০২:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪

আজকের দিনে টাঙ্গাইলে উড়েছিল বিজয়ের পতাকা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১২:৪০:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২২
  • / ১০৪৩১ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: আজ ১১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে টাঙ্গাইল শহরে ওড়ানো হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। মুক্তির আনন্দে ওইদিন হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে টাঙ্গাইল।

দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ ও পলায়নের মধ্য দিয়ে মুক্ত হয় টাঙ্গাইল। ১০ ডিসেম্বর সারারাত গোলাগুলিতে বিনিদ্র রাত কাটায় শহর ও শহরতলীর লোকজন। অবশেষে সেই কাঙ্ক্ষিত দিন ও মুহূর্তটি আসে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই হাজার হাজার উৎফুল্ল জনতা রাস্তায় নেমে আসে এবং মুক্তির আনন্দকে স্মরণীয় করে তোলে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

যুদ্ধকালীন টাঙ্গাইলের অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসিকতাপূর্ণ কাহিনী দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়ে। বীর মুক্তিযোদ্ধা কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে গঠিত ‘কাদেরিয়া বাহিনী’র বীরত্বের কথা দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে চিরস্মরণীয়।

এপ্রিল থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত টাঙ্গাইল, জামালপুর, শেরপুর, কিশোরগঞ্জ, সিলেট, সিরাজগঞ্জ ও পাবনায় কাদেরিয়া বাহিনী যুদ্ধ চালিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের পর্যুদস্ত করে। যুদ্ধে টাঙ্গাইলে ৩০০ দেশপ্রেমিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে টাঙ্গাইল অঞ্চলের প্রধান কাদের সিদ্দিকী সখীপুরের মহানন্দা ও কীর্ত্তনখোলায় গড়ে তুলেন দুর্ভেদ্য দুর্গ। এরপর আক্রমণের মুখে পাকস্তানি সেনারা যখন গুটিয়ে জেলার অন্যান্য স্থান থেকে এসে টাঙ্গাইল শহরে অবস্থান নেয়, তখন উত্তর ও দক্ষিণ টাঙ্গাইল ছিল সম্পূর্ণ মুক্তিবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। 

৮ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল আক্রমণের পরিকল্পনা করা হয়। মিত্র বাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাদের পুংলি নামক স্থানে সংঘর্ষ হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে প্রাণ ভয়ে পাকিস্তানি সেনারা টাঙ্গাইল ছেড়ে ঢাকার দিকে পালিয়ে যায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী চারদিক থেকে সারাশি আক্রমণ চালিয়ে তাদের টাঙ্গাইল থেকে বিতাড়িত করে কাদেরিয়া বাহিনী। 

১০ ডিসেম্বর রাতে টাঙ্গাইল প্রবেশ করেন কমান্ডার আব্দুর রাজ্জাক ভোলা। ১১ ডিসেম্বর সকালে কমান্ডার বায়োজিদ ও খন্দকার আনোয়ার টাঙ্গাইল পৌঁছান। এরপর আসেন বিগ্রেডিয়ার ফজলুর রহমান। পরে সার্কিট হাউসে অবস্থানরত পাকিস্তানি সেনাদের কাদের সিদ্দিকীর কাছে আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হয় টাঙ্গাইল। স্বাধীনতার পর এই দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে টাঙ্গাইলবাসী।

আরও পড়ুন:জেনে নিন রাশিফল

এই উপলক্ষে টাঙ্গাইল পৌরসভার উদ্যোগে শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে ১২ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রথম দিনের টাঙ্গাইল হানাদার মুক্ত দিবসের উদ্বোধন করবেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুক। প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের প্রেসিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি 

টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র ও অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব এসএম সিরাজুল হক আলমগীরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি থাকবেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম এমপি, সংসদ সদস্য মো. ছানোয়ার হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক জেলা কমান্ডার ফজলুল হক বীর প্রতীক প্রমুখ। ১২ দিন আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পর্যায়ের শীর্ষ পদে থাকা নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তি উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

