জাপানের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন তাকাইচি

- আপডেট: ০৭:৩৮:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫
- / ১০১৯২ বার দেখা হয়েছে
জাপানের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) সানায়ে তাকাইচিকে দলীয় প্রধান হিসেবে নির্বাচিত করেছে। এর মাধ্যমে দেশটির ইতিহাসে প্রথম নারী হিসেবে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন ৬৪ বছর বয়সী তাকাইচি।
দেশটির সাবেক মন্ত্রী, টেলিভিশন উপস্থাপক এবং হেভি মেটাল ড্রামার তাকাইচি জাপানি রাজনীতির অন্যতম পরিচিত ও বিতর্কিত মুখ। তাকে দলের ডানপন্থী রক্ষণশীল ধারার কট্টর অনুসারী হিসেবে দেখা হয়। চলতি মাসের শেষের দিকে সংসদের অনুমোদনের পর আনুষ্ঠানিকভাবে জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন তাকাইচি।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাকাইচির সামনে একাধিক চ্যালেঞ্জ থাকবে। অর্থনৈতিক মন্দা, ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি, স্থবির মজুরি এবং জনগণের ভোগান্তি সামলানো এখন তার বড় চ্যালেঞ্জ। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপড়েন মোকাবিলা এবং ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আগের সরকারের স্বাক্ষরিত শুল্ক চুক্তি বাস্তবায়নও করতে হবে তাকে।
মাত্র এক বছরের বেশি সময় দায়িত্ব পালনের পর দেশের স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন নির্বাচনে দলের ভরাডুবির পর গত মাসে প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা পদত্যাগের ঘোষণা দেন। ওই নির্বাচনে এলডিপি জোট সংসদের দুই কক্ষেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। এই প্রেক্ষাপটে নিজ দল এলডিপিকে ঐক্যবদ্ধ করার কঠিন পরীক্ষায় নামতে হবে তাকাইচিকে।
টোকিওর টেম্পল ইউনিভার্সিটির এশীয় অধ্যয়ন বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক জেফ কিংস্টন বলেন, তাকাইচি দলের অভ্যন্তরীণ বিভাজন নিরসনে খুব একটা সফল হবেন বলে মনে হয় না। তিনি ডানপন্থী ভোটারদের ফিরিয়ে আনতে পারেন। তবে এর ফলে সাধারণ জনগণের মধ্যে সমর্থন হারাতে পারেন তিনি।
দীর্ঘদিন ধরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত তাকাইচি ‘আবেনোমিকস’ ধারার অর্থনৈতিক নীতি ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এই নীতিতে বড় ধরনের সরকারি ব্যয় ও সহজ শর্তে ঋণ নেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছিল। নিরাপত্তা ইস্যুতেও তিনি কট্টর অবস্থানের পক্ষপাতী এবং জাপানের শান্তিকামী সংবিধান সংশোধনের পক্ষে বিভিন্ন সময়ে কথা বলেছেন তাকাইচি।
তাকাইচি ব্রিটেনের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের ভক্ত হিসেবে পরিচিত এবং নিজেকে ‘জাপানের আয়রন লেডি’ বলে দাবি করেন। তবে নারী ভোটারদের বড় অংশ তাকে নারীর অগ্রগতির প্রতিনিধি হিসেবে দেখেন না। বিয়ের পর নারীদের নিজের পারিবারিক নাম রাখার অনুমোদন দেওয়ার আইন ও সমলিঙ্গ বিবাহের বিরোধিতা করে আসছেন তিনি।
এলডিপির ভেতরে তাকাইচি কট্টর ডানপন্থী গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করেন এবং দেশটির ব্যাপক বিতর্কিত ইয়াসুকুনি মন্দিরে প্রায়ই যান তিনি। এই মন্দিরে জাপানের যুদ্ধাহত সৈন্যদের স্মরণ করা হয়, এমনকি দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীদেরও।
সূত্র: বিবিসি।
ঢাকা/এসএইচ