০৯:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫

খাদ্য সম্পর্কিত জাতীয় নীতি বাস্তবায়ন জরুরি: বাণিজ্য উপদেষ্টা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১০:৫৬:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫
  • / ১০৩১৯ বার দেখা হয়েছে

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে খাদ্য সম্পর্কিত সব ইস্যুতে সামগ্রিকভাবে জাতীয় নীতি বাস্তবায়ন জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

সোমবার (৫ মে) বিকেলে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বণিক বার্তা আয়োজিত ‘কৃষি, খাদ্যনিরাপত্তা ও প্রাণ-প্রকৃতি সম্মেলন ২০২৫’ এর তৃতীয় অধিবেশন ‘খাদ্যের বাজার, সরবরাহ ও দেশজ সক্ষমতা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আমাদের ইনফ্লেশন বাস্কেট ওয়াইড। আমি মনে করি এসেনশিয়াল প্রোডাক্ট রেফারেন্সে আমাদের একটি ইনফ্লেশন ইনডেক্স থাকা উচিত। বাজার ব্যবস্থা মনিটরিং ও রেগুলেট করতে এটা আমাদের সাহায্য করবে।

উপদেষ্টা বলেন, ১৭টি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তালিকা সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট আছে। আমরা যদি নিত্য প্রয়োজনীয় ১৭টি পণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারি তাহলে আমাদের যে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা আছে এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারব।

তিনি বলেন, কৃষি মানেই শুধু মানুষের খাদ্য নয়- এখানে পশু খাদ্যও জরুরি বিষয়। পশু যে খাবারটা খায় সেটাও কৃষি থেকে আসে।আবার পশুকে আমরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করি। পশু খাদ্যের মূল্যের সাথে আমাদের খাদ্যের মূল্যের একটা সম্পর্ক রয়েছে এটা আমাদের ক্রিটিকালি অ্যানালাইসিস করতে হবে।

বিগত সময়ে দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে। একজনের কাছ থেকে শুনে কোয়াসিজুডিসিয়াল নয় জুডিশিয়াল কিলিং থেকে শুরু করে সমস্ত কিছু হয়েছে, এটা অস্বীকার করার জায়গা নেই। এখান থেকে যে উত্তরণ ঘটাবো এটার জন্য আমাদের সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা এবং সরকারের যে অঙ্গগুলো আছে এর সক্ষমতা বাড়াতে হবে বলে উল্লেখ করেন শেখ বশিরউদ্দীন।

অতিরঞ্জিত তথ্য উপাত্ত মারাত্মক ফ্যাসাদ তৈরি উল্লেখ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে যে পরিসংখ্যানগত নিয়ামকগুলোকে আমরা গ্রহণ করি অধিকাংশ সময় খুবই কনফিউজিং। এটা রিপেয়ার দরকার। বড় বড় অর্থনীতিবিদরাই এই পরিসংখ্যান তৈরি করছেন এবং এই পরিসংখ্যান একমাত্র ফ্যাসাদ তৈরি ছাড়া কোনো কিছুই করে না।

গতবছর দেখেছি আলুর উৎপাদন হয়েছে এক কোটি তিন মেট্রিক টন। কনজাম্পশন হয়েছে ৮০ লাখ মেট্রিক টন। তারপর আলুর দাম হয়ে গেছে ৯০ টাকা কেজি। লক্ষ্য করে দেখলাম কোনোভাবেই এটা কোলাবরেট করছে না। কেননা পরিসংখ্যান ছিল ভুল। পরিসংখ্যানের শুদ্ধি অবশ্যম্ভাবীভাবে প্রয়োজন বলে যোগ করেন তিনি।

বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, আমাদের খাদ্যের যে বাজার এই বাজারের আর্থিক মূল্য ৩০ লক্ষ কোটি টাকা। আমরা এর বিপণন আরো ভালোভাবে করতে চাই। কৃষির যে অর্থনীতিকীকরণ এখানে সিন্ডিকেশন অফ ফেয়ার মাইন্ড এবং সিন্ডিকেশন অফ ফেয়ার পলিসিস দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আরও পড়ুন: এপ্রিলে দেশের মূল্যস্ফীতিতে স্বস্তির বার্তা

উদাহরণ টেনে উপদেষ্টা বলেন, রমজানের আগে ডিমের দাম ১৮০ টাকা ছিল। আমরা দেখেছি যে ডিমকে মজুদ করে রাখা হয়েছিল কোল্ড স্টোরেজে। মজুদ করে বাজারকে আর্টিফিসিয়ালি বাড়ানো হয়েছিল।

বিগত সরকার ব্যয়ের মহোৎসব করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের নাগরিকদের ওপর চূড়ান্ত দায় তৈরি করেছে। বিভিন্ন সময়ে মিটিংয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের যে ব্যয়ের ফিরিস্তি দেখি খরচ করতে পারাটাই যেন কৃতিত্বের ব্যাপার ছিল। কোনো একটা খাত সৃষ্টি করে অর্থব্যয় করাটাকেই কৃতিত্ব মনে করা হতো। একসময় এটাই যোগ্যতার নিয়ামক ছিল যে, কে কতটা খরচ করতে পারে এবং কতভাবে দায় তৈরি করা যায় নাগরিকের ওপর। আমরা এখান থেকে ফেরত এসে একটি কাঠামো তৈরি করতে চাই।

প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, কাজী ফার্মস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী জাহেদুল হাসান, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন, কোয়ালিটি ফিডসের পরিচালক এম সাফির রহমান, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, এসিআই লজিস্টিকস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাব্বির হাসান নাসির এবং স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের চিফ অপারেটিং অফিসার পারভেজ সাইফুল ইসলাম।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

error: Content is protected ! Please Don't Try!