ঢাকা/এসএম

শেয়ার করুন

x

আজকের দিনে টাঙ্গাইলে উড়েছিল বিজয়ের পতাকা

আপডেট: ১২:৪০:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: আজ ১১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে টাঙ্গাইল শহরে ওড়ানো হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। মুক্তির আনন্দে ওইদিন হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে টাঙ্গাইল।

দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ ও পলায়নের মধ্য দিয়ে মুক্ত হয় টাঙ্গাইল। ১০ ডিসেম্বর সারারাত গোলাগুলিতে বিনিদ্র রাত কাটায় শহর ও শহরতলীর লোকজন। অবশেষে সেই কাঙ্ক্ষিত দিন ও মুহূর্তটি আসে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই হাজার হাজার উৎফুল্ল জনতা রাস্তায় নেমে আসে এবং মুক্তির আনন্দকে স্মরণীয় করে তোলে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

যুদ্ধকালীন টাঙ্গাইলের অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসিকতাপূর্ণ কাহিনী দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়ে। বীর মুক্তিযোদ্ধা কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে গঠিত ‘কাদেরিয়া বাহিনী’র বীরত্বের কথা দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে চিরস্মরণীয়।

এপ্রিল থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত টাঙ্গাইল, জামালপুর, শেরপুর, কিশোরগঞ্জ, সিলেট, সিরাজগঞ্জ ও পাবনায় কাদেরিয়া বাহিনী যুদ্ধ চালিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের পর্যুদস্ত করে। যুদ্ধে টাঙ্গাইলে ৩০০ দেশপ্রেমিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে টাঙ্গাইল অঞ্চলের প্রধান কাদের সিদ্দিকী সখীপুরের মহানন্দা ও কীর্ত্তনখোলায় গড়ে তুলেন দুর্ভেদ্য দুর্গ। এরপর আক্রমণের মুখে পাকস্তানি সেনারা যখন গুটিয়ে জেলার অন্যান্য স্থান থেকে এসে টাঙ্গাইল শহরে অবস্থান নেয়, তখন উত্তর ও দক্ষিণ টাঙ্গাইল ছিল সম্পূর্ণ মুক্তিবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। 

৮ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল আক্রমণের পরিকল্পনা করা হয়। মিত্র বাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাদের পুংলি নামক স্থানে সংঘর্ষ হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে প্রাণ ভয়ে পাকিস্তানি সেনারা টাঙ্গাইল ছেড়ে ঢাকার দিকে পালিয়ে যায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী চারদিক থেকে সারাশি আক্রমণ চালিয়ে তাদের টাঙ্গাইল থেকে বিতাড়িত করে কাদেরিয়া বাহিনী। 

১০ ডিসেম্বর রাতে টাঙ্গাইল প্রবেশ করেন কমান্ডার আব্দুর রাজ্জাক ভোলা। ১১ ডিসেম্বর সকালে কমান্ডার বায়োজিদ ও খন্দকার আনোয়ার টাঙ্গাইল পৌঁছান। এরপর আসেন বিগ্রেডিয়ার ফজলুর রহমান। পরে সার্কিট হাউসে অবস্থানরত পাকিস্তানি সেনাদের কাদের সিদ্দিকীর কাছে আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হয় টাঙ্গাইল। স্বাধীনতার পর এই দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে টাঙ্গাইলবাসী।

আরও পড়ুন:জেনে নিন রাশিফল

এই উপলক্ষে টাঙ্গাইল পৌরসভার উদ্যোগে শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে ১২ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রথম দিনের টাঙ্গাইল হানাদার মুক্ত দিবসের উদ্বোধন করবেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুক। প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের প্রেসিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি 

টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র ও অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব এসএম সিরাজুল হক আলমগীরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি থাকবেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম এমপি, সংসদ সদস্য মো. ছানোয়ার হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক জেলা কমান্ডার ফজলুল হক বীর প্রতীক প্রমুখ। ১২ দিন আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পর্যায়ের শীর্ষ পদে থাকা নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তি উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

ঢাকা/এসএম