অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা বন্ধ করুন, রোগীর অর্থ ও সময় বাঁচান: আসিফ নজরুল

- আপডেট: ০২:০৯:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫
- / ১০৩২৬ বার দেখা হয়েছে
বেসরকারি স্বাস্থ্য খাতে রোগীদের অপ্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং অযথা চিকিৎসা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, দেশের রোগীদের বিদেশি চিকিৎসার দিকে ঝুঁকির পরিবর্তে দেশের চিকিৎসকদের প্রতি আস্থা বাড়ানো জরুরি।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
শনিবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর মিন্টু রোডে শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে বাংলাদেশ প্রাইভেট হসপিটাল, ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএইচসিডিওএ) নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে এসব কথা বলেন তিনি।
আসিফ নজরুল বলেন, রোগীদের বিদেশি চিকিৎসার দিকে ঝুঁকির পরিবর্তে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি আস্থা বাড়াতে আমাদের চিকিৎসকদের দায়িত্বপূর্ণ আচরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোগীর সমস্যাকে মন দিয়ে শুনুন। অপ্রয়োজনীয় ও অযথা পরীক্ষা এবং অযথা ওষুধ ব্যবহার বন্ধ করুন। এটি শুধু রোগীর আর্থিক বোঝা কমাবে না, দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতাও বাড়াবে।
নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, আমার বাসার একজন কাজের লোক চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন। তাকে ১৪টি পরীক্ষা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে সে গ্রামে গিয়ে অন্য চিকিৎসকের কাছে কোনো পরীক্ষা ছাড়াই সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছে। এই ঘটনা প্রমাণ করে, অনেক সময় রোগীকে অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা দিয়ে হয়রানি করা হয় এবং এতে রোগীকে অযথা খরচ বহন করতে হয়। আমাদের লক্ষ্য হলো এই ধরনের পরিস্থিতি নির্মূল করা।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, চিকিৎসকরা রোগীর অর্থ ও সময় বাঁচিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা দিন। অযথা পরীক্ষা ও ওষুধের ব্যবহার রোগীর ওপর আর্থিক বোঝা সৃষ্টি করে এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতাও ক্ষুণ্ন করে।
আরও পড়ুন: ‘প্রধান উপদেষ্টা যেই মাসে বলেছেন, সেই মাসেই নির্বাচন হবে’
অনুষ্ঠানে অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও ল্যাবএইড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ এম শামীম বলেন, ভুল চিকিৎসার অভিযোগে কাউকে তদন্ত ছাড়া গ্রেপ্তার না করতে অনুরোধ করছি। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিলে এতে আমাদের আপত্তি নেই। এছাড়া আমরা একটি ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি করতে যাচ্ছি, যাতে দেশের সব বেসরকারি হাসপাতালের তথ্য থাকবে। বর্তমানে আমাদের সদস্য সংখ্যা ২৬০০। আমরা এটি ৩ থেকে ৪ হাজারে উন্নীত করব। এছাড়া শুধু মানসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানকে আমাদের সদস্য করা হবে, নিম্নমানের বা নিয়ম মানা প্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে না। এই উদ্যোগের মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাত আরও স্বচ্ছ, নিরাপদ এবং নিয়ন্ত্রিত হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন— স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সাইদুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ডা. মো. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল।
অভিষেক অনুষ্ঠানের কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল ১১টায় অতিথিদের আগমন, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, স্টল উদ্বোধন, কুরআন থেকে তিলাওয়াত এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে প্রতিষ্ঠাতা ও মালিকরা নতুন নেতৃত্বকে স্বাগত জানান এবং স্বাস্থ্য খাতের মান উন্নয়ন, রোগীর সেবা নিরাপদ করা এবং সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একযোগে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন।
ঢাকা/এসএইচ