি গতকাল রাতেই মিমাংসা করে দেওয়ার কথা বলেন মোটর শ্রমিকের নেতারা। এ ঘটনায় রাত ৮টার দিকে মিমাংসা করতে বসে আছেন মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন। এমন মিমাংসা করতে বসে বিআরটিসি বাসের শ্রমিকরা লাঠিসোটা ও জিআই পাইপ দিয়ে মোটরশ্রমিক ইউনিয়ন পাবনা কার্যালয়ে ব্যাপক হামলা চালিয়ে শ্রমিকদের মারধর করে চলে যায়। এছাড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয় পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।

এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল রাত ১০টার দিকে মোটর শ্রমিকদের মিটিংয়ে পরিবহন ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে সন্ত্রাসীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ভোর থেকে কোনো পরিবহন চলবে না। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে পাবনা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন।

‎এদিকে সব ধরনের বাস ট্রাক বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।‎ আনারুল ইসলাম নামের একজন যাত্রী বলেন, আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করি। ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে দেখি বাস বন্ধ। বাধ্য হয়েই বাড়িতে ফিরে যাচ্ছি।

যাত্রী বলেন, ঢাকায় একটি ছোট চাকরি করি। কয়েকদিনের জন্য বাড়িতে আসছিলাম। গতকাল বিকেলের দিকে ঢাকায় যাব বলে টিকিটও কেটেছিলাম। কিন্তু সকালে এসে দেখি সব বাস বন্ধ। উপায় না পেয়ে অটোনিকশাযোগে কাজিরহাট ফেরিঘাটে গিয়ে ওদিক দিয়ে ঢাকায় যেতে হবে। বাড়তি ভোগান্তির শিকার হতে হবে।

আরও পড়ুন: শিক্ষকদের সচিবালয় অভিমুখী যাত্রা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বড় প্রস্তুতি

এক যাত্রী বলেন, মাঝেমধ্যেই দেখি বাস বন্ধ। আসলে এসব কেন হয় বুঝে আসে না। শ্রমিকদের ব্যবহার দিন দিন এতো খারাপ হচ্ছে যে আমরা যাত্রীদের নাজেহাল হতে হয়। কথায় কথায় বাস বন্ধ থাকে। এটা কোন নিয়ম হলো।

‎পাবনা জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক ফিরোজ খান বলেন, গতকাল রাজশাহীর বানেশ্বরে যাত্রী তোলা নিয়ে বিআরটিসি ও মাই লাইন বাসের শ্রমিকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে মাই লাইন বাস শ্রমিকদের মারধর করে বিআরটিসি বাস শ্রমিকরা। এ নিয়ে গত রাত ৮টায় পাবনায় উভয়পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসেন মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন নেতারা। কিন্তু সেখানেও আলোচনার এক পর্যায়ে বিআরটিসি বাস শ্রমিকরা মাই লাইন বাস শ্রমিকদের মারধর করে চলে যায়। তারই প্রতিবাদে ও জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবিতে আজ সকাল থেকে সব রুটে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি। পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে বলে জানা গেছে।

পাবনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম বলেন, সব শ্রমিক সংগঠনকে ডেকেছি। বুদ্ধি পরামর্শ করে বিষয়টি আজকেই সমাধান করে দেওয়া হবে।

ঢাকা/এসএইচ

ট্যাগঃ

শেয়ার করুন

‎পাবনার সব রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট

আপডেট: ০২:১৯:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫

পাবনা থেকে সব রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট চলছে। ‎আজ বুধবার (১৩ আগস্ট) সকাল থেকে পাবনা থেকে ঢাকাসহ অন্যান্য রুটে বাস, ট্রাকসহ অন্যান্য পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। তারা বিকল্প উপায়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

‎জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে পাবনার ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া মোড় থেকে মাই লাইন পরিবহনে যাত্রী তোলা নিয়ে বিআরটিসি বাসের শ্রমিকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর নাটোর গিয়েও আবারও কথা কাটাকাটি হয় তাদের মধ্যে। রাজশাহীর বানেশ্বরে যাত্রী তোলা নিয়ে বিআরটিসি ও মাই লাইন বাসের শ্রমিকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে মাই লাইন বাস শ্রমিকদের মারধর করে বিআরটিসি বাস শ্রমিকরা।

‎এ ঘটনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নকে জানালে বিষয়টি গতকাল রাতেই মিমাংসা করে দেওয়ার কথা বলেন মোটর শ্রমিকের নেতারা। এ ঘটনায় রাত ৮টার দিকে মিমাংসা করতে বসে আছেন মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন। এমন মিমাংসা করতে বসে বিআরটিসি বাসের শ্রমিকরা লাঠিসোটা ও জিআই পাইপ দিয়ে মোটরশ্রমিক ইউনিয়ন পাবনা কার্যালয়ে ব্যাপক হামলা চালিয়ে শ্রমিকদের মারধর করে চলে যায়। এছাড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয় পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।

এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল রাত ১০টার দিকে মোটর শ্রমিকদের মিটিংয়ে পরিবহন ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে সন্ত্রাসীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ভোর থেকে কোনো পরিবহন চলবে না। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে পাবনা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন।

‎এদিকে সব ধরনের বাস ট্রাক বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।‎ আনারুল ইসলাম নামের একজন যাত্রী বলেন, আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করি। ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে দেখি বাস বন্ধ। বাধ্য হয়েই বাড়িতে ফিরে যাচ্ছি।

যাত্রী বলেন, ঢাকায় একটি ছোট চাকরি করি। কয়েকদিনের জন্য বাড়িতে আসছিলাম। গতকাল বিকেলের দিকে ঢাকায় যাব বলে টিকিটও কেটেছিলাম। কিন্তু সকালে এসে দেখি সব বাস বন্ধ। উপায় না পেয়ে অটোনিকশাযোগে কাজিরহাট ফেরিঘাটে গিয়ে ওদিক দিয়ে ঢাকায় যেতে হবে। বাড়তি ভোগান্তির শিকার হতে হবে।

আরও পড়ুন: শিক্ষকদের সচিবালয় অভিমুখী যাত্রা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বড় প্রস্তুতি

এক যাত্রী বলেন, মাঝেমধ্যেই দেখি বাস বন্ধ। আসলে এসব কেন হয় বুঝে আসে না। শ্রমিকদের ব্যবহার দিন দিন এতো খারাপ হচ্ছে যে আমরা যাত্রীদের নাজেহাল হতে হয়। কথায় কথায় বাস বন্ধ থাকে। এটা কোন নিয়ম হলো।

‎পাবনা জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক ফিরোজ খান বলেন, গতকাল রাজশাহীর বানেশ্বরে যাত্রী তোলা নিয়ে বিআরটিসি ও মাই লাইন বাসের শ্রমিকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে মাই লাইন বাস শ্রমিকদের মারধর করে বিআরটিসি বাস শ্রমিকরা। এ নিয়ে গত রাত ৮টায় পাবনায় উভয়পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসেন মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন নেতারা। কিন্তু সেখানেও আলোচনার এক পর্যায়ে বিআরটিসি বাস শ্রমিকরা মাই লাইন বাস শ্রমিকদের মারধর করে চলে যায়। তারই প্রতিবাদে ও জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবিতে আজ সকাল থেকে সব রুটে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি। পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে বলে জানা গেছে।

পাবনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম বলেন, সব শ্রমিক সংগঠনকে ডেকেছি। বুদ্ধি পরামর্শ করে বিষয়টি আজকেই সমাধান করে দেওয়া হবে।

ঢাকা/এসএইচ