০৬:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪

‘ধৃষ্টতা দেখিয়েছে বাফুফে’

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১২:১৯:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ এপ্রিল ২০২৩
  • / ৪২০২ বার দেখা হয়েছে

গত সেপ্টেম্বরে নেপালে নারী সাফে শিরোপা জেতার পর সাবিনা খাতুনদের ছাদখোলা বাসে সংবর্ধনার ব্যবস্থা করেছিল যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। ইতিহাস গড়া সেই মেয়েরাই আর্থিক সংকটের কারণে মিয়ানমারে অলিম্পিক বাছাই পর্বে খেলতে যেতে পারেননি। নিজেরা অর্থ জোগাড় করতে তো পারেননি, উল্টো ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ার কথাও বলেন বাফুফে কর্তারা।

চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে থাকায় বিষয়টি নিয়ে এতদিন চুপ ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। রোববার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভা শেষে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী পুরো দায় চাপালেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের ওপর। ‘কারও দোষ বা ভুল যদি অন্য কারও কাঁধে চাপিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা থাকে, তাহলে অনেকভাবে দেওয়া যায়। সেটা কিন্তু এবার আমরা নারী ফুটবল দলের ক্ষেত্রে দেখতে পেলাম। যারা আমাদের জন্য এত বড় অর্জন নিয়ে এসেছে। সারাদেশকে যারা সম্মানিত করেছে, তারা অলিম্পিক কোয়ালিফাই ম্যাচে অংশগ্রহণ করতে পারবে না, এর চেয়ে কষ্টের আর কিছু হতে পারে না।’

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এপ্রিলের শুরুর দিকে মিয়ানমারে অলিম্পিক বাছাই খেলতে যাওয়ার কথা ছিল সাবিনা খাতুনদের। বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগই বিবৃতিতে দল না পাঠানোর সিদ্ধান্তটি সংবাদমাধ্যমে জানান। সে সময় ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে সহযোগিতা না পাওয়ার কথা বলেন তিনি। গতকাল ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, দু’দিনের মধ্যে কীভাবে টাকা জোগাড় করা সম্ভব? ‘আমরা দেখলাম বাফুফের সভাপতি, সহসভাপতি বা নির্বাচিত কেউ কথা বলেননি। সেখানে একজন বেতনভুক্ত সম্পাদক সরকারকে দোষারোপ করে বক্তব্য দিয়েছেন, সরকার এই টাকা না দেওয়ায় দল পাঠাতে পারেনি! একটা কথা হচ্ছে, সরকারের কিছু সিস্টেম আছে। টাকা চাইলে হাতে কিছু সময় দিতে হয়। আমাদের কাছে কোনো ফেডারেশন টাকা চাইলে আমাদের সেটা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হয়। ২৭ তারিখে আমরা চিঠি পেলাম; কিন্তু ২৯ তারিখে বাফুফে সংবাদ সম্মেলন করে জানাল যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় টাকা দিতে পারবে না! এক দিন পরই তারা কীভাবে এ রকম বক্তব্য দেয়!’

বাফুফের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইবেন বলে জানান জাহিদ আহসান রাসেল, ‘আমি চিকিৎসার জন্য কিছুদিন দেশের বাইরে ছিলাম। তাই এটা নিয়ে কথা বলতে পারিনি। আমি অবশ্য তাঁদের কাছে জানতে চাইব, কেন তাঁরা এ রকম কথা বললেন? সবার একটাই প্রশ্ন– অল্প কিছু টাকার জন্য কেন মেয়েরা দেশের বাইরে খেলতে যেতে পারবে না! আমরা সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্যই তাদের পাশে থাকতাম, অনেক স্পন্সর প্রতিষ্ঠানও সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল। অথচ কারও সঙ্গে কথা না বলে, কাউকে কিছু না জানিয়ে তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কেন তাঁরা এই কাজটি করলেন, সেটা আমার বোধগম্য নয়। আজকে ভারত কিন্তু কোয়ালিফাই করেছে। আমরা তো ভারতের চেয়ে ভালো দল ছিলাম। আমাদেরও একটা সম্ভাবনা ছিল।’

