০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪

কারখানা-প্রধান কার্যালয় বন্ধ, তবুও শেয়ার দরে ভিন্ন চিত্র!

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১২:২২:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ অগাস্ট ২০২১
  • / ৪২০৭ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির তিন বছর পরই প্রথমে উৎপাদন বন্ধ করেছে, এরপর এখন কোম্পানির কারখানা এমনকি প্রধান কার্যালয় বন্ধ করে দিয়েছে বস্ত্র খাতের কোম্পানি নূরানী ডাইং অ্যান্ড সোয়েটার কোম্পানি লিমিটেড। কিন্তু তারপরও দাম বাড়ছে শেয়ারের।

কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ২৫ জুলাই থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে ১ টাকা ৮০ পয়সা বেড়েছে। দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ডিএসইর তথ্য মতে, কোম্পানিটিকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনের অনুমোদন দিয়েছিলেন অধ্যাপক খায়রুল হোসেনের কমিশন। ব্যবসা সম্প্রসারণের কথা বলে আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ৪৩ কোটি টাকা উত্তোলন করে নেয়। কোম্পানিটি উৎপাদন বন্ধ কিংবা কারখানা বন্ধের মতো গুরুত্বপূর্ণ মূল্য সংবেদনশীল তথ্য (পিএসআই) প্রকাশ করেনি। যা পুঁজিবাজারে আইন লঙ্ঘন ও বড় ধরনের অপরাধ।

এ বিষয়ে নাম না প্রকাশের শর্তে ডিএসইর একজন পরিচালক বলেন, তিন বছরে যেতে না যেতেই একটি কোম্পানি কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এমনকি কোনো স্টক এক্সচেঞ্জকেও অভিহিত করেনি- এমন সংবাদ আমাদের কাছে আসে। এরপর কারখানায় ডিএসইর পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দলকে সরেজমিনে পরিদর্শনের জন্য পাঠানো হয়। সেখানে গিয়ে তারা কোম্পানির কারখানা বন্ধ দেখেন। এমনকি প্রধান কার্যালয়েও তালা পান। ফলে তারা কারখানায় প্রবেশ করতে পারেননি। এমনকি কোম্পানির ভেতরের অবস্থাও জানতে পারেননি।

কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, আইপিওতে আসার কোম্পানির অনেক গ্রৌথ দেখানো কোম্পানিটির প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন এসকে নুরুল আলম। তিনি মৃত্যু বরণ করেছেন। এরপর থেকেই কোম্পানির অবস্থায় শোচনীয় হয়ে পড়ে। ফলে তালিকাভুক্ত হওয়ার তিন বছরের মধ্যেই লাভে থাকা কোম্পানিটি লোকসানের কবলে পড়েছে। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের ৯ মাসে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৯৫ পয়সা। গতকাল সোমবার (০৯ আগস্ট) কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ১১ টাকা ২০ পয়সা। এর আগের দিন ছিল ১০টাকা ২০ পয়সা। অর্থাৎ, একদিনে শেয়ারের দাম বাড়ে ১ টাকা বা ৯.৮০ শতাংশ।

তবে আজ মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) গতকালের চেয়ে ১০ পয়সা কমে লেনদেন শুরু হয়েছে। এই শেয়ারটি গত ২৫ জুলাই থেকে বাড়তে শুরু করে। ২৫ জুলাই শেয়ারটির দাম ছিল ৯ টাকা ৪০ পয়সা।

কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ১২ কোটি ২৬ লাখ ২৫ হাজার ৩০টি। যার বাজারমূল্য ১৩৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এরমধ্যে কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে রয়েছে ৩০ দশমিক ৯৩ শতাংশ শেয়ার, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ১৭ দশমিক ২৮ শতাংশ শেয়ার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৫১ দশমিক ৭৯ শতাংশ শেয়ার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, শুধু নূরানী ডাইং নয়, পুঁজিবাজারে অন্তত ৭০-৮০টি কোম্পানি অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। যারা আইপিওতে আসার সময় কোম্পানির অবস্থা ভালো দেখিয়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এর এক-দুই বছর পর থেকেই লোকসানে চলে আসছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার উচিৎ এসব কোম্পানির শেয়ার বিষয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া। সূত্র:ঢাকাপোস্ট

ঢাকা/এনইউ

আরও পড়ুন:

শেয়ার করুন

x

কারখানা-প্রধান কার্যালয় বন্ধ, তবুও শেয়ার দরে ভিন্ন চিত্র!

