০৩:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

চট্টগ্রামে ৩৫৪ জন শিশু ডেঙ্গু আক্রান্ত

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০২:১৭:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই ২০২৩
  • / ৪১৪০ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

চট্টগ্রামে ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে শিশুরা। আক্রান্তের দিক থেকে বয়স্করা বেশি হলেও মৃত্যুরহারে এগিয়ে শিশুরা। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে ৩৫৪ জন শিশু আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি মারা গেছে নয় জন। তবে ১১ বছরের নীচে শিশুদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক বেশি। এ কারণে শিশুদের জ্বর হলেই ডেঙ্গু পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এদিকে, গত ৪ জুলাই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শ্রাবন্তী সরকার (১১) নামে এক শিশু। শ্রাবন্তী নগরীর সদরঘাট থানার বিটু সরকারের মেয়ে এবং সেন্ট স্কলাস্টিকা গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

শ্রাবন্তীর বাবা বিটু সরকার বলেন, ‘২৯ জুন জ্বরে আক্রান্ত হয় শ্রাবন্তী। মনে করেছিলাম স্বাভাবিক জ্বর। ৩ জুলাই পরীক্ষায় ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। ৪ জুলাই শ্রাবন্তীর দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত ঝরেছিল। পেট ফুলে গিয়েছিল। ওই দিনই নগরীর জিইসি মোড়ের মেডিক্যাল সেন্টার হাসপাতালে নিয়ে গেলে শ্রাবন্তী মারা যায়।’

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত শ্রাবন্তী সরকারসহ মোট ১৮ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। এরমধ্যে নয় জনই শিশু। মারা যাওয়া শিশুদের মধ্যে বেশিরভাগই ১১ বছরের মধ্যে।

চট্টগ্রামে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ড. মামুনুর রশিদ বলেন, ‘চট্টগ্রামে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু। বিআইটিআইডি হাসপাতালে গত চব্বিশ ঘণ্টায় ২০ জন চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে এ হাসপাতালে ৪৪ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডেঙ্গু শিশুদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি। বিশেষ করে ১১ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে এ ঝুঁকি অনেক বেশি। তাই জ্বর দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। করতে হবে ডেঙ্গু পরীক্ষা।’

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, ‘বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ডেঙ্গু শনাক্তের দিক থেকে বয়স্করা এগিয়ে। তবে মৃত্যুরহারে শিশুর সংখ্যা বেশি। বিষয়টি উদ্বেগের।’

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পরও দেরিতে হাসপাতাল কিংবা চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হচ্ছে। এ কারণে মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে। পাশাপাশি স্বাভাবিক জ্বর মনে করে খাওয়ানো হচ্ছে এন্টিবায়োটিকসহ নানা ওষুধ। এ কারণেও মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ছে।’

সিভিল সার্জন বলেন, ‘ডেঙ্গু একটি মশাবাহিত রোগ। মশার কামড়ে এ রোগ ছড়াচ্ছে। তাই ডেঙ্গু থেকে রক্ষায় মশা নিধন জোরদার করতে হবে। ইতোমধ্যে ডেঙ্গু সংক্রমণ কমাতে মশা নিধনে জোর দেওয়ার জন্য সিটি করপোরেশনের কাছে চিঠি লেখা হয়েছে।’

আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে একদিনে আট মৃত্যু

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়া বলেন, ‘চট্টগ্রামে চলতি বছর এক হাজার ৪৬৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ৬৮৬, মহিলা ৪২৪ ও শিশু ৩৫৪ জন। মারা গেছে ১৮ জন। এর মধ্যে নয় জনই শিশু। বাকীদের মধ্যে পুরুষ ছয় এবং মহিলা তিন জন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ বছর জানুয়ারিতে ৭৭, ফেব্রুয়ারিতে ২২, মার্চে ১২, এপ্রিলে ১৮, মে মাসে ৫৩, জুনে ২৮৩ ও জুলাইয়ে ৯৯৯ জন আক্রান্ত হয়েছে।’

