০৮:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

তাপদাহে অস্থির জনজীবন

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০১:২৭:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ এপ্রিল ২০২৩
  • / ১০৫০২ বার দেখা হয়েছে

বৈশাখের আগেই ভয়াবহ তাপদাহে অস্থির হয়ে উঠেছে জনজীবন। কয়েক দিন ধরে হাঁসফাঁস অবস্থা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাথার ওপর গনগনে সূর্য এমন দাপট দেখাচ্ছে যে, মানুষ তো বটেই, ভুগছে প্রাণপ্রকৃতিও। বৈরী আবহাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বয়স্ক ব্যক্তি ও শিশুরা। এক সপ্তাহ আগে দেশের পাঁচ জেলা দিয়ে শুরু হওয়া তাপপ্রবাহ এখন দেশের প্রায় সব এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার এ বছরের সবচেয়ে উত্তপ্ত দিন কেটেছে। এ দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শিগগিরই স্বস্তির সুখবর তো নেই-ই, উল্টো এমন দশা চলতে পারে আরও বেশ কয়েক দিন। আবহাওয়াবিদরাও বলছেন, গরমের তেজ আগামী কয়েক দিনে ৪০ থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসও ছুঁতে পারে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

মঙ্গলবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম বিভাগসহ দিনাজপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম এবং নেত্রকোনা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে; যা আরও সাত দিন অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনে তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতে তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকবে। তবে রাজশাহী, খুলনা ও ঢাকা বিভাগের দু-এক জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে বয়ে যেতে পারে তীব্র আকারে তাপপ্রবাহ।

অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, যে তাপপ্রবাহ চলছে, তা নিয়ে আমরা সতর্কবার্তা দিয়েছি। এখন যে তাপপ্রবাহ চলছে, তাকে আমরা মৃদু থেকে মাঝারি বলছি। কিন্তু যখন তাপমাত্রা ৪০-৪২ ডিগ্রিতে চলে যাবে, তখন সেটি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে চিহ্নিত হবে। এ কারণেই সতর্কবার্তা দেওয়া।

কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বিভিন্ন দেশের আবহাওয়া মডেল পর্যবেক্ষণ করে বলেন, ২১ এপ্রিল পর্যন্ত রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। ২২ এপ্রিল থেকে কমতে পারে তাপমাত্রা। চলমান তাপপ্রবাহের প্রভাব অপেক্ষাকৃত কম পড়বে রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে। এই সময়ে সিলেট বিভাগের জেলাগুলোতে দিনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকতে পারে। ২৩ এপ্রিলের আগে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগ ছাড়া দেশের অন্যান্য বিভাগের জেলাগুলোতে বৃষ্টি কিংবা কালবৈশাখীর সম্ভাবনা নেই। ২১ এপ্রিল রাতে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের ভারতীয় সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে বৃষ্টি হতে পারে। ২৪ এপ্রিলের পর থেকে ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে শুরু হতে পারে ভারী বৃষ্টিপাত। ফলে ২৫ এপ্রিলের পর সিলেটের হাওরে পাহাড়ি ঢল নামার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ছাড়া রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের জেলাগুলোতে ২৬ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে কালবৈশাখীর কারণে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

আরও পড়ুন: হজযাত্রীদের বায়োমেট্রিক শুরু ১৬ এপ্রিল

এদিকে এমন বৈরী আবহাওয়া ফসলের জন্য বিপদ ডেকে আনছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, তাপপ্রবাহের কারণে বিভিন্ন এলাকায় বোরো ধানের জমি রোদে শুকিয়ে চৌচির হয়ে গেছে। দেখা দিয়েছে সেচের পানির সংকট। এই সময়ে কৃষি ও ফসলের সুরক্ষায় বেশকিছু সতর্কতামূলক পরামর্শ দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

ঢাকা/এসএম

শেয়ার করুন

error: Content is protected ! Please Don't Try!

তাপদাহে অস্থির জনজীবন

আপডেট: ০১:২৭:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ এপ্রিল ২০২৩

বৈশাখের আগেই ভয়াবহ তাপদাহে অস্থির হয়ে উঠেছে জনজীবন। কয়েক দিন ধরে হাঁসফাঁস অবস্থা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাথার ওপর গনগনে সূর্য এমন দাপট দেখাচ্ছে যে, মানুষ তো বটেই, ভুগছে প্রাণপ্রকৃতিও। বৈরী আবহাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বয়স্ক ব্যক্তি ও শিশুরা। এক সপ্তাহ আগে দেশের পাঁচ জেলা দিয়ে শুরু হওয়া তাপপ্রবাহ এখন দেশের প্রায় সব এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার এ বছরের সবচেয়ে উত্তপ্ত দিন কেটেছে। এ দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শিগগিরই স্বস্তির সুখবর তো নেই-ই, উল্টো এমন দশা চলতে পারে আরও বেশ কয়েক দিন। আবহাওয়াবিদরাও বলছেন, গরমের তেজ আগামী কয়েক দিনে ৪০ থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসও ছুঁতে পারে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

মঙ্গলবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম বিভাগসহ দিনাজপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম এবং নেত্রকোনা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে; যা আরও সাত দিন অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনে তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতে তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকবে। তবে রাজশাহী, খুলনা ও ঢাকা বিভাগের দু-এক জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে বয়ে যেতে পারে তীব্র আকারে তাপপ্রবাহ।

অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, যে তাপপ্রবাহ চলছে, তা নিয়ে আমরা সতর্কবার্তা দিয়েছি। এখন যে তাপপ্রবাহ চলছে, তাকে আমরা মৃদু থেকে মাঝারি বলছি। কিন্তু যখন তাপমাত্রা ৪০-৪২ ডিগ্রিতে চলে যাবে, তখন সেটি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে চিহ্নিত হবে। এ কারণেই সতর্কবার্তা দেওয়া।

কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বিভিন্ন দেশের আবহাওয়া মডেল পর্যবেক্ষণ করে বলেন, ২১ এপ্রিল পর্যন্ত রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। ২২ এপ্রিল থেকে কমতে পারে তাপমাত্রা। চলমান তাপপ্রবাহের প্রভাব অপেক্ষাকৃত কম পড়বে রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে। এই সময়ে সিলেট বিভাগের জেলাগুলোতে দিনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকতে পারে। ২৩ এপ্রিলের আগে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগ ছাড়া দেশের অন্যান্য বিভাগের জেলাগুলোতে বৃষ্টি কিংবা কালবৈশাখীর সম্ভাবনা নেই। ২১ এপ্রিল রাতে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের ভারতীয় সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে বৃষ্টি হতে পারে। ২৪ এপ্রিলের পর থেকে ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে শুরু হতে পারে ভারী বৃষ্টিপাত। ফলে ২৫ এপ্রিলের পর সিলেটের হাওরে পাহাড়ি ঢল নামার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ছাড়া রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের জেলাগুলোতে ২৬ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে কালবৈশাখীর কারণে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

আরও পড়ুন: হজযাত্রীদের বায়োমেট্রিক শুরু ১৬ এপ্রিল

এদিকে এমন বৈরী আবহাওয়া ফসলের জন্য বিপদ ডেকে আনছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, তাপপ্রবাহের কারণে বিভিন্ন এলাকায় বোরো ধানের জমি রোদে শুকিয়ে চৌচির হয়ে গেছে। দেখা দিয়েছে সেচের পানির সংকট। এই সময়ে কৃষি ও ফসলের সুরক্ষায় বেশকিছু সতর্কতামূলক পরামর্শ দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

ঢাকা/এসএম