০৮:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪

ইডিএফ ঋণের সীমা কমলো ৫০ লাখ ডলার

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৭:০৮:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০২৩
  • / ৪২১০ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

ডলার সংকট ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্তের কারণে এর আগে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) আকার ৭ বিলিয়ন থেকে ৬ বিলিয়ন করা, ঋণস্থিতি কমানো এবং আদায় জোরদার করতে দফায়-দফায় সুদহার বাড়ানো, তদারকি জোরদারসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ধীরে ধীরে এই তহবিলের আকার ছোট করতে রপ্তানিকারকদের ঋণের সীমা ৫০ লাখ ডলার কমিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আজ রোববার (৯ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ এ নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) ও বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সদস্যরা দুই কোটি ডলার পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন। আগে এই ঋণের সীমা ছিল ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। বাংলাদেশ ডাইড ইয়ার্ন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিওয়াইইএ) সদস্যরা ঋণ নিতে পারবেন সর্বোচ্চ এক কোটি ডলার। আগে তাঁদের ঋণের সীমা ছিল ১ কোটি ৫০ লাখ ডলার।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, আইএমএফ থেকে প্রতিশ্রুত ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার ঋণের অন্যতম শর্ত হলো, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের হিসাবায়ন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে হবে। এর ফলে ইডিএফসহ বিভিন্ন তহবিলে জোগান দেওয়া বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের হিসাবে দেখানো যাবে না। এ শর্তের পর এরই মধ্যে ইডিএফের আকার ৭ বিলিয়ন ডলার থেকে কমিয়ে ৬ বিলিয়ন ডলারে নামানো হয়েছে। ঋণ আদায় সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে তহবিলের আকার ছোট করা হচ্ছে। তবে রপ্তানিকারকরা যেন সমস্যায় না পড়েন, সে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দিতে ১০ হাজার কোটি টাকার আলাদা একটি তহবিল করেছে। এর অংশ হিসেবে ধীরে ধীরে এই তহবিলের আকার ছোট করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সে জন্য রপ্তানিকারকদের ঋণের সীমা ৫০ লাখ ডলার করে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সালে ৩৮ লাখ ৭২ হাজার ডলার নিয়ে গঠিত ইডিএফের আকার ধীরে ধীরে বাড়িয়ে ৭ বিলিয়ন বা ৭০০ কোটি ডলারে উন্নীত করা হয়। তবে এখন এই ঋণের সীমা ৬ বিলিয়ন বা ৬০০ কোটি ডলারের বেশি উঠতে দিচ্ছে না বাংলাদেশ ব্যাংক।

এদিকে ইডিএফের বিকল্প হিসেবে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ১০ হাজার কোটি টাকার রপ্তানি সহায়ক তহবিল গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। মূলত রিজার্ভের ডলার দিয়ে গঠিত রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) ওপর চাপ কমাতে গঠন করা হয় কম সুদের এই রপ্তানি সহায়ক তহবিল। তবে গত তিন মাসে মূলত এই তহবিলের ঋণের সুবিধা নিয়েছেন তারল্য-সংকটে পড়া ছয় ব্যাংকের গ্রাহকেরা। সব মিলিয়ে এসব ব্যাংকের কাছে গেছে ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।

আরও পড়ুন: বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সুদমুক্ত ঋণসহ ডিসিসিআইয়ের একগুচ্ছ সুপারিশ

এর মধ্যে পাঁচটিই ইসলামি ধারার ব্যাংক এবং একটি রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক। সেটি হলো জনতা ব্যাংক। ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলো হলো ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। এর মধ্যে ইসলামি ধারার পাঁচ ব্যাংকই তারল্য-সংকটে পড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সম্প্রতি বিশেষ ব্যবস্থায় টাকা ধার নেয়। জনতা ব্যাংক প্রায় প্রতিদিনই কয়েক হাজার কোটি টাকা করে ধার করছে।

রপ্তানি সহায়ক তহবিল পরিচালনা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই তহবিল থেকে ৪ শতাংশ সুদে টাকা নিয়ে রপ্তানি পণ্যের কাঁচামাল সংগ্রহ করতে পারছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে ইডিএফের ঋণ দেওয়া হয় ডলারে, আর রপ্তানি সহায়ক তহবিলের ঋণ দেওয়া হয় টাকায়।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x

