কেবল পণ্য নয় দক্ষ জনশক্তিও রপ্তানি করতে চাই: উজমা চৌধুরী

- আপডেট: ০৬:০০:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫
- / ১০২১৪ বার দেখা হয়েছে
কেবল পণ্য নয় দক্ষ জনশক্তিও রপ্তানির আগ্রহের কথা জানিয়েছেন সৌদি আরব-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এসএবিসিসিআই) পরিচালক ও প্রাণ এগ্রো লিমিটেডের পরিচালক উজমা চৌধুরী।
রোববার (৫ অক্টোবর) সকালে গুলশানে সিটি ব্যাংক সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আগ্রহের কথা জানান। তিন দিনব্যাপী ‘সৌদি-বাংলাদেশ বিজনেস সামিট’ উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
উজমা চৌধুরী বলেন, ২৫ বছর আমরা সৌদিতে পণ্য রপ্তানি করছি। কেবল পণ্য নয়, দক্ষ জনশক্তিও রপ্তানি করতে চাই। সৌদি আরবে দক্ষ নার্সের চাহিদা আছে। আইটি প্রকৌশলীসহ নানান পেশাজীবীর চাহিদা আছে। দক্ষ নার্সের চাহিদা মেটাতে নাটোরে আমজাদ খান চৌধুরী নার্সিং কলেজ কাজ করছে।
তিনি বলেন, দুই দেশের ব্যবসায়িক ও বাণিজ্য সমস্যা সমাধানে এসএবিসিসিআই কাজ করবে। সামিটে সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা উঠে আসবে। এছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরবে। আমরা সমস্যাগুলো সমাধানের উপায় নিয়ে কাজ করবো।
এসএবিসিসিআই একটি নতুন গঠিত ব্যবসায়ী সংগঠন, যা দুই দেশের যৌথ উদ্যোগে প্রথমবারের মতো কাজ করছে।
সামিটের আয়োজক সংগঠন এসএবিসিসিআইয়ের সভাপতি আশরাফুল হক চৌধুরী বলেন, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার এবং বিনিয়োগ সম্ভাবনা চিহ্নিত করার লক্ষ্যে সোমবার (৬ অক্টোবর) থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী ‘সৌদি-বাংলাদেশ বিজনেস সামিট’।
রাজধানীর বনানীর শেরাটন হোটেলে এ সামিটের মূল আয়োজন অনুষ্ঠিত হবে।
সামিট উপলক্ষে সৌদি আরব থেকে ২০ সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে আসবে। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকবেন উমরান গ্রুপের মালিক শেখ ওমর আব্দুল হাফিজ আমির বকশ। প্রতিনিধিদলে থাকছেন ব্যবসায়ী, শিক্ষাবিদ, স্বাস্থ্যখাতের বিশেষজ্ঞসহ বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিরা।
আশরাফুল হক চৌধুরী বলেন, আগামীকাল প্রতিনিধিদল ঢাকায় অবতরণ করবে। রাতে তাদের সৌজন্যে ডিনার আয়োজন করেছে এসএবিসিসিআই।
আয়োজন সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকালে বনানীর শেরাটন হোটেলে বিজনেস সামিটের মূল আয়োজন হবে। যেখানে বাণিজ্য উপদেষ্টা, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত থাকবেন। ওইদিন রাতে এসএবিসিসিআইতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সামিটে বাংলাদেশের ২২টি স্টল থাকবে। যেখানে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) একটি স্টল থাকবে।
৮ অক্টোবর দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অতিথিদের সম্মানে ভোজ আয়োজন করবেন পররাষ্ট্র সচিব। সোনারগাঁও হোটেলে তিনদিনের সম্ভাবনা ও প্রাপ্তি নিয়ে সংবাদ সম্মেলেনের আয়োজন করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে আশরাফুল হক চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতার এত বছর পরও দুই দেশের যৌথ উদ্যোগে কোনো ব্যবসায়ী সংগঠন হয়নি। কেন হয়নি তা আমাদের জানা নেই। দেশের অর্থনীতির চাকা যদি সামনের দিকে নিতে চাই তাহলে আমাদের নতুন বাজার খুঁজতে হবে। সৌদি আরবে বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা তৈরি পোশাক, টুপি, প্যাকেটজাত খাবার রপ্তানি করছেন। আর সৌদি আরব থেকে ক্রুড ওয়েল, খেজুরসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করছেন।
তিনি বলেন, সৌদি আরবে প্রাণ-আকিজসহ ১০-১৫ কোম্পানি ছাড়া তেমন কেউ রপ্তানি করে না। প্রায় ৩০ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি সেখানে বাস করছেন। সেখানে ব্যবসার বড় বাজার রয়েছে। এছাড়া ইউরোপ ও আমেরিকার ওপর আমরা এত বেশি নির্ভরশীল যে অন্য কোনো দেশের ব্যাপারে চিন্তা করতে পারি না। কিন্তু বাণিজ্য যুদ্ধে কত রকমের সমস্যা দেখছি। ভবিষ্যতে হয়তো আরও হবে। সৌদি আরবকে যদি বিকল্প বাজার হিসেবে গড়ে তুলি এর সুফল আমাদের ব্যবসায়ীরা পাবেন।
সংবাদ সম্মেলনে এসএবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ বলেন, সৌদি আরবে অনেক বাংলাদেশি সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করছেন। আমরা তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাই। বাংলাদেশ সম্পর্কে সৌদি আরবের ব্যবসায়ীদের ধারণা খুবই কম। যে ২০ জন বাংলাদেশে আসছেন তাদের বেশিরভাগই প্রথমবারের মতো আসছেন। যারা আসছেন তাদের ব্যবহার করার চেষ্টা করবো। কিছু না কিছু ব্যবসা তো হবেই।
ঢাকা/এসএইচ