এস আলমের ১ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণে বাড়তি সুবিধা

- আপডেট: ১১:৪৯:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫
- / ১০৩৭৫ বার দেখা হয়েছে
ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড থেকে এস আলম গ্রুপের অনুকূলে দেওয়া ১ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণের শর্তে পরিবর্তন করে বাড়তি সুবিধা দেওয়ার অভিযোগে ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত শুরু করেছে। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টা থেকে বেলা ৪টা পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
দুদক সূত্রে জানা গেছে, এস আলম গ্রুপের ঋণের নবায়ন প্রক্রিয়া চলাকালে ব্যাংক কর্মকর্তারা ঋণের ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের মেয়াদ ১ বছর থেকে বৃদ্ধি করে ২ বছর করেছেন এবং গ্রেস পিরিয়ডের মেয়াদও ১৮ মাস থেকে ২৪ মাস করা হয়েছে। এ সময়ে ব্যাংক কর্মকর্তারা সরাসরি ঋণ দেয়ার সাথে যুক্ত না থাকলেও, পরোক্ষভাবে তাদের দায় রয়েছে বলে দুদকের অনুসন্ধান থেকে উঠে এসেছে।
এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া ঋণের মধ্যে রয়েছে: ৮৫০ কোটি টাকা এস. আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেডের জন্য, ৫০০ কোটি টাকা এস. আলম ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেডের জন্য, ৪০০ কোটি টাকা এস. আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের জন্য। এ সকল ঋণের মেয়াদ বৃদ্ধিতে ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তারা সহায়তা করেছেন, যা ব্যাংকিং আইন ও নীতি পরিপন্থী বলে অভিযোগ উঠেছে।
দুদক বৃহস্পতিবার যে কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তারা হলেন: ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ডিএমডি কাজী মো. রেজাউল করিম, ইভিপি মো. শামসুদ্দোহা, মীর রহমত উল্লাহ, এসইভিপি আবু সাঈদ মো. ইদ্রিস। এছাড়া, ব্যাংকটির পর্যবেক্ষক ও পরিচালক মো. সারওয়ার হোসেন এবং নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তফা চৌধুরীকে দুদক তলব করলেও, তারা উপস্থিত হননি।
এটি চলমান তদন্তের অংশ হিসেবে, ২৬ ফেব্রুয়ারি আরও তিন ব্যাংক কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক। দুদক ১৭ ফেব্রুয়ারি তাদের কাছে একটি তলবি চিঠি পাঠিয়েছিল, তবে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের অনেকেই উপস্থিত না হয়ে তদন্ত প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করেছেন বলে অভিযোগ উঠছে।
দুদক বলছে, তাদের অনুসন্ধান পুরোপুরি স্বাধীন এবং আইনানুগ। তদন্তে প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় ব্যাংকিং খাতে আরও স্বচ্ছতা ও নীতি সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার দিকে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘বাংলাদেশ সরকার বিনিয়োগ সুকুক’ বন্ডের নিলামের তারিখ ঘোষণা
এ ঘটনাটি বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরছে। ঋণ নবায়ন ও শর্ত পরিবর্তন নিয়ে চলমান তদন্তটি ব্যাপকভাবে আলোচনা সৃষ্টি করেছে এবং দেশের বৃহৎ ব্যবসায়ী গ্রুপগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত ঋণের অনিয়মের বিষয়টি সরকারের নীতি-নির্ধারকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঢাকা/টিএ