নারী ফুটবলে যে কোনো সাফল্যের পরই মেয়েদের সংবর্ধনা দেওয়ার সঙ্গে আর্থিক পুরস্কার দিয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মেয়েদের সঙ্গে সেই সুবিধা ভোগ করেন শুধু ভ্রমণবিলাস করা বাফুফের কিছু কর্মকর্তাও। মেয়েদের না পাঠানোর বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করবেন বলে জানান রাসেল, ‘আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিষয়টি বিস্তারিতভাবে অবহিত করব। আমার মনে হয়, তাঁরা ইচ্ছাকৃতভাবে দল পাঠাননি। কেন তাঁরা ইচ্ছাকৃতভাবে কাজটি করে আমাদের ভাবমূর্তি সংকটে ফেললেন, সেটা খতিয়ে দেখা দরকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নারীদের খেলায় অনেক পৃষ্ঠপোষকতা করেন, সেটা ফুটবল হোক কিংবা ক্রিকেট। সেই নারীরা যখন অল্প কিছু টাকার জন্য খেলতে যেতে পারেনি, এটার পেছনে নিশ্চয়ই অন্য কিছু আছে। আমি অবশ্যই বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অবহিত করব।

আরও পড়ুন: চলতি মাসেই মাঠে নামছে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল

ক্রিকেটে জয়ের পর বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন প্রধানমন্ত্রীকে সঙ্গে সঙ্গে ফোন দেন– এ বিষয়টি নিয়ে কিছুটা ব্যাঙ্গ করে বাফুফে সভাপতি গত ৩ এপ্রিল বলেছিলেন, তিনি এমন নাটক করতে পারবেন না। নাজমুল হাসানকে এভাবে বাফুফে সভাপতির খোঁচা মেরে কথা বলারও সমালোচনা করেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীকে জড়ানোয় বেশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান তিনি, ‘প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলা এত ভালোবাসেন। তিনি সব সময় খেলার খবর রাখেন, টিভিতে খেলা দেখেন, সময় পেলে মাঠে চলে আসেন। তাঁকে জড়িয়ে এমন কথা বলা (নাটক করা) আমি কোনোভাবেই মানতে পারছি না।’

ঢাকা/এসএম

ট্যাগঃ

শেয়ার করুন

x

‘ধৃষ্টতা দেখিয়েছে বাফুফে’

আপডেট: ১২:১৯:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ এপ্রিল ২০২৩

গত সেপ্টেম্বরে নেপালে নারী সাফে শিরোপা জেতার পর সাবিনা খাতুনদের ছাদখোলা বাসে সংবর্ধনার ব্যবস্থা করেছিল যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। ইতিহাস গড়া সেই মেয়েরাই আর্থিক সংকটের কারণে মিয়ানমারে অলিম্পিক বাছাই পর্বে খেলতে যেতে পারেননি। নিজেরা অর্থ জোগাড় করতে তো পারেননি, উল্টো ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ার কথাও বলেন বাফুফে কর্তারা।

চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে থাকায় বিষয়টি নিয়ে এতদিন চুপ ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। রোববার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভা শেষে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী পুরো দায় চাপালেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের ওপর। ‘কারও দোষ বা ভুল যদি অন্য কারও কাঁধে চাপিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা থাকে, তাহলে অনেকভাবে দেওয়া যায়। সেটা কিন্তু এবার আমরা নারী ফুটবল দলের ক্ষেত্রে দেখতে পেলাম। যারা আমাদের জন্য এত বড় অর্জন নিয়ে এসেছে। সারাদেশকে যারা সম্মানিত করেছে, তারা অলিম্পিক কোয়ালিফাই ম্যাচে অংশগ্রহণ করতে পারবে না, এর চেয়ে কষ্টের আর কিছু হতে পারে না।’