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x

চট্টগ্রামে ৩৫৪ জন শিশু ডেঙ্গু আক্রান্ত

আপডেট: ০২:১৭:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই ২০২৩

চট্টগ্রামে ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে শিশুরা। আক্রান্তের দিক থেকে বয়স্করা বেশি হলেও মৃত্যুরহারে এগিয়ে শিশুরা। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে ৩৫৪ জন শিশু আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি মারা গেছে নয় জন। তবে ১১ বছরের নীচে শিশুদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক বেশি। এ কারণে শিশুদের জ্বর হলেই ডেঙ্গু পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এদিকে, গত ৪ জুলাই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শ্রাবন্তী সরকার (১১) নামে এক শিশু। শ্রাবন্তী নগরীর সদরঘাট থানার বিটু সরকারের মেয়ে এবং সেন্ট স্কলাস্টিকা গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

শ্রাবন্তীর বাবা বিটু সরকার বলেন, ‘২৯ জুন জ্বরে আক্রান্ত হয় শ্রাবন্তী। মনে করেছিলাম স্বাভাবিক জ্বর। ৩ জুলাই পরীক্ষায় ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। ৪ জুলাই শ্রাবন্তীর দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত ঝরেছিল। পেট ফুলে গিয়েছিল। ওই দিনই নগরীর জিইসি মোড়ের মেডিক্যাল সেন্টার হাসপাতালে নিয়ে গেলে শ্রাবন্তী মারা যায়।’

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত শ্রাবন্তী সরকারসহ মোট ১৮ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। এরমধ্যে নয় জনই শিশু। মারা যাওয়া শিশুদের মধ্যে বেশিরভাগই ১১ বছরের মধ্যে।

চট্টগ্রামে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ড. মামুনুর রশিদ বলেন, ‘চট্টগ্রামে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু। বিআইটিআইডি হাসপাতালে গত চব্বিশ ঘণ্টায় ২০ জন চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে এ হাসপাতালে ৪৪ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডেঙ্গু শিশুদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি। বিশেষ করে ১১ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে এ ঝুঁকি অনেক বেশি। তাই জ্বর দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। করতে হবে ডেঙ্গু পরীক্ষা।’

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, ‘বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ডেঙ্গু শনাক্তের দিক থেকে বয়স্করা এগিয়ে। তবে মৃত্যুরহারে শিশুর সংখ্যা বেশি। বিষয়টি উদ্বেগের।’

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পরও দেরিতে হাসপাতাল কিংবা চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হচ্ছে। এ কারণে মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে। পাশাপাশি স্বাভাবিক জ্বর মনে করে খাওয়ানো হচ্ছে এন্টিবায়োটিকসহ নানা ওষুধ। এ কারণেও মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ছে।’

সিভিল সার্জন বলেন, ‘ডেঙ্গু একটি মশাবাহিত রোগ। মশার কামড়ে এ রোগ ছড়াচ্ছে। তাই ডেঙ্গু থেকে রক্ষায় মশা নিধন জোরদার করতে হবে। ইতোমধ্যে ডেঙ্গু সংক্রমণ কমাতে মশা নিধনে জোর দেওয়ার জন্য সিটি করপোরেশনের কাছে চিঠি লেখা হয়েছে।’

আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে একদিনে আট মৃত্যু

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়া বলেন, ‘চট্টগ্রামে চলতি বছর এক হাজার ৪৬৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ৬৮৬, মহিলা ৪২৪ ও শিশু ৩৫৪ জন। মারা গেছে ১৮ জন। এর মধ্যে নয় জনই শিশু। বাকীদের মধ্যে পুরুষ ছয় এবং মহিলা তিন জন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ বছর জানুয়ারিতে ৭৭, ফেব্রুয়ারিতে ২২, মার্চে ১২, এপ্রিলে ১৮, মে মাসে ৫৩, জুনে ২৮৩ ও জুলাইয়ে ৯৯৯ জন আক্রান্ত হয়েছে।’

ঢাকা/এসএ