০৫:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪

কমছে মার্জিন নির্ভর লোকসানি বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৭:৩৩:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ৪২২৫ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজারে মার্জিন ঋণ আছে এমন নেগেটিভ ইকুইটি অ্যাকাউন্ট, অর্থাৎ মার্জিননির্ভর লোকসানি বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ও পরিমাণ কমছে। গত এপ্রিল থেকে জুন সময়কালে এ ধরনের অ্যাকাউন্ট কমেছে ৬ হাজার ১৬১টি এবং টাকার অঙ্কে কমেছে ১ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারি থেকে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং জবাবদিহিতা বাড়ানোর কারণে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলো এ ধরনের অ্যাকাউন্ট কমিয়ে আনছে। ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এমন অ্যাকাউন্ট শূন্যে নামিয়ে আনতে চায় সংস্থাটি।

আরও পড়ুন: নবায়ন ফি না দেওয়ায় ৩২ হাজার বিও অ্যাকাউন্ট বন্ধ

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত জুন শেষে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ৭০টি ব্রোকারেজ হাউস ও ২৮টি মার্চেন্ট ব্যাংকের নেগেটিভ ইকুইটি অ্যাকাউন্ট ছিল ২৬ হাজার ৬১২টি। এসব অ্যাকাউন্টে মোট লোকসান ছিল ৪ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা। এর আগের প্রান্তিক মার্চ শেষেও ৮৭টি ব্রোকারেজ হাউস ও ২৯ মার্চেন্ট ব্যাংকে নেগেটিভ ইকুইটি অ্যাকাউন্ট ছিল ৩২ হাজার ৭৭৩টি। টাকার অঙ্কে লোকসান ছিল ৬ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা। গত জুন শেষে ব্রোকারেজ হাউসে নেগেটিভ ইকুইটি অ্যাকাউন্ট ১৩ হাজার ৬৩টিতে এবং লোকসান ২ হাজার ৭০১ কোটি টাকায় নেমে আসে। এ ছাড়া মার্চেন্ট ব্যাংকে নেগেটিভ ইকুইটি অ্যাকাউন্ট ১৩ হাজার ৫৪৯টিতে এবং লোকসান ১ হাজার ৯৫৫ কোটি টাকায় নামে।

নেগেটিভ ইকুইটি হলো, কোনো বিনিয়োগকারী নিজের মূলধনের সঙ্গে মার্জিন ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করার পর সংশ্নিষ্ট শেয়ারের দর এতটাই কমে যায় যে, তা বিক্রি করলেও নিজের টাকা তো পাবেই না, উল্টো ঋণদাতারও লোকসান হবে। উদাহরণস্বরূপ, কেউ নিজের ১০০ টাকার মূলধনের বিপরীতে ১০০ টাকার ঋণ নিয়ে ২০০ টাকার শেয়ার কেনার পর সমুদয় শেয়ারের দাম ৮০ টাকায় নেমে এলে এ ক্ষেত্রে নেগেটিভ ইকুইটি ২০ টাকা।

জানা গেছে, নেগেটিভ ইকুইটি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এখনও অন্তত ১০ থেকে ১২ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ আটকে আছে। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে পুঁজিবাজারে ধস নামার পর এসব লোকসানি অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়। এ সংকটে পড়ে কিছু ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক অস্তিত্ব সংকটে আছে।

জুন শেষে নেগেটিভ ইকুইটির দিক থেকে ওপরের দিকে ছিল রিলায়েন্স ব্রোকারেজ। প্রতিষ্ঠানে এমন অ্যাকাউন্ট ছিল ১ হাজার ১৭৭টি। মোট লোকসান ছিল ৪৯৩ কোটি টাকা। ফারইস্ট স্টক অ্যান্ড বন্ডে এ ধরনের অ্যাকাউন্টে মোট লোকসান ছিল ৩৭৪ কোটি টাকা। জিএসপি ইনভেস্টমেন্টে এর পরিমাণ ছিল ৩৩৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া এবি ইনভেস্টমেন্টে ২৬৬ কোটি, প্রিমিয়ার ব্যাংক সিকিউরিটিজে ২৫৩ কোটি, মার্কেন্টাইল ব্যাংক সিকিউরিটিজে ১৯৬ কোটি, ট্রাস্ট ব্যাংক ইনভেস্টমেন্টে ১৮৭ কোটি, আইআইডিএফসি সিকিউরিটিজে ১৫৭ কোটি, এসবিএল ক্যাপিটালে ১৩৬ কোটি, পিএলএফএস সিকিউরিটিজে ১২৮ কোটি, ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্টে ১২১ কোটি, ইউনিক্যাপ ইনভেস্টমেন্টে ১১৬ কোটি এবং প্রাইম ফাইন্যান্স ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টে নেগেটিভ ইকুইটি অ্যাকাউন্টে প্রতিষ্ঠানের লোকসান ১০১ কোটি টাকা।

ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা বলেন, ২০১০ সালের ধসের পর নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফোর্সসেল করতে না দেওয়ায় এখনও এ ধরনের প্রচুর হিসাব রয়ে গেছে।

তবে কিছু ব্রোকারেজ হাউসে মার্চের তুলনায় জুনে এসে নেগেটিভ ইকুইটি অ্যাকাউন্টের সংখ্যা না কমে উল্টো বেড়েছে। যেমন আইসিবি ক্যাপিটাল সার্ভিসেসে তিন মাসে নেগেটিভ ইকুইটি অ্যাকাউন্ট বেড়েছে ৩৮০টি। এজন্য প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের বিডিংয়ের তারিখ নির্ধারণ