ইডিএফ ঋণের সীমা কমলো ৫০ লাখ ডলার

আপডেট: ০৭:০৮:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০২৩

ডলার সংকট ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্তের কারণে এর আগে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) আকার ৭ বিলিয়ন থেকে ৬ বিলিয়ন করা, ঋণস্থিতি কমানো এবং আদায় জোরদার করতে দফায়-দফায় সুদহার বাড়ানো, তদারকি জোরদারসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ধীরে ধীরে এই তহবিলের আকার ছোট করতে রপ্তানিকারকদের ঋণের সীমা ৫০ লাখ ডলার কমিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আজ রোববার (৯ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ এ নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) ও বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সদস্যরা দুই কোটি ডলার পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন। আগে এই ঋণের সীমা ছিল ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। বাংলাদেশ ডাইড ইয়ার্ন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিওয়াইইএ) সদস্যরা ঋণ নিতে পারবেন সর্বোচ্চ এক কোটি ডলার। আগে তাঁদের ঋণের সীমা ছিল ১ কোটি ৫০ লাখ ডলার।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, আইএমএফ থেকে প্রতিশ্রুত ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার ঋণের অন্যতম শর্ত হলো, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের হিসাবায়ন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে হবে। এর ফলে ইডিএফসহ বিভিন্ন তহবিলে জোগান দেওয়া বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের হিসাবে দেখানো যাবে না। এ শর্তের পর এরই মধ্যে ইডিএফের আকার ৭ বিলিয়ন ডলার থেকে কমিয়ে ৬ বিলিয়ন ডলারে নামানো হয়েছে। ঋণ আদায় সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে তহবিলের আকার ছোট করা হচ্ছে। তবে রপ্তানিকারকরা যেন সমস্যায় না পড়েন, সে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দিতে ১০ হাজার কোটি টাকার আলাদা একটি তহবিল করেছে। এর অংশ হিসেবে ধীরে ধীরে এই তহবিলের আকার ছোট করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সে জন্য রপ্তানিকারকদের ঋণের সীমা ৫০ লাখ ডলার করে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সালে ৩৮ লাখ ৭২ হাজার ডলার নিয়ে গঠিত ইডিএফের আকার ধীরে ধীরে বাড়িয়ে ৭ বিলিয়ন বা ৭০০ কোটি ডলারে উন্নীত করা হয়। তবে এখন এই ঋণের সীমা ৬ বিলিয়ন বা ৬০০ কোটি ডলারের বেশি উঠতে দিচ্ছে না বাংলাদেশ ব্যাংক।

এদিকে ইডিএফের বিকল্প হিসেবে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ১০ হাজার কোটি টাকার রপ্তানি সহায়ক তহবিল গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। মূলত রিজার্ভের ডলার দিয়ে গঠিত রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) ওপর চাপ কমাতে গঠন করা হয় কম সুদের এই রপ্তানি সহায়ক তহবিল। তবে গত তিন মাসে মূলত এই তহবিলের ঋণের সুবিধা নিয়েছেন তারল্য-সংকটে পড়া ছয় ব্যাংকের গ্রাহকেরা। সব মিলিয়ে এসব ব্যাংকের কাছে গেছে ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।

আরও পড়ুন: বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সুদমুক্ত ঋণসহ ডিসিসিআইয়ের একগুচ্ছ সুপারিশ

এর মধ্যে পাঁচটিই ইসলামি ধারার ব্যাংক এবং একটি রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক। সেটি হলো জনতা ব্যাংক। ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলো হলো ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। এর মধ্যে ইসলামি ধারার পাঁচ ব্যাংকই তারল্য-সংকটে পড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সম্প্রতি বিশেষ ব্যবস্থায় টাকা ধার নেয়। জনতা ব্যাংক প্রায় প্রতিদিনই কয়েক হাজার কোটি টাকা করে ধার করছে।

রপ্তানি সহায়ক তহবিল পরিচালনা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই তহবিল থেকে ৪ শতাংশ সুদে টাকা নিয়ে রপ্তানি পণ্যের কাঁচামাল সংগ্রহ করতে পারছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে ইডিএফের ঋণ দেওয়া হয় ডলারে, আর রপ্তানি সহায়ক তহবিলের ঋণ দেওয়া হয় টাকায়।

ঢাকা/এসএ