আপডেট: ১২:২২:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ অগাস্ট ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির তিন বছর পরই প্রথমে উৎপাদন বন্ধ করেছে, এরপর এখন কোম্পানির কারখানা এমনকি প্রধান কার্যালয় বন্ধ করে দিয়েছে বস্ত্র খাতের কোম্পানি নূরানী ডাইং অ্যান্ড সোয়েটার কোম্পানি লিমিটেড। কিন্তু তারপরও দাম বাড়ছে শেয়ারের।

কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ২৫ জুলাই থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে ১ টাকা ৮০ পয়সা বেড়েছে। দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ডিএসইর তথ্য মতে, কোম্পানিটিকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনের অনুমোদন দিয়েছিলেন অধ্যাপক খায়রুল হোসেনের কমিশন। ব্যবসা সম্প্রসারণের কথা বলে আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ৪৩ কোটি টাকা উত্তোলন করে নেয়। কোম্পানিটি উৎপাদন বন্ধ কিংবা কারখানা বন্ধের মতো গুরুত্বপূর্ণ মূল্য সংবেদনশীল তথ্য (পিএসআই) প্রকাশ করেনি। যা পুঁজিবাজারে আইন লঙ্ঘন ও বড় ধরনের অপরাধ।

এ বিষয়ে নাম না প্রকাশের শর্তে ডিএসইর একজন পরিচালক বলেন, তিন বছরে যেতে না যেতেই একটি কোম্পানি কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এমনকি কোনো স্টক এক্সচেঞ্জকেও অভিহিত করেনি- এমন সংবাদ আমাদের কাছে আসে। এরপর কারখানায় ডিএসইর পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দলকে সরেজমিনে পরিদর্শনের জন্য পাঠানো হয়। সেখানে গিয়ে তারা কোম্পানির কারখানা বন্ধ দেখেন। এমনকি প্রধান কার্যালয়েও তালা পান। ফলে তারা কারখানায় প্রবেশ করতে পারেননি। এমনকি কোম্পানির ভেতরের অবস্থাও জানতে পারেননি।

কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, আইপিওতে আসার কোম্পানির অনেক গ্রৌথ দেখানো কোম্পানিটির প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন এসকে নুরুল আলম। তিনি মৃত্যু বরণ করেছেন। এরপর থেকেই কোম্পানির অবস্থায় শোচনীয় হয়ে পড়ে। ফলে তালিকাভুক্ত হওয়ার তিন বছরের মধ্যেই লাভে থাকা কোম্পানিটি লোকসানের কবলে পড়েছে। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের ৯ মাসে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৯৫ পয়সা। গতকাল সোমবার (০৯ আগস্ট) কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ১১ টাকা ২০ পয়সা। এর আগের দিন ছিল ১০টাকা ২০ পয়সা। অর্থাৎ, একদিনে শেয়ারের দাম বাড়ে ১ টাকা বা ৯.৮০ শতাংশ।

তবে আজ মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) গতকালের চেয়ে ১০ পয়সা কমে লেনদেন শুরু হয়েছে। এই শেয়ারটি গত ২৫ জুলাই থেকে বাড়তে শুরু করে। ২৫ জুলাই শেয়ারটির দাম ছিল ৯ টাকা ৪০ পয়সা।

কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ১২ কোটি ২৬ লাখ ২৫ হাজার ৩০টি। যার বাজারমূল্য ১৩৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এরমধ্যে কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে রয়েছে ৩০ দশমিক ৯৩ শতাংশ শেয়ার, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ১৭ দশমিক ২৮ শতাংশ শেয়ার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৫১ দশমিক ৭৯ শতাংশ শেয়ার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, শুধু নূরানী ডাইং নয়, পুঁজিবাজারে অন্তত ৭০-৮০টি কোম্পানি অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। যারা আইপিওতে আসার সময় কোম্পানির অবস্থা ভালো দেখিয়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এর এক-দুই বছর পর থেকেই লোকসানে চলে আসছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার উচিৎ এসব কোম্পানির শেয়ার বিষয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া। সূত্র:ঢাকাপোস্ট

ঢাকা/এনইউ

আরও পড়ুন: