সাকিবের প্রতিষ্ঠানসহ ৮ ব্রোকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ

- আপডেট: ০১:১৩:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫
- / ১০২৩৭ বার দেখা হয়েছে
পুঁজিবাজারের সদস্যভুক্ত ৮টি ব্রোকারেজ হাউজ বা ট্রেকহোল্ডারের বিরুদ্ধে সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী নিট সম্পদের (এনএভি) ঘাটতি থাকার অভিযোগ উঠেছে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তদন্তে এমন তথ্য উঠে এসেছে। এরই ধারাবাহিকতায় তদন্তের ভিত্তিতে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
সম্প্রতি ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
ব্রোকারেজ হাউজগুলোর নাম হলো- মোনার্ক হোল্ডিংস লিমিটেড, মীর সিকিউরিটিজ লিমিটেড, কলম্বিয়া শেয়ারস অ্যান্ড সিকিউরিটিজ লিমিটেড, উইংসফিন লিমিটেড, ফারিহা সিকিউরিটিজ লিমিটেড, অ্যাসুরেন্ট সিকিউরিটিজ অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, ম্যাট্রিক্স সিকিউরিটিজ লিমিটেড এবং তাসিয়া সিকিউরিটিজ লিমিটেড।
নিট সম্পদ মূল্যে ঘটতি থাকা ব্রোকারেজ হাউজগুলোর তালিকায় সাকিব আল হাসানের প্রতিষ্ঠানের নামও রয়েছে। তার প্রতিষ্ঠানের নাম মোনার্ক হোল্ডিংস লিমিটেড। তিনি মোনার্ক হোল্ডিংসের চেয়ারম্যান। আর এ প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন সমবায় অধিদপ্তরে উপ-নিবন্ধক আবুল খায়ের হিরুর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান। সাকিব ও হিরু ব্যবসায়িক অংশীদার। এছাড়া নিট সম্পদ মূল্যে ঘটতি থাকা ব্রোকারেজ হাউজগুলোর তালিকায় রয়েছে মীর আখতার হোসেন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ ফেডারেশন অব চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন। তার প্রতিষ্ঠানের নাম হলো মীর সিকিউরিটিজ লিমিটেড। তিনি মীর সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান।
আরও পড়ুন: মার্জিন ঋণ নীতিমালা চূড়ান্ত হলে পুঁজিবাজারে বড় ধস নেমে আসতে পারে: বিসিএমআইএ
বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের একাধিক চিঠির অনুরোধের ভিত্তিতে, কমিশন ৮টি ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। তদন্তে ওই ট্রেকহোল্ডার ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির নিট সম্পদে ঘাটতি পেয়েছে কমিশন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট) বিধিমালা, ২০২০-এর বিধি ৭(৪) অনুসারে, ডিএসইকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। সেই সঙ্গে তদন্ত প্রতিবেদনের একটি অনুলিপি ডিএসইকে প্রেরণ করা হলো।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট) রুলস ২০২০ এর রুল ৩(গ) অনুযায়ী, যে কোনো ব্রোকারেজ হাউজের নিট সম্পদ মূল্য (এনএভি) পরিশোধিত মূলধনের ৭৫ শতাংশের বেশি থাকতে হবে। কিন্তু নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে নিট সম্পদ কম থাকায় প্রতিষ্ঠানগুলোরর সার্বিক কার্যক্রম খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।
এদিকে ব্রোকারেজ হাউজের নিট সম্পদ পরিশোধিত মূলধনের ৭৫ শতাংশের বেশি রাখার একটি বিধান রয়েছে, যা সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী ব্রোকারেজ লাইসেন্স পেতে বা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিদ্যমান কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। এই বিধানটি যেসব ব্রোকারেজ হাউজ পরিপালন করে তারা আর্থিক দিক থেকে শক্তিশালী এবং বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দিতে সক্ষম।
এছাড়া ব্রোকারেজ হাউজগুলোর আর্থিক স্বচ্ছলতা নিশ্চিত করতে নিট সম্পদ পরিশোধিত মূলধনের ৭৫ শতাংশের বেশি রাখা নিশ্চিত করা হয়, যা ব্রোকারেজ হাউজগুরোকে আর্থিকভাবে যথেষ্ট শক্তিশালী করে। আর বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে এটি একটি শক্তিশালী আর্থিক ভিত্তি। একইসঙ্গে ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে তাদের কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করতে এবং বিনিয়োগকারীদের অর্থ সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: ‘মার্জিন বিধিমালা ২০২৫’র খসড়া অনুমোদন দিয়েছে বিএসইসি
এ শর্ত পরিপালন করতে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট) রুলস ২০২০ এর রুল ৭(২) এর অধীনে ট্রেক সার্টিফিকেট বাতিল করার বিধান রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম বলেন, “বিএসইসির তদন্তে ৮টি ব্রোকারেজ হাউজের নিট সম্পদের ঘাটতি পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠানগুলো সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করেছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ডিএসইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
ঢাকা/এসএইচ