০৮:১৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আরামিট সিমেন্টের আর্থিক দুর্বলতাসহ নানা ইস্যুতে তদন্ত কমটি গঠন

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১২:৪০:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ১০৫৩৫ বার দেখা হয়েছে

পুঁজিবাজারে সিমেন্ট খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি আরামিট সিমেন্টের পরিচালনা বিগত ছয় বছরের পরিচালনা কর্মদক্ষতাসহ আর্থিক দুর্বলতা যাচাই করতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গঠিত তদন্ত কমিটিকে আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।

সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি তদন্তের আদেশ জারি করা হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে। তদন্ত পরিচালনার বিষয়টি আরামিট সিমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অবহিত করা হয়েছে।

আরামিট সিমেন্টের বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- বিএসইসি’র উপপরিচালক মো. মুস্তাফিজুর রহমান, সহকারী পরিচালক মো. শাকিল আহমেদ ও সহকারী পরিচালক আলী আহসান।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বিএসইসি’র জারি করা আদেশে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন মনে করে, পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে আরামিট সিমেন্টের ২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সময়ে পরিচালনা কর্মদক্ষতা অনুসন্ধান করা প্রয়োজন। তাই, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ (১৯৬৯ সালের অধ্যাদেশ নং- ১৭) এর ২১ ধারা এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩ এর ১৭ক ধারা অনুযায়ী আরামিট সিমেন্টের পরিচালনা কর্মদক্ষতা অনুসন্ধানে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো। তদন্ত কমিটিতে বিএসইসির কর্মকর্তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হলো। তদন্ত কর্মকর্তারা এই আদেশ জারির ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে বিএসইসি’র কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দেবেন।

জানা গেছে, সহযোগী কোম্পানিগুলোকে অবৈধভাবে ঋণ দেওয়ায় বিপাকে পড়েছে আরামিট সিমেন্ট। গত পাঁচ বছরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি তার ছয় সহযোগীকে কোনও সুদ ছাড়াই ৭৭.২১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। তালিকাভুক্ত কোম্পানি ঋণের সুদব্যয় বহন করছে। ফলে শেয়ারহোল্ডাররা তাদের প্রত্যাশিত মুনাফা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

আরামিট সিমেন্ট টানা পাঁচ বছর পর শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা দিয়েছে। কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ সর্বশেষ ২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ঘোষিত ৫ শতাংশ নগদ অন্তর্র্বতী লভ্যাংশকে চূড়ান্ত লভ্যাংশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে।

এদিকে সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা শেষে দেখা গেছে, কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১৬.৮৮ টাকা। গত হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ০.৬০ টাকা। ২০২২ সালের ৩০ জুন কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১২.৫৮ টাকায়। এর আগে, আরামিট সিমেন্ট সর্বশেষ ২০১৬ সালে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

আরও পড়ুন: ক্যাশ ডিভিডেন্ড পাঠিয়েছে ১৫ কোম্পানি

এছাড়া চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর, ২০২২) কোম্পানিটির লোকসান বেড়েছে। প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ২.৬৪ টাকা। আগের হিসাবে বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ১.৯৬ টাকা। ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৯.৯৬ টাকা।

প্রসঙ্গত, আরামিট সিমেন্ট পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ১৯৯৮ সালে। ‘বি’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৩৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। সে হিসেবে কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৩ কোটি ৩৮ লাখ ৮০ হাজার। এর মধ্যে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকের হাতে ৪৫.৯২ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৯.৫৪ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৪৪.৫৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) আরামিট সিমেন্টের শেয়ার সর্বশেষ ২৪.৯০ টাকায় লেনদেন হয়েছে।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

আরামিট সিমেন্টের আর্থিক দুর্বলতাসহ নানা ইস্যুতে তদন্ত কমটি গঠন

আপডেট: ১২:৪০:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

পুঁজিবাজারে সিমেন্ট খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি আরামিট সিমেন্টের পরিচালনা বিগত ছয় বছরের পরিচালনা কর্মদক্ষতাসহ আর্থিক দুর্বলতা যাচাই করতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গঠিত তদন্ত কমিটিকে আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।

সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি তদন্তের আদেশ জারি করা হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে। তদন্ত পরিচালনার বিষয়টি আরামিট সিমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অবহিত করা হয়েছে।

আরামিট সিমেন্টের বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- বিএসইসি’র উপপরিচালক মো. মুস্তাফিজুর রহমান, সহকারী পরিচালক মো. শাকিল আহমেদ ও সহকারী পরিচালক আলী আহসান।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বিএসইসি’র জারি করা আদেশে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন মনে করে, পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে আরামিট সিমেন্টের ২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সময়ে পরিচালনা কর্মদক্ষতা অনুসন্ধান করা প্রয়োজন। তাই, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ (১৯৬৯ সালের অধ্যাদেশ নং- ১৭) এর ২১ ধারা এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩ এর ১৭ক ধারা অনুযায়ী আরামিট সিমেন্টের পরিচালনা কর্মদক্ষতা অনুসন্ধানে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো। তদন্ত কমিটিতে বিএসইসির কর্মকর্তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হলো। তদন্ত কর্মকর্তারা এই আদেশ জারির ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে বিএসইসি’র কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দেবেন।

জানা গেছে, সহযোগী কোম্পানিগুলোকে অবৈধভাবে ঋণ দেওয়ায় বিপাকে পড়েছে আরামিট সিমেন্ট। গত পাঁচ বছরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি তার ছয় সহযোগীকে কোনও সুদ ছাড়াই ৭৭.২১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। তালিকাভুক্ত কোম্পানি ঋণের সুদব্যয় বহন করছে। ফলে শেয়ারহোল্ডাররা তাদের প্রত্যাশিত মুনাফা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

আরামিট সিমেন্ট টানা পাঁচ বছর পর শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা দিয়েছে। কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ সর্বশেষ ২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ঘোষিত ৫ শতাংশ নগদ অন্তর্র্বতী লভ্যাংশকে চূড়ান্ত লভ্যাংশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে।

এদিকে সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা শেষে দেখা গেছে, কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১৬.৮৮ টাকা। গত হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ০.৬০ টাকা। ২০২২ সালের ৩০ জুন কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১২.৫৮ টাকায়। এর আগে, আরামিট সিমেন্ট সর্বশেষ ২০১৬ সালে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

আরও পড়ুন: ক্যাশ ডিভিডেন্ড পাঠিয়েছে ১৫ কোম্পানি

এছাড়া চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর, ২০২২) কোম্পানিটির লোকসান বেড়েছে। প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ২.৬৪ টাকা। আগের হিসাবে বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ১.৯৬ টাকা। ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৯.৯৬ টাকা।

প্রসঙ্গত, আরামিট সিমেন্ট পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ১৯৯৮ সালে। ‘বি’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৩৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। সে হিসেবে কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৩ কোটি ৩৮ লাখ ৮০ হাজার। এর মধ্যে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকের হাতে ৪৫.৯২ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৯.৫৪ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৪৪.৫৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) আরামিট সিমেন্টের শেয়ার সর্বশেষ ২৪.৯০ টাকায় লেনদেন হয়েছে।

ঢাকা/এসএ