০৩:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪

ইউরোপে বায়ুদূষণে বছরে ১ হাজার ২০০ শিশু মারা যায়

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৭:৫০:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৩
  • / ৪১৬২ বার দেখা হয়েছে

বায়ুদূষণে ইউরোপের ২৭টি দেশে প্রতি বছর ১ হাজার ২শ’রও বেশি শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কের মৃত্যু হয়। ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পরিবেশ গবেষণা সংস্থা ইইউ এনভায়র্নমেন্টাল এজেন্সি সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর ইইউভুক্ত দেশগুলোতে ১ হাজার ২শ’রও বেশি শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কের মৃত্যু হয়। এর বাইরে শ্বাসতন্ত্রের দীর্ঘস্থায়ী বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় আরও কয়েক হাজার শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্ক।

আরও বলা হয়, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) স্বাস্থ্যকর বাতাসের মানদণ্ড দিয়েছে, ইউরোপের অনেক দেশের বাতাস সেই মানদণ্ডের ধারেকাছেও নেই। ইতালি ও পূর্ব ইউরোপ অঞ্চলের দেশগুলোর অবস্থা সবচেয়ে বাজে।’

ইইউয়ের সদস্য ২৭টি দেশের তথ্যের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছে এই গবেষনা প্রতিবেদনটি। যুক্তরাজ্য, রাশিয়া ও ইউক্রেনের তথ্য নেওয়া হয়নি। তবে যদি নেওয়া হতো, সেক্ষেত্রে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়ত বলে মনে করেন ইইউর গবেষক দলের প্রতিনিধিরা।

ইউরোপে বায়ুদূষণ পরিস্থিতি নিয়ে এর আগে ২০২২ সালের নভেম্বরে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল ইইউ এনভায়র্নমেন্টাল এজেন্সি। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ২০২০ সালে ইইউ, আইসল্যান্ড, লিচটেনস্টেইন, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড এবং তুরস্কে বায়ুদুষণজনিত কারণে মারা ২ লাখ ৩৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

এই মৃতদের তালিকায় শিশু,তরুণ-তরুণী, মধ্যবয়স্ক ও বৃদ্ধ— সববয়সী মানুষকেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। কেবলমাত্র শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের ওপর ভিত্তিক এই প্রথম বায়ুদূষণজনিত গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইইউ।

বায়ুদূষণের কারণে ইউরোপের শিশুরা বর্তমানে ব্যাপক ঝুঁকিতে আছে উল্লেখ করে গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—‘ইউরোপে প্রতিবছর যত শিশুর জন্ম হয়, তাদের ৯ শতাংশই জন্মগতভাবে হাঁপানি, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ ও ফুসফুসের বিভিন্ন সমস্যায় ভোগে। এসব সমস্যার প্রধান এবং প্রায় একমাত্র কারণ বায়ুদূষণ।’

এছাড়া ২০২১ সালে ইউরোপের নগরাঞ্চলগুলোতে বসবাসরত লোকজনের ৯৭ শতাংশ নিয়মিত দুষিত বায়ুতে নিঃশ্বাস নিতে বাধ্য বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন গবেষকরা।

‘বর্তমানে ইউরোপের মোট যে জনসংখ্যা, সেই হিসেবে এক বছরে ১ হাজার ২০০ শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কের মৃত্যু হয়তো তেমন গুরুত্বপূর্ণ কোনো সংখ্যা নয়, কিন্তু যদি আমরা জীবনের সম্ভাবনার বিষয়টি বিবেচনায় নেই, সেক্ষেত্রে প্রতিটি প্রাণই অমূল্য। সেই সঙ্গে যারা শ্বাসতন্ত্রের দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত হন, তাদেরকে সারাজীবন যন্ত্রণা বয়ে বেড়াতে হয়,’ উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণা প্রতিবেদনে।

ইউরোপে বায়ুদূষণের প্রধান কারণ যানবাহন ও কলকারখানা থেকে নিঃসৃত ধোঁয়ার মধ্যে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বস্তুকণার উপস্থিতি। ১৯৯০ সালে বায়ুদূষণজনিত কারণে ইউরোপে প্রায় ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

চলতি শতকের শুরুর দিকে অবশ্য এই হারে নিম্নমূখী প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ২০০৫ সালে মহাদেশটিতে বায়ুদূষণজনিত কারণে মৃতের সংখ্যা নেমে আসে ৪ লাখ ৩১ হাজারে। এখনও এই হারে বেশি পরিবর্তন আসেনি।

ডব্লিউএইচও’র তথ্য অনুয়ায়ী, বর্তমানে বায়ুদূষণজনিত সমস্যার কারণে প্রতি বছর বিশ্বে গড়ে ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়।

ঢাকা/টিএ

শেয়ার করুন

x

ইউরোপে বায়ুদূষণে বছরে ১ হাজার ২০০ শিশু মারা যায়

আপডেট: ০৭:৫০:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৩

বায়ুদূষণে ইউরোপের ২৭টি দেশে প্রতি বছর ১ হাজার ২শ’রও বেশি শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কের মৃত্যু হয়। ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পরিবেশ গবেষণা সংস্থা ইইউ এনভায়র্নমেন্টাল এজেন্সি সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর ইইউভুক্ত দেশগুলোতে ১ হাজার ২শ’রও বেশি শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কের মৃত্যু হয়। এর বাইরে শ্বাসতন্ত্রের দীর্ঘস্থায়ী বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় আরও কয়েক হাজার শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্ক।

আরও বলা হয়, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) স্বাস্থ্যকর বাতাসের মানদণ্ড দিয়েছে, ইউরোপের অনেক দেশের বাতাস সেই মানদণ্ডের ধারেকাছেও নেই। ইতালি ও পূর্ব ইউরোপ অঞ্চলের দেশগুলোর অবস্থা সবচেয়ে বাজে।’

ইইউয়ের সদস্য ২৭টি দেশের তথ্যের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছে এই গবেষনা প্রতিবেদনটি। যুক্তরাজ্য, রাশিয়া ও ইউক্রেনের তথ্য নেওয়া হয়নি। তবে যদি নেওয়া হতো, সেক্ষেত্রে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়ত বলে মনে করেন ইইউর গবেষক দলের প্রতিনিধিরা।

ইউরোপে বায়ুদূষণ পরিস্থিতি নিয়ে এর আগে ২০২২ সালের নভেম্বরে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল ইইউ এনভায়র্নমেন্টাল এজেন্সি। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ২০২০ সালে ইইউ, আইসল্যান্ড, লিচটেনস্টেইন, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড এবং তুরস্কে বায়ুদুষণজনিত কারণে মারা ২ লাখ ৩৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

এই মৃতদের তালিকায় শিশু,তরুণ-তরুণী, মধ্যবয়স্ক ও বৃদ্ধ— সববয়সী মানুষকেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। কেবলমাত্র শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের ওপর ভিত্তিক এই প্রথম বায়ুদূষণজনিত গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইইউ।

বায়ুদূষণের কারণে ইউরোপের শিশুরা বর্তমানে ব্যাপক ঝুঁকিতে আছে উল্লেখ করে গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—‘ইউরোপে প্রতিবছর যত শিশুর জন্ম হয়, তাদের ৯ শতাংশই জন্মগতভাবে হাঁপানি, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ ও ফুসফুসের বিভিন্ন সমস্যায় ভোগে। এসব সমস্যার প্রধান এবং প্রায় একমাত্র কারণ বায়ুদূষণ।’

এছাড়া ২০২১ সালে ইউরোপের নগরাঞ্চলগুলোতে বসবাসরত লোকজনের ৯৭ শতাংশ নিয়মিত দুষিত বায়ুতে নিঃশ্বাস নিতে বাধ্য বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন গবেষকরা।

‘বর্তমানে ইউরোপের মোট যে জনসংখ্যা, সেই হিসেবে এক বছরে ১ হাজার ২০০ শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কের মৃত্যু হয়তো তেমন গুরুত্বপূর্ণ কোনো সংখ্যা নয়, কিন্তু যদি আমরা জীবনের সম্ভাবনার বিষয়টি বিবেচনায় নেই, সেক্ষেত্রে প্রতিটি প্রাণই অমূল্য। সেই সঙ্গে যারা শ্বাসতন্ত্রের দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত হন, তাদেরকে সারাজীবন যন্ত্রণা বয়ে বেড়াতে হয়,’ উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণা প্রতিবেদনে।

ইউরোপে বায়ুদূষণের প্রধান কারণ যানবাহন ও কলকারখানা থেকে নিঃসৃত ধোঁয়ার মধ্যে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বস্তুকণার উপস্থিতি। ১৯৯০ সালে বায়ুদূষণজনিত কারণে ইউরোপে প্রায় ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

চলতি শতকের শুরুর দিকে অবশ্য এই হারে নিম্নমূখী প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ২০০৫ সালে মহাদেশটিতে বায়ুদূষণজনিত কারণে মৃতের সংখ্যা নেমে আসে ৪ লাখ ৩১ হাজারে। এখনও এই হারে বেশি পরিবর্তন আসেনি।

ডব্লিউএইচও’র তথ্য অনুয়ায়ী, বর্তমানে বায়ুদূষণজনিত সমস্যার কারণে প্রতি বছর বিশ্বে গড়ে ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়।

ঢাকা/টিএ