০৯:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

ডেল্টা লাইফের মাস্ক কেলেঙ্কারি: সাবেক প্রশাসক কারাগারে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০১:৩৬:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ মে ২০২২
  • / ৪১৮৩ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিমা খাতের কোম্পানি ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক প্রশাসক এবং বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সাবেক সদস্য সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লাকে মাস্ক ক্রয় জালিয়াতি মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিকের আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করা হলে তা নাকচ করে দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। 

সমন জারি হওয়া সত্ত্বেও আদালতে হাজির না হওয়ার কারণে এ মামলার তিন আসামি ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্সের ডিএমডি ও সিওও মনজুরে মাওলা, ইভিপি কামরুল হক ও এম হাফিজুর রহমান খানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। 

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

মাস্ক কেনায় দুর্নীতির বিষয়ে মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্সের বরখাস্তকৃত পর্ষদের পরিচালক ও অডিট কমিটির সদস্য জেয়াদ রহমান গত বছর একটি সিআর মামলা দায়ের করেছিলেন। শুনানি শেষে আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন।

মামলা এজাহার থেকে জানা যায়, ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্সের ডিএমডি ও সিওও মনজুরে মাওলা এবং ইভিপি কামারুল হকের অনুমোদনক্রমে ২ লাখ ১৫ হাজার পিস মাস্ক ১ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকায় কেনার অনুমোদন দেয়া হয়। এক্ষেত্রে প্রতিটি মাস্কের মূল্য ধরা হয় ৫০ টাকা করে, যা সেসময়ের বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি ছিল। মাস্ক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান লাজিম মিডিয়াকে কার্যাদেশ দিয়ে ৫০ লাখ টাকা অগ্রিম পরিশোধ করা হয়। ক্রয়াদেশ দেয়া ২ লাখ ১৫ হাজার পিস মাস্কের মধ্যে বিভিন্ন জোনাল অফিসে মাত্র ১৯ হাজার মাস্ক বিতরণ করা হয়। বাকি ১ লাখ ৯৬ হাজার পিস মাস্কের কোনো হদিস পাওয়া যায় নি।

আসামীরা এক্ষেত্রে অসৎ উদ্দেশ্যে পরস্পর যোগসাজশে নিজেদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির নিউ পারচেজ অ্যান্ড প্রক্রিউরমেন্ট অ্যান্ড পেমেন্টের বিধি অনুযায়ী ৮ লাখ টাকার উপরে কোন কিছু কিনতে হলে পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনের দরকার হয়। পাশাপাশি জাতীয় পত্রিকায় দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কোটেশন সংগ্রহের মাধ্যমে তা করতে হয়। কিন্তু কোম্পানিটির সাবেক প্রশাসক সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লা এসব নিয়মের তোয়াক্কা না কারেই নিজ ক্ষমতা ব্যবহার করে তার নিকটাত্মীয়কে কাজটি পাইয়ে দেন। এতে কোম্পানির পলিসিহোল্ডার ও শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতি করে তারা নিজেরা লাভবান হয়েছেন। 

বিষয়টির তদন্ত শেষে পিবিআইয়ের পক্ষ থেকে ডেল্টা লাইফের সাবেক প্রশাসক সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লা, কোম্পানটির ডিএমডি ও সিওও মনজুরে মাওলা, ইভিপি কামরুল হক ও এম হাফিজুর রহমান খানের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৪০৮/৪২০/৩৪ ধারায় এবং আরেক আসামী লাজিম মিডিয়ার মালিক শেখ হাফিজুর রহমান শামীমের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৪২০/১০৯ ধারায় অপরাধ সত্য প্রমাণিত হয়েছে মর্মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। আদালত এ প্রতিবেদন আমলে নিয়ে এ বছরের ২৭ ফ্রেবুয়ারি আসামীদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। একইসঙ্গে আজ সমন জারির প্রতিবেদন প্রাপ্তি ও উভয় পক্ষের শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়। শুনানি শেষে সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লাকে কারাগারে পাঠানোর পাশাপাশি বাকী আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

