০১:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০১ মে ২০২৪

উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও কড়াকড়ি বিধি-নিষেধে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে ভাঁটা

বিশেষ প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১১:০৮:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ এপ্রিল ২০২৪
  • / ৪১৩৬ বার দেখা হয়েছে

উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রভাব সাধারণ মানুষের মাধ্যমে এখন সরকারের অর্থ ব্যবস্থাপনায়ও পড়তে শুরু করেছে। জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সঞ্চয় ভেঙে চলতে হচ্ছে ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারীদের। এর ফলে সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে সরকারের ধার নেওয়ার পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে বসেছে। ধার নেওয়ার পরিবর্তে উল্টো ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ করতে হচ্ছে। এ অর্থও পরিশোধ করতে হচ্ছে অর্থব্যবস্থার অন্য খাত থেকে ঋণ নিয়ে।

এতে প্রতি মাসেই নিট বিক্রি ঋণাত্মক হয়ে পড়ছে। সর্বশেষ ফেব্রুয়ারিতে নিট বিক্রি ঋণাত্মক হয়েছে দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি। সবমিলিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে (জুলাই-ফেব্রয়ারি) নিট বিক্রি ঋণাত্মকের পরিমাণ ৮ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সংশ্লিষ্টরা জানান, নানা কড়াকড়ির কারণে সঞ্চয়পত্র থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন মানুষ। সাম্প্র্রতিক সময়ে ব্যাংকগুলোয় আমানতের সুদ বৃদ্ধিও এর অন্যতম কারণ। এছাড়া উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণেও সঞ্চয়পত্র ভেঙে খাচ্ছেন অনেকে। তারা বলছেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মূল্যস্ফীতি অনেকটা সহনীয় অবস্থায় নামিয়ে আনা গেলেও ডলার সংকট ও নানা সিন্ডিকেটের কারণে বাংলাদেশ উচ্চ মূল্যস্ফীতি থেকে বেরোতে পারেনি। আমদানির পণ্য ছাড়াও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যও অস্বাভাবিক মূল্যে কিনতে হচ্ছে জনসাধারণকে। অধিকাংশের ক্ষেত্রেই আয় না বাড়ায় সঞ্চয় ভেঙে সংসার খরচ চালাতে হচ্ছে, যার প্রত্যক্ষ প্রভাব গিয়ে পড়ছে সরকারের ঋণ পরিকল্পনায়। সঞ্চয়পত্রের ঋণ ও আসল পরিশোধে এখন বাণিজ্যিক ব্যাংক ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করে পরিশোধ করতে হচ্ছে।

তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বললেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, আইএমএফ শর্ত দিয়েছে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ এখন যা আছে, তা ২০২৬ সালের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ কমিয়ে ফেলতে হবে। সঞ্চয়পত্রে মুনাফা বাবদ দেওয়া ব্যয়ের পরিমাণ কমিয়ে আনতেই সংস্থাটি এ শর্ত দিয়েছে। এ ছাড়া সরকারও বর্তমানে অধিক সুদে কোনো ঋণ নিতে চাচ্ছে না। তাই নতুন ঋণ না নিয়ে আগের ঋণ পরিশোধে মনোযোগী হয়েছে সরকার।

চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের নিট ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের প্রতিবেদন বলছে, সর্বশেষ ফেব্রুয়ারিতে নিট বিক্রি ঋণাত্মক হয়েছে ১ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা। আগের মাসে নিট বিক্রি ঋণাত্মকের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে নিট বিক্রি ঋণাত্মক হওয়ার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৮ হাজার ৮৯২ কোটি টাকায়। গত অর্থবছরের একই সময়েও নিট বিক্রি ঋণাত্মক ধারায় ছিল। তবে ওই সময় এর পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৫০৯ কোটি টাকা।

গত অর্থবছরের সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে নিট ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। তবে বিক্রি কমতে থাকায় সংশোধিত বাজেটে এই লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ধরা হয় ৩২ হাজার কোটি টাকা। অর্থবছর শেষে নিট বিক্রি দাঁড়ায় ঋণাত্মক প্রায় ৩ হাজার ২৯৫ কোটি টাকায়। অর্থাৎ গত অর্থবছরের পুরো সময়ে সঞ্চয়পত্রের মোট বিক্রি হয় ৮০ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা। একই সময়ে সঞ্চয়পত্র ভাঙানোর পরিমাণ ছিল ৮৪ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা। এর মানে, পুরো অর্থবছরে এই খাত থেকে সরকার এক টাকাও ঋণ পায়নি। মূলত ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে সঞ্চয়পত্র বিক্রির চেয়ে বেশি ভাঙানোর প্রবণতা বাড়তে থাকে।

