০৫:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

টানা লোকসান ও ডিভিডেন্ড প্রদানে ব্যর্থতায় সাফকো’র পর্ষদকে বিএসইসিতে তলব

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১১:৫৬:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মে ২০২১
  • / ৪১৮৯ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদকঃ শেয়ারবাজারে বস্ত্র খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সাফকো স্পিনিং মিলসের ক্রমাগত লোকসান বাড়ছে। ব্যবসা না হওয়ায় টানা দুই বছর ধরে লভ্যাংশ দিচ্ছে না কোম্পানিটি। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন শেয়ারহোল্ডাররা। এরই ধরাবাহিকতায় সাফকো স্পিনিং মিলসের লভ্যাংশ না দেওয়া ও ক্রমাগত লোকসানের কারণ জানতে পরিচালনা পর্ষদসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের তলব করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ ও ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদন আলোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি সাফকো স্পিনিং মিলস। এছাড়া কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর থেকে কখনো শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দেয়নি। ধারাবাহিকভাবে শেয়ারহোল্ডারদের বোনাস-লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে তালিকাভুক্তর পর থেকে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৮৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেড়েছে। ফলে কোম্পানির আর্থিক সক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়েছে।

তাই সাফকো স্পিনিং মিলস কেন লভ্যাংশ দিচ্ছে না, সে বিষয়টি জানতে ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ পরিচালনা পর্ষদকে ডেকেছে বিএসইসি। একইসঙ্গে কোম্পানিটির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) ও সচিবকেও ডাকা হয়েছে। আর লভ্যাংশ না দেওয়া-সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত পরিচালনা পর্ষদকে সঙ্গে আনাতে বলেছে বিএসইসি।

বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম জানান, বৃহস্পতিবার (৬ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনে দুপুর ১টার দিকে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদকে তলব করা হয়েছে।

বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ, বস্ত্র খাতের অধিকাংশ কোম্পানি আর্থিক অবস্থা অস্বচ্ছ। কারণ কোম্পানিগুলো তাদের প্রকৃত আর্থিক অবস্থা আর্থিক প্রতিবেদনের তুলে ধরে না। অধিকাংশ কোম্পানি মুনাফা কম দেখায় এবং বছর শেষে শেয়ারহোল্ডারদের বোনাস লভ্যাংশ দেয়। ধারাবাহিকভাবে বোনাস-লভ্যাংশ দেওয়ার ফলে এক পর্যায়ে কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা বেড়ে যায়। তখন কোম্পানিগুলো শেয়ারহোল্ডাররদের নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। বস্ত্র খাতের অধিকাংশ কোম্পানির মতোই সাফকো স্পিনিং মিলস একই পথে হেঁটেছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।

কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় সাফকো স্পিনিং মিলস। তালিকাভুক্তি ওই বছর থেকে টাকা ২০১৪ সাল পর্যন্ত কোম্পানি ধারাবাহিকভাবে শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশের ওপর বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। তবে ২০১৫ সালে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেয়নি। এরপর ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত কোম্পানি অবারও শেয়ারহোল্ডারদের বোনাস-লভ্যাংশ দিয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে কোম্পানিটির ঘোষিত বোনাস-লভ্যাংশের পরিমাণ ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসে। ধারাবাহিকভাবে বোনাস লভ্যাংশ দেওয়ায় কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৯৯ লাখ ৮১ হাজার ৭১৬-তে।

সর্বশেষ হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০২০) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ২ দশমিক ৩৪ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির লোকসান ছিল ০ দশমিক ৩৭ টাকা। আর দুই প্রান্তিক মিলে আর্থাৎ ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২০) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৪ দশমিক ৪৩ টাকা। আগের হিসাব বছর একই সময়ে কোম্পানির লোকসান ছিল ১ দশমিক ৯৯ টাকা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাফকোর কোম্পানি সচিব ইফতেখার আহমেদ বলেন, ‘শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণ জানতেই পরিচালনা পর্ষদকে ডেকেছে বিএসইসি।’