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x

কমছে মার্জিন নির্ভর লোকসানি বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা

আপডেট: ০৭:৩৩:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজারে মার্জিন ঋণ আছে এমন নেগেটিভ ইকুইটি অ্যাকাউন্ট, অর্থাৎ মার্জিননির্ভর লোকসানি বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ও পরিমাণ কমছে। গত এপ্রিল থেকে জুন সময়কালে এ ধরনের অ্যাকাউন্ট কমেছে ৬ হাজার ১৬১টি এবং টাকার অঙ্কে কমেছে ১ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারি থেকে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং জবাবদিহিতা বাড়ানোর কারণে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলো এ ধরনের অ্যাকাউন্ট কমিয়ে আনছে। ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এমন অ্যাকাউন্ট শূন্যে নামিয়ে আনতে চায় সংস্থাটি।

আরও পড়ুন: নবায়ন ফি না দেওয়ায় ৩২ হাজার বিও অ্যাকাউন্ট বন্ধ

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত জুন শেষে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ৭০টি ব্রোকারেজ হাউস ও ২৮টি মার্চেন্ট ব্যাংকের নেগেটিভ ইকুইটি অ্যাকাউন্ট ছিল ২৬ হাজার ৬১২টি। এসব অ্যাকাউন্টে মোট লোকসান ছিল ৪ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা। এর আগের প্রান্তিক মার্চ শেষেও ৮৭টি ব্রোকারেজ হাউস ও ২৯ মার্চেন্ট ব্যাংকে নেগেটিভ ইকুইটি অ্যাকাউন্ট ছিল ৩২ হাজার ৭৭৩টি। টাকার অঙ্কে লোকসান ছিল ৬ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা। গত জুন শেষে ব্রোকারেজ হাউসে নেগেটিভ ইকুইটি অ্যাকাউন্ট ১৩ হাজার ৬৩টিতে এবং লোকসান ২ হাজার ৭০১ কোটি টাকায় নেমে আসে। এ ছাড়া মার্চেন্ট ব্যাংকে নেগেটিভ ইকুইটি অ্যাকাউন্ট ১৩ হাজার ৫৪৯টিতে এবং লোকসান ১ হাজার ৯৫৫ কোটি টাকায় নামে।

নেগেটিভ ইকুইটি হলো, কোনো বিনিয়োগকারী নিজের মূলধনের সঙ্গে মার্জিন ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করার পর সংশ্নিষ্ট শেয়ারের দর এতটাই কমে যায় যে, তা বিক্রি করলেও নিজের টাকা তো পাবেই না, উল্টো ঋণদাতারও লোকসান হবে। উদাহরণস্বরূপ, কেউ নিজের ১০০ টাকার মূলধনের বিপরীতে ১০০ টাকার ঋণ নিয়ে ২০০ টাকার শেয়ার কেনার পর সমুদয় শেয়ারের দাম ৮০ টাকায় নেমে এলে এ ক্ষেত্রে নেগেটিভ ইকুইটি ২০ টাকা।

জানা গেছে, নেগেটিভ ইকুইটি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এখনও অন্তত ১০ থেকে ১২ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ আটকে আছে। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে পুঁজিবাজারে ধস নামার পর এসব লোকসানি অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়। এ সংকটে পড়ে কিছু ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক অস্তিত্ব সংকটে আছে।

জুন শেষে নেগেটিভ ইকুইটির দিক থেকে ওপরের দিকে ছিল রিলায়েন্স ব্রোকারেজ। প্রতিষ্ঠানে এমন অ্যাকাউন্ট ছিল ১ হাজার ১৭৭টি। মোট লোকসান ছিল ৪৯৩ কোটি টাকা। ফারইস্ট স্টক অ্যান্ড বন্ডে এ ধরনের অ্যাকাউন্টে মোট লোকসান ছিল ৩৭৪ কোটি টাকা। জিএসপি ইনভেস্টমেন্টে এর পরিমাণ ছিল ৩৩৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া এবি ইনভেস্টমেন্টে ২৬৬ কোটি, প্রিমিয়ার ব্যাংক সিকিউরিটিজে ২৫৩ কোটি, মার্কেন্টাইল ব্যাংক সিকিউরিটিজে ১৯৬ কোটি, ট্রাস্ট ব্যাংক ইনভেস্টমেন্টে ১৮৭ কোটি, আইআইডিএফসি সিকিউরিটিজে ১৫৭ কোটি, এসবিএল ক্যাপিটালে ১৩৬ কোটি, পিএলএফএস সিকিউরিটিজে ১২৮ কোটি, ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্টে ১২১ কোটি, ইউনিক্যাপ ইনভেস্টমেন্টে ১১৬ কোটি এবং প্রাইম ফাইন্যান্স ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টে নেগেটিভ ইকুইটি অ্যাকাউন্টে প্রতিষ্ঠানের লোকসান ১০১ কোটি টাকা।

ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা বলেন, ২০১০ সালের ধসের পর নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফোর্সসেল করতে না দেওয়ায় এখনও এ ধরনের প্রচুর হিসাব রয়ে গেছে।

তবে কিছু ব্রোকারেজ হাউসে মার্চের তুলনায় জুনে এসে নেগেটিভ ইকুইটি অ্যাকাউন্টের সংখ্যা না কমে উল্টো বেড়েছে। যেমন আইসিবি ক্যাপিটাল সার্ভিসেসে তিন মাসে নেগেটিভ ইকুইটি অ্যাকাউন্ট বেড়েছে ৩৮০টি। এজন্য প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের বিডিংয়ের তারিখ নির্ধারণ

ঢাকা/এসএ