অস্ত্র প্রতিযোগিতার অর্থ জলবায়ু অভিঘাত থেকে রক্ষায় ব্যবহার করুন: প্রধানমন্ত্রী

- আপডেট: ০১:২০:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ মে ২০২৪
- / ১০৩৭২ বার দেখা হয়েছে
বিশ্বে শান্তি নিশ্চিত করা এখন আগের চেয়ে অনেক কঠিন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বর্তমানে প্রযুক্তির প্রসারের সঙ্গে বাড়ছে নতুন নতুন হুমকি। ফলে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনগুলোর শান্তিরক্ষীদের বহুমাত্রিক জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
বুধবার (২৯ মে) সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ দিবস-২০২৪’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা বিশ্বের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ও বিপজ্জনক অঞ্চলে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারে, সেজন্য তাদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আমরা অন্যতম বৃহৎ নারী শান্তিরক্ষী দেশ হিসেবেও পরিচিতি লাভ করেছি। বর্তমানে ৩ হাজার ৩৮ জন নারী শান্তিরক্ষী অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে জাতিসংঘের শান্তি মিশন সম্পন্ন করেছেন। এখন দাবি আসছে, আরও নারী শান্তিরক্ষী পাঠানোর।
আরও পড়ুন: ফিচের রেটিং: ঋণমানে ফের বাংলাদেশের অবনমন
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে দ্বন্দ্ব, সংঘাত, যুদ্ধ, আজ বিশ্ব শান্তি বিঘ্নিত করছে। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ, গাজা ইসরাইলের হামলায় হাজার হাজার নিরীহ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্টীকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা ইত্যাদি মানবজাতির জন্য এক ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।
‘আমি ঠিক জানি না, এই সংঘাত বা এই যুদ্ধ মানবজাতির জন্য কি কল্যাণ বয়ে আনছে। অস্ত্র প্রতিযোগিতা প্রতিনিয়ত যত বৃদ্ধি পাচ্ছে, মানুষের জীবনও তত বেশি দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। বিশেষ করে নারী শিশু, তারা সব থেকে বেশি কষ্ট পাচ্ছে। যুবকরা অকাতরে জীবন দিচ্ছে।”
সরকারপ্রধান বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না শান্তি চাই। আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সব কিছু সমাধান করতে চাই। বিশ্বের এক বিশাল সংখক মানুষ এখনও দারিদ্র্যসীমার নিচে রয়েছে। কেটি কোটি মানুষ দু-বেলা খাবার পায় না। শিশুরা শিক্ষা পায় না। শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। যারা অস্ত্র তৈরি এবং অস্ত্র প্রতিযোগিতায় এত অর্থ ব্যয় করছে, তাদের কাছে আমার আহ্বান, আমরা শান্তির কথা বলি কিন্তু সংঘাতে লিপ্ত হই কেন?
‘এই যে অর্থ ব্যয় হচ্ছে, এই অর্থ যদি ক্ষুধার্ত মানুষের আহারের ব্যবস্থায়, শিক্ষায় ব্যবহার করা হতো, চিকিৎসায় ব্যবহার করা হতো তাহলে মানুষের জীবনমান আরও উন্নত হতো, মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচতে পারতো। কিন্তু এই সংঘাত মানুষকে আরও কষ্টের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, সংঘাত না, যদি কোনো সমস্যা থাকে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা, সেটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কাজ। অস্ত্র তৈরি আর প্রতিযোগিতা এই অর্থটা যে সমস্ত দেশ এখনও জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে যাচ্ছে, সেই জলবায়ু অভিঘাত থেকে মানবজাতিকে রক্ষার জন্য সেই ফান্ডে সেই অর্থ দিতে পারে এবং ক্ষুধার্ত এবং শিক্ষা বঞ্চিতদের মধ্যে ক্ষুধা নিবৃত্বের জন্য ব্যবহার করতে পারে। সেই আহ্বানটি সকলকে জানিয়ে যাচ্ছি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ অনুসরণ করে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যে সমস্ত দেশে আমাদের শান্তিরক্ষি বাহিনী কাজ করছে, তাদের রাষ্ট্রপ্রধান সরকারপ্রধান বা মন্ত্রীদের সাথে দেখা হয় প্রত্যেকেই আমাদের শান্তিরক্ষিদের ভূয়সী প্রসংস্যা করে। আর এই প্রসংশা শুনে আমার গর্ভে বুক ভরে যায়।
‘জাতির পিতার আদর্শ অনুসরণ করে আমরা বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছি। শান্তি রক্ষা মিশন ছাড়াও আমরা অন্যান্য আন্তর্জাতিক ফোরাম গুলোতে অবদান রেখে যাচ্ছি।”
প্রতিনিয়ত নারী শান্তিরক্ষিদের চাহিদা বাড়ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বে বৃহৎ নারী শান্তিরক্ষি প্রেরণকারী দেশ হিসেবেও পরিচিতি লাভ করছে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশে সর্বমোট ৩ হাজার ৮০০ নারী শান্তিরক্ষী বাহিনীতে অত্যন্ত সফলতার সাথে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন সম্পন্ন করেছে।
ঢাকা/এইচআর