শেয়ার করুন

x
English Version

টানা লোকসান ও ডিভিডেন্ড প্রদানে ব্যর্থতায় সাফকো’র পর্ষদকে বিএসইসিতে তলব

আপডেট: ১১:৫৬:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মে ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদকঃ শেয়ারবাজারে বস্ত্র খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সাফকো স্পিনিং মিলসের ক্রমাগত লোকসান বাড়ছে। ব্যবসা না হওয়ায় টানা দুই বছর ধরে লভ্যাংশ দিচ্ছে না কোম্পানিটি। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন শেয়ারহোল্ডাররা। এরই ধরাবাহিকতায় সাফকো স্পিনিং মিলসের লভ্যাংশ না দেওয়া ও ক্রমাগত লোকসানের কারণ জানতে পরিচালনা পর্ষদসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের তলব করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ ও ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদন আলোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি সাফকো স্পিনিং মিলস। এছাড়া কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর থেকে কখনো শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দেয়নি। ধারাবাহিকভাবে শেয়ারহোল্ডারদের বোনাস-লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে তালিকাভুক্তর পর থেকে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৮৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেড়েছে। ফলে কোম্পানির আর্থিক সক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়েছে।

তাই সাফকো স্পিনিং মিলস কেন লভ্যাংশ দিচ্ছে না, সে বিষয়টি জানতে ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ পরিচালনা পর্ষদকে ডেকেছে বিএসইসি। একইসঙ্গে কোম্পানিটির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) ও সচিবকেও ডাকা হয়েছে। আর লভ্যাংশ না দেওয়া-সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত পরিচালনা পর্ষদকে সঙ্গে আনাতে বলেছে বিএসইসি।

বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম জানান, বৃহস্পতিবার (৬ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনে দুপুর ১টার দিকে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদকে তলব করা হয়েছে।

বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ, বস্ত্র খাতের অধিকাংশ কোম্পানি আর্থিক অবস্থা অস্বচ্ছ। কারণ কোম্পানিগুলো তাদের প্রকৃত আর্থিক অবস্থা আর্থিক প্রতিবেদনের তুলে ধরে না। অধিকাংশ কোম্পানি মুনাফা কম দেখায় এবং বছর শেষে শেয়ারহোল্ডারদের বোনাস লভ্যাংশ দেয়। ধারাবাহিকভাবে বোনাস-লভ্যাংশ দেওয়ার ফলে এক পর্যায়ে কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা বেড়ে যায়। তখন কোম্পানিগুলো শেয়ারহোল্ডাররদের নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। বস্ত্র খাতের অধিকাংশ কোম্পানির মতোই সাফকো স্পিনিং মিলস একই পথে হেঁটেছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।

কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় সাফকো স্পিনিং মিলস। তালিকাভুক্তি ওই বছর থেকে টাকা ২০১৪ সাল পর্যন্ত কোম্পানি ধারাবাহিকভাবে শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশের ওপর বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। তবে ২০১৫ সালে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেয়নি। এরপর ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত কোম্পানি অবারও শেয়ারহোল্ডারদের বোনাস-লভ্যাংশ দিয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে কোম্পানিটির ঘোষিত বোনাস-লভ্যাংশের পরিমাণ ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসে। ধারাবাহিকভাবে বোনাস লভ্যাংশ দেওয়ায় কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৯৯ লাখ ৮১ হাজার ৭১৬-তে।

সর্বশেষ হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০২০) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ২ দশমিক ৩৪ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির লোকসান ছিল ০ দশমিক ৩৭ টাকা। আর দুই প্রান্তিক মিলে আর্থাৎ ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২০) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৪ দশমিক ৪৩ টাকা। আগের হিসাব বছর একই সময়ে কোম্পানির লোকসান ছিল ১ দশমিক ৯৯ টাকা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাফকোর কোম্পানি সচিব ইফতেখার আহমেদ বলেন, ‘শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণ জানতেই পরিচালনা পর্ষদকে ডেকেছে বিএসইসি।’