খাদ্য সম্পর্কিত জাতীয় নীতি বাস্তবায়ন জরুরি: বাণিজ্য উপদেষ্টা

আপডেট: ১০:৫৬:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে খাদ্য সম্পর্কিত সব ইস্যুতে সামগ্রিকভাবে জাতীয় নীতি বাস্তবায়ন জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

সোমবার (৫ মে) বিকেলে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বণিক বার্তা আয়োজিত ‘কৃষি, খাদ্যনিরাপত্তা ও প্রাণ-প্রকৃতি সম্মেলন ২০২৫’ এর তৃতীয় অধিবেশন ‘খাদ্যের বাজার, সরবরাহ ও দেশজ সক্ষমতা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আমাদের ইনফ্লেশন বাস্কেট ওয়াইড। আমি মনে করি এসেনশিয়াল প্রোডাক্ট রেফারেন্সে আমাদের একটি ইনফ্লেশন ইনডেক্স থাকা উচিত। বাজার ব্যবস্থা মনিটরিং ও রেগুলেট করতে এটা আমাদের সাহায্য করবে।

উপদেষ্টা বলেন, ১৭টি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তালিকা সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট আছে। আমরা যদি নিত্য প্রয়োজনীয় ১৭টি পণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারি তাহলে আমাদের যে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা আছে এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারব।

তিনি বলেন, কৃষি মানেই শুধু মানুষের খাদ্য নয়- এখানে পশু খাদ্যও জরুরি বিষয়। পশু যে খাবারটা খায় সেটাও কৃষি থেকে আসে।আবার পশুকে আমরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করি। পশু খাদ্যের মূল্যের সাথে আমাদের খাদ্যের মূল্যের একটা সম্পর্ক রয়েছে এটা আমাদের ক্রিটিকালি অ্যানালাইসিস করতে হবে।

বিগত সময়ে দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে। একজনের কাছ থেকে শুনে কোয়াসিজুডিসিয়াল নয় জুডিশিয়াল কিলিং থেকে শুরু করে সমস্ত কিছু হয়েছে, এটা অস্বীকার করার জায়গা নেই। এখান থেকে যে উত্তরণ ঘটাবো এটার জন্য আমাদের সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা এবং সরকারের যে অঙ্গগুলো আছে এর সক্ষমতা বাড়াতে হবে বলে উল্লেখ করেন শেখ বশিরউদ্দীন।

অতিরঞ্জিত তথ্য উপাত্ত মারাত্মক ফ্যাসাদ তৈরি উল্লেখ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে যে পরিসংখ্যানগত নিয়ামকগুলোকে আমরা গ্রহণ করি অধিকাংশ সময় খুবই কনফিউজিং। এটা রিপেয়ার দরকার। বড় বড় অর্থনীতিবিদরাই এই পরিসংখ্যান তৈরি করছেন এবং এই পরিসংখ্যান একমাত্র ফ্যাসাদ তৈরি ছাড়া কোনো কিছুই করে না।

গতবছর দেখেছি আলুর উৎপাদন হয়েছে এক কোটি তিন মেট্রিক টন। কনজাম্পশন হয়েছে ৮০ লাখ মেট্রিক টন। তারপর আলুর দাম হয়ে গেছে ৯০ টাকা কেজি। লক্ষ্য করে দেখলাম কোনোভাবেই এটা কোলাবরেট করছে না। কেননা পরিসংখ্যান ছিল ভুল। পরিসংখ্যানের শুদ্ধি অবশ্যম্ভাবীভাবে প্রয়োজন বলে যোগ করেন তিনি।

বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, আমাদের খাদ্যের যে বাজার এই বাজারের আর্থিক মূল্য ৩০ লক্ষ কোটি টাকা। আমরা এর বিপণন আরো ভালোভাবে করতে চাই। কৃষির যে অর্থনীতিকীকরণ এখানে সিন্ডিকেশন অফ ফেয়ার মাইন্ড এবং সিন্ডিকেশন অফ ফেয়ার পলিসিস দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আরও পড়ুন: এপ্রিলে দেশের মূল্যস্ফীতিতে স্বস্তির বার্তা

উদাহরণ টেনে উপদেষ্টা বলেন, রমজানের আগে ডিমের দাম ১৮০ টাকা ছিল। আমরা দেখেছি যে ডিমকে মজুদ করে রাখা হয়েছিল কোল্ড স্টোরেজে। মজুদ করে বাজারকে আর্টিফিসিয়ালি বাড়ানো হয়েছিল।

বিগত সরকার ব্যয়ের মহোৎসব করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের নাগরিকদের ওপর চূড়ান্ত দায় তৈরি করেছে। বিভিন্ন সময়ে মিটিংয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের যে ব্যয়ের ফিরিস্তি দেখি খরচ করতে পারাটাই যেন কৃতিত্বের ব্যাপার ছিল। কোনো একটা খাত সৃষ্টি করে অর্থব্যয় করাটাকেই কৃতিত্ব মনে করা হতো। একসময় এটাই যোগ্যতার নিয়ামক ছিল যে, কে কতটা খরচ করতে পারে এবং কতভাবে দায় তৈরি করা যায় নাগরিকের ওপর। আমরা এখান থেকে ফেরত এসে একটি কাঠামো তৈরি করতে চাই।

প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, কাজী ফার্মস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী জাহেদুল হাসান, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন, কোয়ালিটি ফিডসের পরিচালক এম সাফির রহমান, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, এসিআই লজিস্টিকস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাব্বির হাসান নাসির এবং স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের চিফ অপারেটিং অফিসার পারভেজ সাইফুল ইসলাম।

ঢাকা/এসএইচ