ক্ষমতার পালাবদল যেন ‘দুর্নীতির পালাবদল’ না হয়: বদিউল আলম

- আপডেট: ০৪:১১:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫
- / ১০১৯৭ বার দেখা হয়েছে
সুশাসনের অভাব ও স্বৈরাচারী কাঠামোর বিলোপ না হলে কেবল নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পরিবর্তন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও সুজনের (সুশাসনের জন্য নাগরিক) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, ক্ষমতার পালাবদল যেন ‘দুর্নীতির পালাবদল’ না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি।
শনিবার (১১ অক্টোবর) এফডিসিতে গণতন্ত্র সুরক্ষায় আগামী নির্বাচনের গুরুত্ব নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদে বদিউল আলম মজুমদার প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
বিগত ১৫ বছরের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ক্ষমতার সঙ্গে ‘জাদুর কাঠি’ যুক্ত থাকায় ক্ষমতাসীন সংসদ সদস্য, মেয়র ও চেয়ারম্যানদের সম্পদ আকাশচুম্বী হয়েছে, যা বন্ধ করা আবশ্যক। শেখ হাসিনা ক্ষমতা থেকে বিদায় নিলেও তাকে স্বৈরাচার বানানোর আইনকানুন, কাঠামো এখনো বহাল রয়েছে। বর্তমানে চলমান সংস্কার কার্যক্রমে এসব কাঠামো পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তাই আইনি, প্রাতিষ্ঠানিক ও কাঠামোগত সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন সুজন সম্পাদক।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ভবিষ্যৎ সরকার জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না করলে তাদের পরিণতিও শেখ হাসিনার মতো হতে পারে। এ সনদ বাস্তবায়নের মাধ্যমেই স্বৈরাচারী কাঠামোর বিলোপ হবে। ভবিষ্যতে যারা ক্ষমতায় আসবে, তারা এ ব্যাপারে সজাগ থাকবে। এছাড়াও আগামী নির্বাচনের সঙ্গে একই দিনে গণভোট হবে কি না, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা ও রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে ঐকমত্য কমিশন অন্তর্বর্তী সরকারকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রস্তাব দেবে।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, জুলাই সনদ নিয়ে ঐকমত্যের বিষয়টি এখন ‘সিলভার লাইন থেকে গোল্ডেন লাইনে’ পরিণত হয়েছে। গণতন্ত্রকামী প্রতিটি রাজনৈতিক দলই একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রত্যাশা করছে।
তিনি আগামী ১৫ অক্টোবর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জুলাই সনদ স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। তবে তিনি সতর্ক করে দেন, রাজনৈতিক দলগুলোর রেষারেষির কারণে সনদ স্বাক্ষরে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হলে দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়বে। সেক্ষেত্রে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের অন্যায়, অত্যাচার, গুম-খুন-হত্যাসহ জুলাই বিপ্লবে শহীদদের হত্যার বিচার বাধাগ্রস্ত হবে এবং পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তি ফিরে আসার শঙ্কা তৈরি হবে।
কিরণ বলেন, যারা এ দেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিল, বিনা ভোটে ক্ষমতায় ছিল, দিনের ভোট রাতে করেছিল, ‘আমি আর ডামির’ নির্বাচন করে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছিল, তা থেকে পরিত্রাণের জন্য আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অত্যাবশ্যক। বিভেদের রাজনীতি পরিহার করে ফ্যাসিস্টবিরোধী প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল আগামী সফল নির্বাচনের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ থাকবে।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে ‘আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হলেই গণতন্ত্র সুরক্ষিত হবে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে তেজগাঁও কলেজ ও প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা যৌথভাবে বিজয়ী হয়।
ঢাকা/এসএইচ