০৩:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

অবৈধ শেয়ার ইস্যু, ড্যাফোডিলের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১০:৫৫:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫
  • / ১০৩৫৭ বার দেখা হয়েছে

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স লিমিটেড-এর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে শেয়ার ইস্যু করার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে তদন্তে নেমেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি সম্প্রতি দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

বিএসইসির একটি সূত্র জানায়, সংস্থাটির মার্কেট ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগ থেকে শর্তসাপেক্ষে এ-সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে। ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।

তদন্ত কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মো. ওহিদুল ইসলাম এবং সহকারী পরিচালক রেজাউন নূর মেহেদী।

বিএসইসি সূত্র জানায়, ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের ২৭তম বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) অধিকাংশ শেয়ারহোল্ডারের মতামত উপেক্ষা করে পরিচালকদের আত্মীয়-স্বজনদের নামে ৪ কোটি ৬৭ লাখ শেয়ার ১০ টাকা ফেস ভ্যালুতে ইস্যু করার প্রস্তাব পাশ করা হয়।

এই ইস্যুতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন ছাড়াই শেয়ার ইস্যু করার অভিযোগ উঠেছে, যা আইন অনুযায়ী অবৈধ। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে তদন্তে নামে বিএসইসি।

ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের পরিচালনা পর্ষদ জানিয়েছে, তারা কোম্পানির কর্ণধার ড্যাফোডিল পরিবারের কাছ থেকে নেওয়া ঋণকে শেয়ারে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই লক্ষ্যে তারা প্রতিটি শেয়ার ১০ টাকা দরে ৪.৬৭ কোটি শেয়ার ইস্যু করেছে।

কিন্তু কোম্পানির এ সিদ্ধান্ত শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন ছাড়াই কার্যকর করা হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের একাংশ মনে করছে, বিনা অনুমতিতে ও অনৈতিকভাবে স্বজনদের নামে শেয়ার ইস্যু করে বড় ধরনের অনিয়ম করা হয়েছে।

বিএসইসি বলেছে, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ২১ অনুযায়ী তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এদিকে, ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণ অনুযায়ী, ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) করেছে মাত্র ০.০১ টাকা, যেখানে আগের বছর ছিল ০.৫৪ টাকা। এ বছর শেয়ারহোল্ডারদের ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি।

একই সময় কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৩.২৪ টাকা।

২০০৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স বর্তমানে ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানি। এর মোট পরিশোধিত মূলধন ৪৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা এবং মোট শেয়ার সংখ্যা প্রায় ৫ কোটি।

আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারকে দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের উৎস করতে যৌথ কমিটির সভায় আলোচনা

২০২৫ সালের ৩১ মে পর্যন্ত কোম্পানির উদ্যোক্তাদের হাতে রয়েছে ৪১.৪০ শতাংশ শেয়ার, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৪.১১ শতাংশ, বিদেশিদের কাছে ০.১০ শতাংশ, এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৪.৩৯ শতাংশ।

এ ছাড়া কোম্পানিটির স্বল্প মেয়াদি ঋণ রয়েছে ২৯ কোটি ১১ লাখ টাকা এবং দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ ৮২১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।

সবশেষ গত ৩০ জুন ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের শেয়ার লেনদেন হয়েছে প্রতি শেয়ার ৫৪ টাকায়।

ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স মূলত আইটি সলিউশন, কম্পিউটার অ্যাসেম্বলিং ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

অবৈধ শেয়ার ইস্যু, ড্যাফোডিলের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন

আপডেট: ১০:৫৫:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স লিমিটেড-এর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে শেয়ার ইস্যু করার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে তদন্তে নেমেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি সম্প্রতি দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

বিএসইসির একটি সূত্র জানায়, সংস্থাটির মার্কেট ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগ থেকে শর্তসাপেক্ষে এ-সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে। ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।

তদন্ত কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মো. ওহিদুল ইসলাম এবং সহকারী পরিচালক রেজাউন নূর মেহেদী।

বিএসইসি সূত্র জানায়, ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের ২৭তম বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) অধিকাংশ শেয়ারহোল্ডারের মতামত উপেক্ষা করে পরিচালকদের আত্মীয়-স্বজনদের নামে ৪ কোটি ৬৭ লাখ শেয়ার ১০ টাকা ফেস ভ্যালুতে ইস্যু করার প্রস্তাব পাশ করা হয়।

এই ইস্যুতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন ছাড়াই শেয়ার ইস্যু করার অভিযোগ উঠেছে, যা আইন অনুযায়ী অবৈধ। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে তদন্তে নামে বিএসইসি।

ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের পরিচালনা পর্ষদ জানিয়েছে, তারা কোম্পানির কর্ণধার ড্যাফোডিল পরিবারের কাছ থেকে নেওয়া ঋণকে শেয়ারে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই লক্ষ্যে তারা প্রতিটি শেয়ার ১০ টাকা দরে ৪.৬৭ কোটি শেয়ার ইস্যু করেছে।

কিন্তু কোম্পানির এ সিদ্ধান্ত শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন ছাড়াই কার্যকর করা হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের একাংশ মনে করছে, বিনা অনুমতিতে ও অনৈতিকভাবে স্বজনদের নামে শেয়ার ইস্যু করে বড় ধরনের অনিয়ম করা হয়েছে।

বিএসইসি বলেছে, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ২১ অনুযায়ী তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এদিকে, ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণ অনুযায়ী, ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) করেছে মাত্র ০.০১ টাকা, যেখানে আগের বছর ছিল ০.৫৪ টাকা। এ বছর শেয়ারহোল্ডারদের ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি।

একই সময় কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৩.২৪ টাকা।

২০০৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স বর্তমানে ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানি। এর মোট পরিশোধিত মূলধন ৪৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা এবং মোট শেয়ার সংখ্যা প্রায় ৫ কোটি।

আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারকে দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের উৎস করতে যৌথ কমিটির সভায় আলোচনা

২০২৫ সালের ৩১ মে পর্যন্ত কোম্পানির উদ্যোক্তাদের হাতে রয়েছে ৪১.৪০ শতাংশ শেয়ার, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৪.১১ শতাংশ, বিদেশিদের কাছে ০.১০ শতাংশ, এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৪.৩৯ শতাংশ।

এ ছাড়া কোম্পানিটির স্বল্প মেয়াদি ঋণ রয়েছে ২৯ কোটি ১১ লাখ টাকা এবং দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ ৮২১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।

সবশেষ গত ৩০ জুন ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের শেয়ার লেনদেন হয়েছে প্রতি শেয়ার ৫৪ টাকায়।

ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স মূলত আইটি সলিউশন, কম্পিউটার অ্যাসেম্বলিং ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত।

ঢাকা/এসএইচ