আরও পড়ুন: স্বেচ্ছায় না এলে দূর্বল ব্যাংককে বাধ্যতামূলক একীভূত করা হবে

আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্র থেকে ভাঙানো বাবদ (নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে বা মেয়াদান্তের আগে) আসল পরিশোধের পর যা অবশিষ্ট থাকে তাকে নিট বিক্রি বলা হয়। নিট বিক্রিকে সরকারের ধার বা ঋণ হিসেবে গণ্য করা হয়। ২০২১-২২ অর্থবছরেও সঞ্চয়পত্র থেকে তুলনামূলক কম ঋণ পেয়েছিল সরকার। পুরো অর্থবছরে ৩২ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে নিট ঋণ আসে ১৯ হাজার ৯১৫ কোটি টাকা। অথচ করোনার পরও ২০২০-২১ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্রের নিট বিনিয়োগ হয়েছিল প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা। এটি তার আগের অর্থবছরে ছিল মাত্র ১৪ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা।

সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে হয় তিন থেকে পাঁচ বছরের জন্য। মেয়াদপূর্তির আগে সঞ্চয়পত্র ভাঙানো হলে মুনাফার হার সর্বনিম্ন ৭ দশমিক ৭১ শতাংশ। মেয়াদ ও টাকার পরিমাণের ওপর নির্ভর করে সঞ্চয়পত্রে সর্বোচ্চ ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ মুনাফা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে যাদের এ খাতে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ রয়েছে, তাদের মুনাফা কমে যায়।

এখন ৫ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ থাকলে রিটার্নের সনদ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সব রকম সঞ্চয়পত্রের সুদহার ২ শতাংশের মতো কমিয়ে দেয় সরকার। তার আগে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগ সীমা কমিয়ে আনা হয়। এছাড়া ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে মুনাফার ওপর উৎসে করের হার ৫ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়। দুর্নীতি বা কালো টাকায় সঞ্চয়পত্র কেনা বন্ধে ক্রেতার তথ্যের একটি ডেটাবেস তৈরি হয়েছে।

বর্তমানে চার ধরনের সঞ্চয়পত্র রয়েছে। পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রের সুদহার ১১ দশমিক ৫২, পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশনার সঞ্চয়পত্রে ১১ দশমিক ৭৬, পাঁচ বছর মেয়াদি মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে ১১ দশমিক ২৮, তিন বছর মেয়াদি ও তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের সুদহার ১১ দশমিক ৪ শতাংশ। কয়েক দফায় সঞ্চয়পত্রের সুদহার কমানো হলেও, এখনও তা ব্যাংকের তুলনায় বেশি।

শেয়ার করুন

x
English Version

উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও কড়াকড়ি বিধি-নিষেধে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে ভাঁটা

আপডেট: ১১:০৮:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ এপ্রিল ২০২৪

উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রভাব সাধারণ মানুষের মাধ্যমে এখন সরকারের অর্থ ব্যবস্থাপনায়ও পড়তে শুরু করেছে। জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সঞ্চয় ভেঙে চলতে হচ্ছে ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারীদের। এর ফলে সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে সরকারের ধার নেওয়ার পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে বসেছে। ধার নেওয়ার পরিবর্তে উল্টো ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ করতে হচ্ছে। এ অর্থও পরিশোধ করতে হচ্ছে অর্থব্যবস্থার অন্য খাত থেকে ঋণ নিয়ে।

এতে প্রতি মাসেই নিট বিক্রি ঋণাত্মক হয়ে পড়ছে। সর্বশেষ ফেব্রুয়ারিতে নিট বিক্রি ঋণাত্মক হয়েছে দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি। সবমিলিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে (জুলাই-ফেব্রয়ারি) নিট বিক্রি ঋণাত্মকের পরিমাণ ৮ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সংশ্লিষ্টরা জানান, নানা কড়াকড়ির কারণে সঞ্চয়পত্র থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন মানুষ। সাম্প্র্রতিক সময়ে ব্যাংকগুলোয় আমানতের সুদ বৃদ্ধিও এর অন্যতম কারণ। এছাড়া উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণেও সঞ্চয়পত্র ভেঙে খাচ্ছেন অনেকে। তারা বলছেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মূল্যস্ফীতি অনেকটা সহনীয় অবস্থায় নামিয়ে আনা গেলেও ডলার সংকট ও নানা সিন্ডিকেটের কারণে বাংলাদেশ উচ্চ মূল্যস্ফীতি থেকে বেরোতে পারেনি। আমদানির পণ্য ছাড়াও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যও অস্বাভাবিক মূল্যে কিনতে হচ্ছে জনসাধারণকে। অধিকাংশের ক্ষেত্রেই আয় না বাড়ায় সঞ্চয় ভেঙে সংসার খরচ চালাতে হচ্ছে, যার প্রত্যক্ষ প্রভাব গিয়ে পড়ছে সরকারের ঋণ পরিকল্পনায়। সঞ্চয়পত্রের ঋণ ও আসল পরিশোধে এখন বাণিজ্যিক ব্যাংক ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করে পরিশোধ করতে হচ্ছে।

তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বললেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, আইএমএফ শর্ত দিয়েছে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ এখন যা আছে, তা ২০২৬ সালের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ কমিয়ে ফেলতে হবে। সঞ্চয়পত্রে মুনাফা বাবদ দেওয়া ব্যয়ের পরিমাণ কমিয়ে আনতেই সংস্থাটি এ শর্ত দিয়েছে। এ ছাড়া সরকারও বর্তমানে অধিক সুদে কোনো ঋণ নিতে চাচ্ছে না। তাই নতুন ঋণ না নিয়ে আগের ঋণ পরিশোধে মনোযোগী হয়েছে সরকার।

চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের নিট ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের প্রতিবেদন বলছে, সর্বশেষ ফেব্রুয়ারিতে নিট বিক্রি ঋণাত্মক হয়েছে ১ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা। আগের মাসে নিট বিক্রি ঋণাত্মকের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে নিট বিক্রি ঋণাত্মক হওয়ার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৮ হাজার ৮৯২ কোটি টাকায়। গত অর্থবছরের একই সময়েও নিট বিক্রি ঋণাত্মক ধারায় ছিল। তবে ওই সময় এর পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৫০৯ কোটি টাকা।

গত অর্থবছরের সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে নিট ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। তবে বিক্রি কমতে থাকায় সংশোধিত বাজেটে এই লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ধরা হয় ৩২ হাজার কোটি টাকা। অর্থবছর শেষে নিট বিক্রি দাঁড়ায় ঋণাত্মক প্রায় ৩ হাজার ২৯৫ কোটি টাকায়। অর্থাৎ গত অর্থবছরের পুরো সময়ে সঞ্চয়পত্রের মোট বিক্রি হয় ৮০ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা। একই সময়ে সঞ্চয়পত্র ভাঙানোর পরিমাণ ছিল ৮৪ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা। এর মানে, পুরো অর্থবছরে এই খাত থেকে সরকার এক টাকাও ঋণ পায়নি। মূলত ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে সঞ্চয়পত্র বিক্রির চেয়ে বেশি ভাঙানোর প্রবণতা বাড়তে থাকে।

আরও পড়ুন: স্বেচ্ছায় না এলে দূর্বল ব্যাংককে বাধ্যতামূলক একীভূত করা হবে

আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্র থেকে ভাঙানো বাবদ (নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে বা মেয়াদান্তের আগে) আসল পরিশোধের পর যা অবশিষ্ট থাকে তাকে নিট বিক্রি বলা হয়। নিট বিক্রিকে সরকারের ধার বা ঋণ হিসেবে গণ্য করা হয়। ২০২১-২২ অর্থবছরেও সঞ্চয়পত্র থেকে তুলনামূলক কম ঋণ পেয়েছিল সরকার। পুরো অর্থবছরে ৩২ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে নিট ঋণ আসে ১৯ হাজার ৯১৫ কোটি টাকা। অথচ করোনার পরও ২০২০-২১ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্রের নিট বিনিয়োগ হয়েছিল প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা। এটি তার আগের অর্থবছরে ছিল মাত্র ১৪ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা।

সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে হয় তিন থেকে পাঁচ বছরের জন্য। মেয়াদপূর্তির আগে সঞ্চয়পত্র ভাঙানো হলে মুনাফার হার সর্বনিম্ন ৭ দশমিক ৭১ শতাংশ। মেয়াদ ও টাকার পরিমাণের ওপর নির্ভর করে সঞ্চয়পত্রে সর্বোচ্চ ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ মুনাফা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে যাদের এ খাতে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ রয়েছে, তাদের মুনাফা কমে যায়।

এখন ৫ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ থাকলে রিটার্নের সনদ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সব রকম সঞ্চয়পত্রের সুদহার ২ শতাংশের মতো কমিয়ে দেয় সরকার। তার আগে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগ সীমা কমিয়ে আনা হয়। এছাড়া ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে মুনাফার ওপর উৎসে করের হার ৫ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়। দুর্নীতি বা কালো টাকায় সঞ্চয়পত্র কেনা বন্ধে ক্রেতার তথ্যের একটি ডেটাবেস তৈরি হয়েছে।

বর্তমানে চার ধরনের সঞ্চয়পত্র রয়েছে। পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রের সুদহার ১১ দশমিক ৫২, পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশনার সঞ্চয়পত্রে ১১ দশমিক ৭৬, পাঁচ বছর মেয়াদি মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে ১১ দশমিক ২৮, তিন বছর মেয়াদি ও তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের সুদহার ১১ দশমিক ৪ শতাংশ। কয়েক দফায় সঞ্চয়পত্রের সুদহার কমানো হলেও, এখনও তা ব্যাংকের তুলনায় বেশি।