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এপ্রিলের শুরুর দিকে মিয়ানমারে অলিম্পিক বাছাই খেলতে যাওয়ার কথা ছিল সাবিনা খাতুনদের। বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগই বিবৃতিতে দল না পাঠানোর সিদ্ধান্তটি সংবাদমাধ্যমে জানান। সে সময় ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে সহযোগিতা না পাওয়ার কথা বলেন তিনি। গতকাল ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, দু’দিনের মধ্যে কীভাবে টাকা জোগাড় করা সম্ভব? ‘আমরা দেখলাম বাফুফের সভাপতি, সহসভাপতি বা নির্বাচিত কেউ কথা বলেননি। সেখানে একজন বেতনভুক্ত সম্পাদক সরকারকে দোষারোপ করে বক্তব্য দিয়েছেন, সরকার এই টাকা না দেওয়ায় দল পাঠাতে পারেনি! একটা কথা হচ্ছে, সরকারের কিছু সিস্টেম আছে। টাকা চাইলে হাতে কিছু সময় দিতে হয়। আমাদের কাছে কোনো ফেডারেশন টাকা চাইলে আমাদের সেটা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হয়। ২৭ তারিখে আমরা চিঠি পেলাম; কিন্তু ২৯ তারিখে বাফুফে সংবাদ সম্মেলন করে জানাল যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় টাকা দিতে পারবে না! এক দিন পরই তারা কীভাবে এ রকম বক্তব্য দেয়!’

বাফুফের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইবেন বলে জানান জাহিদ আহসান রাসেল, ‘আমি চিকিৎসার জন্য কিছুদিন দেশের বাইরে ছিলাম। তাই এটা নিয়ে কথা বলতে পারিনি। আমি অবশ্য তাঁদের কাছে জানতে চাইব, কেন তাঁরা এ রকম কথা বললেন? সবার একটাই প্রশ্ন– অল্প কিছু টাকার জন্য কেন মেয়েরা দেশের বাইরে খেলতে যেতে পারবে না! আমরা সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্যই তাদের পাশে থাকতাম, অনেক স্পন্সর প্রতিষ্ঠানও সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল। অথচ কারও সঙ্গে কথা না বলে, কাউকে কিছু না জানিয়ে তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কেন তাঁরা এই কাজটি করলেন, সেটা আমার বোধগম্য নয়। আজকে ভারত কিন্তু কোয়ালিফাই করেছে। আমরা তো ভারতের চেয়ে ভালো দল ছিলাম। আমাদেরও একটা সম্ভাবনা ছিল।’

নারী ফুটবলে যে কোনো সাফল্যের পরই মেয়েদের সংবর্ধনা দেওয়ার সঙ্গে আর্থিক পুরস্কার দিয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মেয়েদের সঙ্গে সেই সুবিধা ভোগ করেন শুধু ভ্রমণবিলাস করা বাফুফের কিছু কর্মকর্তাও। মেয়েদের না পাঠানোর বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করবেন বলে জানান রাসেল, ‘আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিষয়টি বিস্তারিতভাবে অবহিত করব। আমার মনে হয়, তাঁরা ইচ্ছাকৃতভাবে দল পাঠাননি। কেন তাঁরা ইচ্ছাকৃতভাবে কাজটি করে আমাদের ভাবমূর্তি সংকটে ফেললেন, সেটা খতিয়ে দেখা দরকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নারীদের খেলায় অনেক পৃষ্ঠপোষকতা করেন, সেটা ফুটবল হোক কিংবা ক্রিকেট। সেই নারীরা যখন অল্প কিছু টাকার জন্য খেলতে যেতে পারেনি, এটার পেছনে নিশ্চয়ই অন্য কিছু আছে। আমি অবশ্যই বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অবহিত করব।

আরও পড়ুন: চলতি মাসেই মাঠে নামছে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল

ক্রিকেটে জয়ের পর বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন প্রধানমন্ত্রীকে সঙ্গে সঙ্গে ফোন দেন– এ বিষয়টি নিয়ে কিছুটা ব্যাঙ্গ করে বাফুফে সভাপতি গত ৩ এপ্রিল বলেছিলেন, তিনি এমন নাটক করতে পারবেন না। নাজমুল হাসানকে এভাবে বাফুফে সভাপতির খোঁচা মেরে কথা বলারও সমালোচনা করেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীকে জড়ানোয় বেশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান তিনি, ‘প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলা এত ভালোবাসেন। তিনি সব সময় খেলার খবর রাখেন, টিভিতে খেলা দেখেন, সময় পেলে মাঠে চলে আসেন। তাঁকে জড়িয়ে এমন কথা বলা (নাটক করা) আমি কোনোভাবেই মানতে পারছি না।’

ঢাকা/এসএম