ঢাকা/এসআর

শেয়ার করুন

x
English Version

ডেল্টা লাইফের মাস্ক কেলেঙ্কারি: সাবেক প্রশাসক কারাগারে

আপডেট: ০১:৩৬:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ মে ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিমা খাতের কোম্পানি ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক প্রশাসক এবং বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সাবেক সদস্য সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লাকে মাস্ক ক্রয় জালিয়াতি মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিকের আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করা হলে তা নাকচ করে দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। 

সমন জারি হওয়া সত্ত্বেও আদালতে হাজির না হওয়ার কারণে এ মামলার তিন আসামি ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্সের ডিএমডি ও সিওও মনজুরে মাওলা, ইভিপি কামরুল হক ও এম হাফিজুর রহমান খানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। 

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

মাস্ক কেনায় দুর্নীতির বিষয়ে মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্সের বরখাস্তকৃত পর্ষদের পরিচালক ও অডিট কমিটির সদস্য জেয়াদ রহমান গত বছর একটি সিআর মামলা দায়ের করেছিলেন। শুনানি শেষে আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন।

মামলা এজাহার থেকে জানা যায়, ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্সের ডিএমডি ও সিওও মনজুরে মাওলা এবং ইভিপি কামারুল হকের অনুমোদনক্রমে ২ লাখ ১৫ হাজার পিস মাস্ক ১ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকায় কেনার অনুমোদন দেয়া হয়। এক্ষেত্রে প্রতিটি মাস্কের মূল্য ধরা হয় ৫০ টাকা করে, যা সেসময়ের বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি ছিল। মাস্ক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান লাজিম মিডিয়াকে কার্যাদেশ দিয়ে ৫০ লাখ টাকা অগ্রিম পরিশোধ করা হয়। ক্রয়াদেশ দেয়া ২ লাখ ১৫ হাজার পিস মাস্কের মধ্যে বিভিন্ন জোনাল অফিসে মাত্র ১৯ হাজার মাস্ক বিতরণ করা হয়। বাকি ১ লাখ ৯৬ হাজার পিস মাস্কের কোনো হদিস পাওয়া যায় নি।

আসামীরা এক্ষেত্রে অসৎ উদ্দেশ্যে পরস্পর যোগসাজশে নিজেদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির নিউ পারচেজ অ্যান্ড প্রক্রিউরমেন্ট অ্যান্ড পেমেন্টের বিধি অনুযায়ী ৮ লাখ টাকার উপরে কোন কিছু কিনতে হলে পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনের দরকার হয়। পাশাপাশি জাতীয় পত্রিকায় দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কোটেশন সংগ্রহের মাধ্যমে তা করতে হয়। কিন্তু কোম্পানিটির সাবেক প্রশাসক সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লা এসব নিয়মের তোয়াক্কা না কারেই নিজ ক্ষমতা ব্যবহার করে তার নিকটাত্মীয়কে কাজটি পাইয়ে দেন। এতে কোম্পানির পলিসিহোল্ডার ও শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতি করে তারা নিজেরা লাভবান হয়েছেন। 

বিষয়টির তদন্ত শেষে পিবিআইয়ের পক্ষ থেকে ডেল্টা লাইফের সাবেক প্রশাসক সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লা, কোম্পানটির ডিএমডি ও সিওও মনজুরে মাওলা, ইভিপি কামরুল হক ও এম হাফিজুর রহমান খানের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৪০৮/৪২০/৩৪ ধারায় এবং আরেক আসামী লাজিম মিডিয়ার মালিক শেখ হাফিজুর রহমান শামীমের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৪২০/১০৯ ধারায় অপরাধ সত্য প্রমাণিত হয়েছে মর্মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। আদালত এ প্রতিবেদন আমলে নিয়ে এ বছরের ২৭ ফ্রেবুয়ারি আসামীদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। একইসঙ্গে আজ সমন জারির প্রতিবেদন প্রাপ্তি ও উভয় পক্ষের শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়। শুনানি শেষে সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লাকে কারাগারে পাঠানোর পাশাপাশি বাকী আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

ঢাকা/এসআর